বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৩

অখিল ভারতীয় জনসংঘ

 


অখিল ভারতীয় জনসংঘ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
অখিল ভারতীয় জনসংঘ
প্রতিষ্ঠাতাশ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়
প্রতিষ্ঠা২১ অক্টোবর ১৯৫১
ভাঙ্গন১৯৭৭
বিভক্তিঅখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভা
একীভূত হয়েছেজনতা পার্টি (১৯৭৭–১৯৮০)
পরবর্তীভারতীয় জনতা পার্টি (১৯৮০–বর্তমান)
মতাদর্শহিন্দু জাতীয়তাবাদ[১]
হিন্দুত্ব[২]
একাত্ম মানববাদ[৩]
জাতীয় রক্ষণশীলতাবাদ[৪]
অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদ[৫]
রাজনৈতিক অবস্থানডানপন্থী রাজনীতি
আনুষ্ঠানিক রঙ     জাফরান
নির্বাচনী প্রতীক
Diya, a traditional oil lamp, was the symbol of the party
ভারতের রাজনীতি
রাজনৈতিক দল

ভারতীয় জনসঙ্ঘ ভারতের একটি বিশেষ হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক সংগঠন যার অস্তিত্বকাল ১৯৫১ থেকে ১৯৯০ সাল এবং পরবর্তীকালে এই সংগঠনটিই ভারতীয় জনতা পার্টি নামক ভারতের একটি অন্যতম রাজনৈতিক দলে রূপান্তরিত হয়।

উদ্ভব[সম্পাদনা]

১৯৫১ খ্রিষ্টাব্দের ২১ অক্টোবর প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় দিল্লিতে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের সঙ্গে ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠা করেন ভারতীয় জনসঙ্ঘ

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1.  Graham, Bruce D.। "The Jana Sangh as a Hindu Nationalist Rally"। Hindu Nationalism and Indian Politics। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 94।
  2.  Thachil, Tariq (২০১৪)। Elite Parties, Poor Voters। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 42
  3.  Kochanek, Stanley (২০০৭)। India: Government and Politics in a Developing Nation। Cengage Learning। পৃষ্ঠা 333।
  4.  Baxter, Craig (১৯৬৯)। The Jana Sangh: a biography of an Indian political party। University of Pennsylvania Press। পৃষ্ঠা 171
  5.  Marty, Martin E. (১৯৯৬)। Fundamentalisms and the State। University of Chicago Press। পৃষ্ঠা 418।

অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভা

 


অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভা (হিন্দি: अखिल भारत हिन्दू महासभा, ইংরেজি: All-Indian Hindu Assembly) একটি হিন্দু জাতীয়তাবাদী সংগঠন। এই সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য ছিল উত্তর ভারতের বিভিন্ন স্থানীয় হিন্দু আন্দোলনকে একত্র করা। ১৯১৫ সালে হরিদ্বারের কুম্ভমেলায় মদনমোহন মালব্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ‘অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভা’। হিন্দু মহাসভার অন্যান্য প্রতিষ্ঠাতা ১৯২০ দশকে সংগঠনটিকে কংগ্রেসের আদলে ঢেলে সাজানো হয়েছিল। ভারতের অধিকাংশ অঞ্চলে এর শাখা তৈরি করা হয়েছিল। এই সংগঠন হিন্দু ও অস্পৃশ্যদের মধ্যে সামাজিক ও ধর্মীয় কর্তব্যসমূহ, গোরক্ষা ও হিন্দি ভাষা বিস্তারের ওপর জোর দেয়। কংগ্রেসের রাজনৈতিক কৌশলের কারণে যখন হিন্দু স্বার্থ বিপন্ন বলে মনে করা হতো, সংগঠনটি হিন্দুস্বার্থ রক্ষার দিকেই বেশি মনোযোগী ছিল। মূলত ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ এই দুই ভাবধারার বিপরীতে এই সংগঠন তৈরি হয়।

প্রতিষ্ঠাকাল থেকে বিভিন্ন মানুষ এই সংগঠনটির সভাপতিত্তের পদ অলংকরণ করেছেন: পণ্ডিত মদনমোহন মালব্য , স্বামী শারধানন্দ, শঙ্করাচার্য কুর্তকোটি, এনসি কেলকর, লালা লাজপত রায়, রাজা নরেন্দ্রনাথ, রামানন্দ চ্যাটার্জী, বিজয়রঘাবাচার্য, ভীরুস্তামতা, বিনায়ক দামোদর সাভারকর, ডাঃ বিএসমুনজে, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, ডাঃ এনবিখারে, এনসিসিটারজি, প্রফেসর ভিজিদেশপান্ডে,

মহাত্মা গান্ধীর ডাকা অসহযোগ-খিলাফত আন্দোলনের তীব্র বিরোধিতা করে নিরপেক্ষ অবস্থা নেয় মহাসভা। চৌরিচৌরার ঘটনার প্রেক্ষিতে গান্ধীজি আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেওয়ার পরে, ১৯২৩ সাল নাগাদ বিরাট হিন্দু পুনরুত্থান অভিযান শুরু করে মহাসভা। ১৯২৩ সাল নাগাদ অগস্ট মাসে মালব্যের সভাপতিত্বে বারাণসী অধিবেশনে মহাসভা ‘শুদ্ধি’ কর্মসূচি গ্রহণ করে, ডাক দেয় ‘হিন্দু আত্মরক্ষা বাহিনী’ গড়ে তোলেন। ১৯২০ দশকে মহাসভার কর্মকাণ্ড প্রধানত হিন্দু সমাজের অস্পৃশ্যতা দূরীকরণ ও ‘অপবিত্র’ জনের শুদ্ধিকরণে কেন্দ্রীভূত ছিল। ১৯২১ সালের আদমশুমারির সময় ভারতীয় মূল আদিবাসীদেরকে বর্ণ হিন্দুদের নামগ্রহণ করতে ও নিজেদেরকে ক্ষত্রিয় হিসেবে পরিচয় দিতে উদ্বুদ্ধ করে।

১৯২৫ সালে কেশব বলীরাম হেডগেয়ার নেতৃত্বে একটি গোষ্ঠী মহাসভা থেকে বেরিয়ে এসে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ একটি নতুন অরাজনৈতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৩০-এর দশকের শেষভাগে ধর্মান্তরিত নিম্নবর্ণের মানুষকে হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টার জন্য মুসলমানদের সঙ্গে সংঘর্ষের রূপ নেয়। মুসলিম লিগ ও ভারতের জাতীয় কংগ্রেস দল থাকা সত্তেও হিন্দু মহাসভার পাল্টা হিসাবে গড়ে ওঠে মুসলমানদের ‘তবলিগ’ (প্রচার) ও ‘তনজিম’ (সংগঠন)। এই সংঘর্ষ প্রায়শই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় পরিণত হতো। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে নিম্নবর্ণের হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে দাঙ্গা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটতে দেখা যায়।

১৯৪০ দশকে ভারতের জাতীয় কংগ্রেস, মুসলিম লিগ ও মহাসভার মধ্যে রাজনৈতিক মতানৈক্য চরমে ওঠে। হিন্দু স্বার্থ রক্ষায় হিন্দু মহাসভা না কংগ্রেস কে বেশি পারঙ্গম, সেটির দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে।১৯৪৬ সালের ১৬ আগস্ট মুসলিম লীগের ডাকা প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবসে পরিণতিতে কলকাতায় যে ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ ও দাঙ্গা সংঘটিত হয়, তাতে মহাসভার রাজনৈতিক আশা কিছু পরিমাণে পুনরুজ্জীবিত হয়।

১৯৪৭ সালের ভারতের স্বাধীনতা অর্জন ও গান্ধী হত্যার পর হিন্দু মহাসভার বহু সদস্য শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় জন সংঘে যোগদান করেন। শ্যামাপ্রসাদ মহাসভায় মুসলমান সদস্য অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রাখলে সাভারকর তা খারিজ করে দেন। এরপর শ্যামাপ্রসাদ মহাসভা ত্যাগ করেন এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধানে একটি পৃথক রাজনৈতিক দল গঠনের জন্য সংঘের সঙ্গে হাত মেলান।

হিন্দু জনতার মধ্যে সাভারকরের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার কারণে সংঘপ্রধান মাধব সদাশিব গোলওয়ালকর কিছুটা প্রভাবান্বিত মনে করতে শুরু করেন। ফলে সংঘ ও মহাসভার সম্পর্কের অবনতি হয়। সরকারিভাবে এখনও মহাসভা একটি রাজনৈতিক দল হলেও, যথেষ্টসংখ্যক ভোট না পাওয়ায় এটির কোনও স্বীকৃত প্রতীক নেই। তাই এখন বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন প্রতীকে এই দল ভোট লড়ে থাকে। শাহজাহানপুরের বিষানচন্দ্র শেঠ হিন্দু মহাসভার অন্যতম বরিষ্ঠ সাংসদ।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]