রবিবার, ৩০ আগস্ট, ২০২০

চৈতন্য মহাপ্রভুর রহস্যজনক অন্তর্ধান

চৈতন্য মহাপ্রভুর রহস্যজনক অন্তর্ধান



শেয়ার করেছেন : - প্রণব কুমার কুণ্ডু






















প্রণব কুমার কুণ্ডু





তারেই খুঁজে বেড়াই : নবম পর্ব

শ্রীচৈতন্যের জীবনের শেষ পর্ব সম্পর্কে জানার আগ্রহ নিয়ে অনেকেই আমাদের অণুপ্রেরণা দিয়েছেন এই সত্যের অনুসন্ধান এবং লেখা চালিয়ে যাওয়ার জন্য। সকলকেই আমাদের পরিবারের সশ্রদ্ধ কৃতজ্ঞতা জানাই। তবে এর আগেও উল্লেখ করেছি যে আমাদের এই সত্যানুসন্ধানের পথ কোনও ঐতিহাসিক বা গবেষকের মতো নয় একেবারেই। ইতিহাসের রাস্তা দিয়ে আমরা হাঁটিনি। কারণ বারবারই প্রমাণ পেয়েছি যৎসামান্য কিছু তথ্যনির্ভর আমাদের ইতিহাসের গণ্ডী অত্যন্ত সীমাবদ্ধ এবং তাও বহু বিভ্রান্তিকর বিকৃত তথ্যে ঠাসা। আমাদের এই সত্যানুসন্ধানের রাস্তা, পুরোপুরি অনুভবের রাস্তা। নিতান্তই ভালবেসে সত্যের সন্ধানে বেরিয়ে পড়া একদল ভ্রমণপিপাসু গৌরসন্ধানীর রাস্তা। আমার সেই পরম বন্ধুটি, যাঁর অণুপ্রেরণায় এই সত্যানুসন্ধান শুরু, তাঁর নিজস্ব, আশ্চর্য সব অনুভব শেয়ার করেও সমৃদ্ধ করেছেন আমাদের এই গৌরসন্ধান পরিবারকে।
পাঁচশো বছর আগে হঠাৎ করেই একদিন হারিয়ে যাওয়া সেই রহস্যময় মানুষটির শেষ জীবনের খোঁজে বেরিয়ে খুবই আশ্চর্যজনকভাবেই আমাদের হাতে এসেছে বেশ কিছু সূত্র। মুখোমুখি হয়েছি এমন কিছু রহস্যময সত্যের বা ঘটনার যার কথা কোন ইতিহাস বইয়ে আজও লেখা নেই। সেরকমই এর আগের কিছু পর্বে বলেছিলাম বাসুদেব সার্বভৌমের বাড়ির সুড়ঙ্গ ও গম্ভীরার গুপ্তকক্ষ দেখার আশ্চর্য অভিজ্ঞতার কথা। একটি অত্যন্ত বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পারি যে কালাপাহাড়ের সঙ্গে চৈতন্য মহাপ্রভুর সাক্ষাত হয়েছিলো। অন্তর্ধানের সময় ওনার অনুচরেরা চৈতন্য মহাপ্রভুকে সাহায্যও করেন গোপন নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছতে। তবে সেই রহস্যময় অন্তর্ধানের পরেও আরও বহু বছর বেঁচে ছিলেন তিনি। পুরোপুরি লোকচক্ষুর আড়ালে থেকে, নিজের সমস্ত super-human বা অতি মানবিক image নিজের হাতেই বিসর্জন দিয়ে, একটি পরিবারে আশ্রিত হয়ে রয়ে গেলেন। কিন্তু সবচেয়ে আশ্চর্য ব্যাপার হল উনি তো আর একা হারিয়ে গেলেন না। মোটামুটি একই সময়ে অত্যন্ত বহস্যজনকভাবে অন্তর্ধান ঘটে ওনার প্রায় সমস্ত প্রধান পার্ষদদেরও। একদল মানুষ একসঙ্গে হারিয়ে গেলেনই বা কেন ? এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে করা একটা বিরাট রহস্যময় পরিকল্পনার সফল রূপায়ন খুব সহজেই চোখে পড়ে। অন্তর্ধানের পর চৈতন্য মহাপ্রভু বেঁচে ছিলেন আরো ২০ বছর। এই ব্যাপারে নিশ্চিত প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। আর অবশ্যই তা ইতিহাসের দিক থেকে নয়। তবে বিশেষ কারণবশত, জনসমক্ষে তা প্রকাশ করার সময় এখনও আসেনি। তবু আমাদের মনে রাখতে হবে মানুষটা স্বয়ং চৈতন্য মহাপ্রভু। আর পাঁচজন সাধারণ মানুষের মতো তিনি শুধুই খেয়েছেন আর ঘুমিয়েছেন এতোগুলো বছর ধরে তা কখনই হতে পারে না। কিন্তু কি সেই মহান উদ্দেশ্য ?
চৈতন্য মহাপ্রভুর রহস্যজনক অন্তর্ধানের পরবর্তী জীবন সম্পর্কে আরও একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ সূত্র রয়েছে জয়দেববাবুর "কাঁহা গেলে তোমা পাই" গ্রন্থে। জটাজুটধারী সন্ন্যাসীর বেশে উনি চলে যান ঘোলাডুবলী। তারপরে বাংলার দিকে। যদিও সেই সূত্রে ওনাকে কর্তাভজা সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা আউলচাঁদের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে, তবু সময়ের দিক থেকে দুজনের তফাত হয়ে যাচ্ছে প্রায় দেড়শো বছর। সুতরাং চৈতন্য মহাপ্রভু ও আউলচাঁদ যে সম্পূর্ণ আলাদা দুজন মানুষ সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তবে আশ্চর্য ব্যাপার, অন্তর্ধানের পরে এই ঘোলাডুবলী আর চৈতন্য মহাপ্রভু সম্পর্কে উল্লেখ পাওয়া গেলো আরো কয়েকটা জায়গায়।
স্নেহাশিস
পারুল আশ্রম
শেয়ার করুন
এই দিনে
2 বছর আগে

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন