বিবেকানন্দ ( ছয় )
Pradip Roy
Vishva Hindu Parishad (V.H.P) Uttarpara / বিশ্ব হিন্দু পরিষদ উত্তরপাড়া
Pradip Roy
বন্ধুরা একটু দাঁড়িয়ে যান ...সময় নিয়ে পড়ুন
স্বামীজি মারা যান 39 বছর বয়েসে 1902 সালে । বেলুড় মঠে তখন রাত 9 টা 10 মিনিট। তখন বেলুড় মঠে বা তার পার্শ্ববর্তী গ্রামে বিদ্যূৎ ছিল না । কিন্তু টেলিফোন ছিল তবুও কোন সংবাদমাধ্যম আসেনি এবং পরের দিন বাঙ্গলাদেশের কোন কাগজেই বিবেকানন্দের মৃত্যূ সংবাদ প্রকাশিত হয়নি এমন কি কোন রাষ্ট্রনেতা বা কোন বিখ্যাত বাঙ্গালী কোন শোকজ্ঞাপনও করেননি ।
ভাবতে পারেন বন্ধুরা ?
স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর স্বল্প জীবনে অপমান অবহেলা উপেক্ষিত হয়েছেন বার বার। পিতার মৃত্যূর পর স্বজ্ঞাতির সঙ্গে কোর্ট কাছারী করতে হয়েছে তাঁকে। বহু বার হাজিরা দিয়েছেন কাঠগড়ায় l
নিদারুণ দরিদ্রের সংসার সকালে উঠে অফিস পাড়া ঘুরে ঘুরে চাকরির খোঁজে বেরুতেন । দিনের পর দিন মা কে বলতেন মা আজ রাতে বন্ধুর বাড়িতে দিনে খেতে যাবো। কোন দিন দেখলেন সংসারে চাল,ডাল,নুন ,তেল কিছুই নেই কিন্তু ভাই ও বোন নিয়ে 5 টা পেটের খাবার কি ভাবে হবে ? মুদির দোকানে ধার করে মাকে এক- দুই দিনের চাল ডাল দিয়ে ... মা কে বলতেন আমার রান্না কোরো না... মা ! দিনে দুই বন্ধুর বাড়িতে নিমন্ত্রণ আছে কিন্তু..কোথায় নিমন্ত্রণ ? .. আনাহার আর অর্ধপেটে থাকতেন বিবেকানন্দ ...
ভাবতে পারেন আপনারা ?
চরম দারিদ্রের মধ্যে সারা জীবনটাই টেনে নিয়ে গেছেন । 23 বছর বয়েসে শিক্ষকের চাকরি পেলেন মেট্রোপলিটন স্কূলে । যাঁর প্রতিষ্ঠাতা বিদ্যাসাগর মশাই আর হেডমাস্টার বিদ্যাসাগরের জামাতা । জামাতা পছন্দ করতেন না নরেন্দ্রনাথ দত্তকে .. শ্বশুরকে বলে..."খারাপ পড়ানোর অপরাধে" বিদ্যালয় থেকে তাড়িয়ে দিলেন বিবেকানন্দকে । বেকার বিবেকানন্দ। বিদেশেও তাঁর নামে এক বাঙ্গালি গুরু বিবেকানন্দের নামে কুৎসা প্রচার করেন .. । ......
দেশে ও বিদেশে অর্ধপেটে বা অভুক্ত থেকেছেন দিন থেকে দিনান্তে....
চিঠিতে লিখেছিলেন :-
"-কতবার দিনের পর দিন অনাহারে কাটিয়েছি । মনে হয়েছে আজই হয়ত মরে যাবো ... জয় ব্রহ্ম বলে উঠে দাঁড়িয়েছি .... বলেছি . ..আমার ভয় নেই । নেই মৃত্যূ, নেই ক্ষুধা, আমি পিপাসা বিহীন । জগতের কি ক্ষমতা আমাকে ধ্বংস করে ?" ...
অসুস্থ বিবেকানন্দ বিশ্ব জয় করে কলকাতায় এলে তাঁর সংবর্ধনা দিতে বা সংবর্ধনা সভা তে আসতে রাজি হয় নি অনেক বিখ্যাত বাঙ্গালী ( নাম গুলো আর বললাম না) শেষে প্যারিচাঁদ মিত্র রাজি হলেও ... তিনি বলেছিলেন .. ব্রাহ্মণ নয় বিবেকানন্দ । ও কায়েত... তাই সন্ন্যাসী হতে পারে না , আমি ওকে brother বিবেকানন্দ বলে মঞ্চে সম্বোধন করবো । 1898, বিদেশের কাগজে তাঁর বাণী ও ভাষণ পড়ে আমেরিকানরা অভিভূত আর বাঙ্গালীরা !
ওই বছর অক্টোবরে অসুস্থ স্বামীজি কলকাতার বিখ্যাত ডক্টর রসিকলাল দত্ত,চেম্বার- 2 সদর স্ট্রিট। কলকাতা যাদুঘরে পাশের রাস্তা । রুগী বিবেকানন্দ কে দেখে সেই সময় 40 টাকা ও ঔষুধের জন্যে 10 টাকা মানে আজ 2017 হিসাবে তিনি ...
নানা রোগে আক্রান্ত বিশ্বজয়ী দরিদ্র সন্ন্যাসীর কাছে নিলেন . 15000( হুঁ- পনেরো হাজার টাকা ) মঠের জন্যে তোলা অর্থ থেকে স্বামী ব্রহ্মনন্দ এই টাকা বিখ্যাত বাঙ্গালী(?) ডক্টর রসিকলাল কে দিয়েছিলেন। ..
আর ও শুনবেন ?
বিবেকানন্দের মৃত্যূর কোন ফটো নেই । এমনকি বীরপুরুষের কোন ডেথ সার্টিফিকেটও নেই কিন্তু সে সময় বালি - বেলুড় মিউনিসিপালিটি ছিলো।
আর এই municipality বেলুড় মঠে প্রমোদ কর বা amusement tax ধার্য করেছিলো ।
বলা হয়েছিল ওটা ছেলে ছোকরাদের আড্ডার ঠেক আর সাধারণ মানুষ বিবেকানন্দকে ব্যঙ্গ করে মঠকে বলতো .. "বিচিত্র আনন্দ" বা "বিবি- কা আনন্দ" । ( মহিলা /বধূ / ... নিয়ে আনন্দ ধাম)। এই ছিলো প্রতিবেশী বাঙ্গালীদের মনোবৃত্তি l ...
হে হিন্দু সমাজ জাগো, আর কত বীর যোদ্ধাদের এইভাবে অপমান করবে? যিনি বিশ্বকে জয় করেছেন তাকেও তোমরা চিনতে পারলে না, কবে চিনবে তাদের? চেয়ে দেখ তোমাদের মাঝে এই ভারতমাতার বক্ষে রয়েছে কত বিবেকানন্দ, চোখ খুলে দেখ তারাই তো স্বামী বিবেকানন্দ।
শেয়ার করেছেন : - প্রণব কুমার কুণ্ডূ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন