বৃহস্পতিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২০

বেঁচে থাকুক সম্পর্ক

বেঁচে থাকুক সম্পর্ক
 
 
বেঁচে থাকুক সম্পর্ক
 
খেজুর গাছের কোলে
বট অশ্বথ পাকুড় দোলে

বুলবুলি,রামঘুগু,টুনটুনি
ফিঙে,শালুকদের মলে
ওদেরই বীজ ফলে।
 
সুন্দরবনের গ্রামীন চালচিত্রে বাস্তুতন্ত্রিক বৈচিত্র্যের মধ্যে বট,অশ্বথ ও পাকুড়ের স্বাভাবিকতা রয়েছে ও তার মধ্যে লুকিয়ে আছে মৌলিকত্ব। খেজুর একটি অতীব সুন্দর ও অর্থনৈতিক উদ্ভিদ। এর রস গুড়,পাটালি,চাঁপালি,ফল দারুন স্বাদের। এর পাতা দিয়ে গ্রামে কুঁসতে,মাদুর বোনা হয় যা গ্রামীন সৌন্দর্য রক্ষা করে। এর মেথি খুবই সুন্দর খেতে লাগে। এর পাকা ফল কুকুর শিয়াল খেয়ে জমির ও রাস্তার ধারে মলত্যাগ করে সেখান থেকে ও খেজুর গাছ হয়। টিঁয়া,বুলবুলি, রামঘুগু এর ফল খেয়ে বিভিন্নভাবে ছড়ায় তবে বেশিদূর নয়। গ্রামের ছোট দস্যু ছেলেমেয়েরা এর ফল খেয়ে বীজ ইতস্তত ছড়িয়ে দেয় তাতে খেজুর গাছের বিস্তার এর প্রবাহমাত্রা চলমান থাকে। ইদানিং খেজুর ফল খাওয়ার প্রচলন কমে গেছে আধুনিকতার দরুন। কত রকমের নাম কাটখেজুর,মোটাখেজুর, ইত্যাদি স্বাদের ভিন্নতার কারণে।
বুলবুলি, টুনটুনি,ফিঙে,রামঘুগু ও শালুক জাতীয় পাখিরা বট,অশ্বথ ও পাকুড়ের ফল খেয়ে খেজুরের কাণ্ডের খোঁপায় মলত্যাগ করে। তারা অন্যত্র ও মলত্যাগ করে। তবে কেবল তাল ও খেজুরের কাণ্ডের খোঁপায় মলত্যাগ বা পাকা বাড়ির ইট এর খোঁপায় বট,অশ্বথ পাকুড়ের নবজন্ম হয়। এতে তাল ও খেজুরের অবশেষে মৃত্যু ও হয়।
গ্রামে বট,অশ্বথ ও পাকুড়ের জন্মবৃদ্ধি করাতে হলে বেশি করে খেজুরগাছ লাগাতে হবে। বুলবুলি,টুনটুনি,রামঘুগু পাখিদের বাসস্থান এর বাস্তুতন্ত্রিক সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হবে তবেই আমাদের জাতীয় বৃক্ষ টিকে থাকবে।
বিজ্ঞান বলছে বট, অশ্বথ পাকুড়ের বীজ তে শক্ত কঠিন আবরণী থাকে। পাখি এই ফল খেয়ে বীজের শক্ত আবরণী কে হজম করে গলিয়ে দেয়, তাই পাখির মল থেকেই বোট,অশ্বথ ও পাকুড়ের জন্ম।
কিন্তু পাখি তো গাছের তলায় মলত্যাগ করে সেখানে বট,অশ্বথ ও পাকুড় তো জন্মায় না?
কেবল খেজুর ও তাল গাছে জন্মায় কেন? হা ওদের জন্মানোর জন্য চাই বিশেষ অনুপরিবেশ বা microclimate যা কেবল খেজুর ও তাল উদ্ভিদের কোলেই(কাণ্ডের খোঁপা) পাওয়া যায়।

বেঁচে থাকুক সম্পর্ক।
 
শেয়ার করেছেন :- প্রণব কুমার কুণ্ডু
প্রণব কুমার কুণ্ডু



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন