বৃহস্পতিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০

নাগদেবতা

নাগদেবতা

 
 
 
 
প্রণব কুমার কুণ্ডু
 
 
সবার সাথে একসাথে শেয়ার করা হয়েছে
সবাই
কারা ‘নাগদেবতা’! তাঁরা কি আজও পৃথিবীতে আসেন ?
*********************************************************
#মধু সাপটির সামনে নত হতেই নাগরাজ তাঁর দ্বিখণ্ডিত জিভ দিয়ে তাঁর মাথা স্পর্শ করলেন, মধুর মনে হল, তাঁর শরীরের মধ্য দিয়ে হালকা বিদ্যুৎ তরঙ্গ বয়ে গেল৷
নাগ দেবতা, অরুণাচলেশ্বর মন্দির, থিরুভন্নমালাই, তামিল নাডু। 
 
প্রাচীন গল্প তো অনেক হলো, এবার একটা একালের বৃত্তান্ত শোনানো যাক৷ একালের হলেও শুনতে কিন্তু রূপকথার মতই লাগবে৷ স্বাধীনতার ঠিক পরে ত্রিবান্দ্রম (তখন ওই নাম প্রচলিত ছিল) শহরে এক সঙ্গতিসম্পন্ন মুসলমান পরিবারে একটি বালকের জন্ম হয়৷ তার বাবার কন্ট্রাক্টরি এবং নানারকম ব্যবসা ছিল৷ তারা আদতে ছিল পাঠান, কয়েক পুরুষ আগে তাদের এক পূর্বপুরুষ ত্রিবাঙ্কুরের রাজার সৈন্যবাহিনীতে পেশাদার সৈনিক হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন৷ ছেলেটির নাম ছিল মমতাজ আলি খাঁ৷ ছোটবেলা থেকেই সে একটু অন্যপ্রকৃতির ছিল, পড়াশোনা, খেলাধূলায় তার মন ছিল না, এক থাকতে ভালবাসত, সংসারে তার যেন আসক্তিই ছিল না, আর বাড়ির লোকেরা অবাক হয়ে গিয়েছিল তার পাহাড়, বিশেষ করে সুউচ্চ পাহাড়ের প্রতি আগ্রহ দেখে৷ একটু বড় হতেই সে বলতে লাগল যে, সে অহরহ মনের মধ্যে হিমালয়ের আহ্বান শুনতে পায়৷ কুড়ি বছর বয়সে কলেজের পরীক্ষার ফি দেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে ফি-য়ের টাকা সমেত সে উধাও হয়, দীর্ঘ পরিব্রাজনের পরে হিমালয়ে পৌঁছে এক গুহায় নিজের পূর্বজন্মের গুরুকে খুঁজে পায়৷ নিজের আত্মস্মৃতিতে তিনি লিখেছেন, তিনি শুধুমাত্র হিমালয় পর্যন্ত পৌঁছেছিলেন, এর পরে তাঁর গুরুই তাঁকে খুঁজে বার করেন৷ তাঁর গুরুর নাম তিনি আত্মজীবনীতে জানাচ্ছেন— যোগী মহেশ্বরনাথ৷
গুরুর সঙ্গে দেখা হবার পরে মমতাজ আর বাড়ীতে ফেরেননি, গুরুর সঙ্গেই হিমালয়ে ঘুরে বেড়ান ও সাধন শেখেন৷ কয়েক বছর পরের কথা, দেবপ্রয়াগের কাছে অরুন্ধতী গুহায় গুরু-শিষ্য রাত কাটাচ্ছেন, এক রাতে মমতাজের (গুরু ততদিনে তাঁর নাম দিয়েছেন ‘মধুকরনাথ’) ঘুম ভেঙ্গে গেল। মনে হল, বাইরে কোথায় যেন বাজ পড়ল৷ উঠে দেখলেন, তাঁর গুরু পদ্মাসনে বসে রয়েছেন জ্বলন্ত ধুনির দিকে তাকিয়ে আর মেঘের মধ্যে দিয়ে একটা আগুনের গোলা তাঁদের দিকে ছুটে আসছে৷ গোলাটি তাঁদের গুহায় ঢুকে ধুনির সামনে সশব্দে ফেটে গেল৷ তার মধ্যে থেকে যা বেরিয়ে এল, তাই দেখে মধুকরের রক্ত পর্যন্ত আতঙ্কে জমে গিয়েছিল৷ তিনি দেখলেন, একটি বিশাল সাপ, প্রকাণ্ড তার ফণা আর সর্বাঙ্গ দিয়ে নীল আলো বেরচ্ছে৷ সাপটি মধুকরের দিকে তাকালোও না, সে ভক্তিভরে তাঁর গুরুকে প্রণাম করল, গুরুজিও সাপের মাথায় হাত রেখে আশীর্বাদ করলেন৷ তার পর দু’জনে বেশ খানিকক্ষণ শিস দিলেন, বোঝা গেল এই ভাবেই দুজনের মধ্যে বার্তা বিনিময় হলো৷ আলাপচারিতা শেষ হলে গুরুজি মধুকরকে ডেকে বললেন— ‘‘মধু, নাগরাজকে প্রণাম করে যাও৷’’ মধু সাপটির সামনে নত হতেই নাগরাজ তাঁর দ্বিখণ্ডিত জিভ দিয়ে তাঁর মাথা স্পর্শ করলেন, মধুর মনে হল, তাঁর শরীরের মধ্য দিয়ে হালকা বিদ্যুৎ তরঙ্গ বয়ে গেল৷ তার পরেই নাগরাজ তাঁর গোলার মধ্যে ঢুকে পড়লেন, খট করে গোলার দুটি প্রান্ত এঁটে গেল, তার পর আবার সেই বজ্রপাতের মতো শব্দ করে গোলাটি আকাশে ভেসে গেল৷
নাগরাজের প্রস্থানের পরে মধু গুরুকে বললেন, ‘‘বাবাজি, এই ব্যাপারটা আমাকে একটু বুঝিয়ে বলতে হবে। কারণ আমি যা দেখলাম, তা যদি লোকজনকে বলি, সবাই ভাববে আমি হয় পাগল নয় গেঁজেল৷’’
গুরুজি হেসে বললেন, ‘‘তুমি ঠিকই বলছ, কিন্তু তুমি যখন তোমার আত্মজীবনী লিখবে, তখন এই ঘটনাটা অবশ্যই লিখবে, লোকে মানুক আর না মানুক৷ এর বৃত্তান্ত আমি তোমাকে খুলে বলছি, মন দিয়ে শোনো৷’’
গুরু বলতে শুরু করলেন, ‘‘ছায়াপথে সাতটি গ্রহ আর এগারোটি চন্দ্রবিশিষ্ট একটি সৌরজগৎ রয়েছে৷ এর একটি হল সর্পলোক, যেখানে অত্যন্ত উন্নত ও উচ্চস্তরের সাপেরা থাকে৷ তুমি যে নাগরাজকে দেখলে, তিনি সেই গ্রহের দু’নম্বর শাসক৷ এক নম্বর হলেন অনন্তনাগ, বিষ্ণু যাঁকে শয্যারূপে ব্যবহার করেন৷ আদিযুগে নরলোকের সঙ্গে সর্পলোকের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল৷ জ্ঞানী ও উচ্চস্তরের নাগেরা পৃথিবীতে এসে মানুষকে শিক্ষা দিতেন৷ আমরা যে নানা স্থানে সর্পপূজার কথা শুনি, সেখানে এই উন্নত নাগেরাই পূজিত হতেন৷ নাগরা আমাদের কুন্ডলিনীতত্ত্ব শিখিয়েছেন৷ ভুলে যেও না, কুন্ডলিনীর প্রতীক কিন্তু সাপ৷ অষ্টাঙ্গ যোগসূত্রের রচয়িতা পতঞ্জলি একজন নাগ ছিলেন৷ মিশরের ফ্যারাও-এর রাজকীয় শিরোস্ত্রাণে সাপের ছবি এই ঋণ স্বীকারের জন্য৷ কালের গতিতে মানুষ শক্তিশালী ও সেই সঙ্গে লোভী, চতুর আর সুযোগসন্ধানীও হয়ে উঠল৷ বিচক্ষণ ও জ্ঞানী নাগদের কাছে অনেক মানুষই হীনমন্যতায় ভুগতো, তাই শুরু হলো সাপবিতাড়ন ও নিধন৷ ব্যাপারটা এমন জায়গায় পৌঁছল যে, অনন্তনাগ এক বিশেষ আদেশ জারি করে পৃথিবীর সঙ্গে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করলেন৷ সব নাগেরা রাতারাতি সর্পলোকে ফিরে গেল, পৃথিবীর আকর্ষণে এখানে রয়ে গেল কিছু অসুস্থ, বৃদ্ধ ও বিদ্রোহী সাপ, তারা খুবই নিকৃষ্ট শ্রেণির৷ এখন যাদের তুমি দেখো, তারা ওই নিকৃষ্ট বৈরী সাপদের বংশধর৷ তারা আজও মানুষকে তাদের প্রধান শত্রু বলে মনে করে৷ কিন্তু যোগী সম্প্রদায়ের উচ্চকোটির সাধকেরা অনেকে, আমার গুরুদেব নিজে, সর্পলোকের শীর্ষস্থানীয়দের সঙ্গে যোগ রাখেন৷ সর্পলোকের কিছু সমস্যার বিষয়ে নাগরাজ আমার সঙ্গে আলোচনা করতে এসেছিলেন৷ এর বেশি তোমাকে বলা যাবে না৷
মিশরের ফারাওদের মুকুটে সর্পপ্রতীক।
উপরের ঘটনার পরে প্রায় আঠারো বছর কেটে গেছে৷ মধুকরনাথ ততদিনে গুরুর আদেশে লোকালয়ে ফিরে এসেছেন, শ্রী-এম নামে পরিচিতি লাভ করেছেন, হঠাৎ একদিন সংবাদ এল যে, তাঁকে অবিলম্বে গুরুর সঙ্গে দেখা করতে হবে৷ শ্রী-এম চেন্নাই থেকে উত্তরাখণ্ড ছুটে গিয়ে মৌনী বাবার গুহায় গুরুর কাছে পৌঁছলেন৷
গুরু বললেন, ‘‘তোমাকে ডেকেছি, কেন না আমার দেহত্যাগের কাল এসে গিয়েছে৷ আমার শেষ কাজ তোমাকেই করতে হবে৷’’
বহু অনুরোধ, উপরোধ, ও অশ্রুবর্ষণেও কোন ফল হল না, গুরু আপন সিদ্ধান্তে অটল রইলেন৷ শিষ্য একটু শান্ত হওয়ার পরে তিনি তাঁকে সাধনপথে এগিয়ে যাওয়ার কতকগুলি বিশেষ ক্রিয়া শেখালেন৷ তারপর শ্রী-এমকে নিয়ে গেলেন নীলকন্ঠ পাহাড়ের নীচে এক নির্জন স্থানে৷ সেখানে শাবল, কোদাল ও অন্যান্য উপকরণ মজুত ছিল৷ তাই দিয়ে গুরু শ্রী-এমকে বললেন একটি সমাধি খনন করতে৷ নির্দিষ্ট মাপের সেই গহ্বর খুঁড়তে শ্রী-এম-এর দু’দিন লেগে গিয়েছিল৷ তৃতীয় দিন রাতে তাঁরা দু’জনে যখন আবার সেই সমাধির স্থানে ফিরে গেলেন, ততক্ষণে শ্রী-এম বুঝতে পারছিলেন সেই রাতই সম্ভবত তাঁর গুরুদেবের অনন্তযাত্রার রাত্রি৷ সেদিন ছিল পূর্ণিমা তিথি৷ সন্ধ্যা থেকে স্নিগ্ধ বাতাস বইছিল, সূর্যাস্তের পরে পূর্ণচাঁদের আলোয় উদ্ভাসিত আকাশ থেকে দু’টি উজ্জ্বল গোলক যুগল চাঁদের মতো নেমে এল৷ তার থেকে বেরিয়ে এলেন মহেশ্বরনাথের গুরু মহাবতার বাবাজি মহারাজ ও নীলবর্ণ এক অতি কান্তিময় তরুণ৷
মধু দু’জনকে প্রণাম করার পরে কান্তিময় তরুণটিকে সামনে এনে স্মিতমুখে মহাবতার বললেন, ‘‘মধু, বোধ হয় নাগরাজকে চিনতে পারছ না, তুমি ওঁকে এই রূপে দেখনি, নাগেরা কিন্তু ইচ্ছামতো চেহারা ধারণ করতে পারে৷’’
শ্রী-এম-এর গুরু জানালেন, ‘‘এই মহাবতার আমার গুরু৷ উনি বিখ্যাত বাঙালি গৃহযোগী শ্যামাচরণ লাহিড়ি মহাশয়কেও দীক্ষা দিয়েছিলেন৷ ইনি মহাযোগী, মৃত্যুলোক ও তপোলোকের মধ্যে অনায়াসে বিচরণ করতে পারেন৷’’
এর পরে উপযুক্ত মুহূর্ত দেখে গুরু, শিষ্য ও নাগসখার সামনে শ্রীএম-এর গুরু মহেশ্বরনাথ মহাসমাধিস্থ হলেন৷ আমি নিজেই সংযোগ করে দিচ্ছি, জাগতিক হিসাবে মহাবতার বাবাজির বয়স অন্তত কয়েক শতাব্দী হলেও ভক্তদের ধারণা, তিনি এখনও নিজ দেহে বর্তমান এবং হিমালয়ের কোনও গোপন গুহায় অবস্থান করেন৷ ইনি নাথ সম্প্রদায়ের মহাগুরু বলেও পরিচিত, এই শতাব্দীতে যে ধারার অন্যতম ধারক ও বাহক হলেন বিতর্কিত মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ৷
বিভিন্ন সূত্র, বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া নাগজাতিকে কেন্দ্র করে কয়েকটি উপকথা আপনাদের শোনালাম৷ এ রকম কাহিনি হয়তো নানা ধর্ম-সম্প্রদায়ের মধ্যে আরও ছড়িয়ে রয়েছে, কোনও পুণ্যবান যদি তা সংকলন করতে পারেন, তা হলে একটা বড় কাজ হবে৷
মোটামুটি যা উঠে এল, তা হচ্ছে এই— কোনও আদি যুগে মানুষ আর তার প্রতিবেশী সরীসৃপরা খুব কাছাকাছি ছিল৷ তার পরে বিচ্ছেদ আসে। সেই বিচ্ছেদ যা এতই তিক্ত, এতই রক্তক্ষয়ী যে, বহু সহস্রাব্দের পরেও সেই ঘৃণা ও জুগুপ্সা আজও অমলিন৷ এখনও আমরা সাপ দেখলেই হত্যা করার কথা ভাবি, সে বিষাক্ত কি নির্বিষ তা না খতিয়েই। সাপও মানুষ দেখলে তৎক্ষণাৎ ফণা তুলে আক্রমণ করে৷ শুধু বিশেষ কয়েকটি জায়গায় এখনও নাগজাতির প্রতি কিছুটা ভয়মেশানো শ্রদ্ধা টিকে রয়েছে, বিশেষ করে উত্তর-পূর্বের উপজাতিদের মধ্যে৷ এছাড়া মধ্যভারত অঞ্চলের নাগপুর, নাগোয়া প্রভৃতি স্থাননাম প্রাচীন সম্পর্কের ঐতিহ্য বহন করে চলেছে৷ ওই এলাকায় এখনও সাড়ম্বরে নাগপঞ্চমী পালিত হয়। অনেকের মুখেই শুনেছি উজ্জ্বয়িনীর মহাকালের মন্দিরে ওই দিন দু’টি বিশালকায় গোখরো সাপ সারাদিন শিবলিঙ্গ জড়িয়ে থাকে, রাত পোহালে তাদের আর দেখা যায় না৷
জাতি-বর্ণ নির্বিশেষ, ভারতের সর্বত্র একটা অদ্ভূত প্রথা দেখেছি— সাপেদের একটা স্পেশাল স্টেটাস আছে, যেভাবেই মৃত্যু হোক না কেন, একটি মরা সাপ দেখলে মানুষ ভাগাড়ে ফেলে দেয় না, তার যথাযথভাবে দাহসংস্কার করতে হয়, অনেক মানব সন্তানের কপালেও যা জোটে না৷
তবুও কলিযুগের শেষ প্রান্তে এসে এই বন্ধনসূত্র ছিন্ন হওয়ার মুখে৷ আমাদের পরিচিত বাংলা সাহিত্যে সাপের উপস্থিতি নামমাত্র৷ বাঙালি কবি কালিদাস রায় গদগদ হয়ে লিখেছেন— ‘‘তুমি দেবতারও বড়ো, আমার এ অর্ঘ্য ধরো, শৈব সাধু চন্দ্রধর বীর’’। এই চন্দ্রধর বণিক বা সোজা কথায় চাঁদ সদাগর কিন্তু সর্পহন্তাদের অগ্রণী, তাঁর আর কোন পরিচয় নেই৷ শরৎচন্দ্রের পরে সাপুড়ের চরিত্র আর কেউ সৃষ্টি করেছেন বলে মনে পড়ে না, এমনকী আমাদের শিশুসাহিত্যে যেখানে পশুপক্ষী নিয়ে উপেন্দ্রকিশোর, অবনীন্দ্রনাথ, সুকুমাররা মায়ালোক সৃষ্টি করেছেন, সেখানেই বা সাপ কোথায়? গিরীন্দ্রশেখর বসুর লালকালো-তে গড়গড়ি সাপের ভূমিকা কাটা সৈনিকের, সুনীল সরকারের ‘কালোর বই’-তে সাপ পুরো কালো রংয়ে রাঙানো, তার একমাত্র অভিলাষ নায়ককে দংশন ও নিধন করা৷
আজটেক সভ্যতার পবিত্র প্রতীক— দু’মুখো সাপ।
বলিউডে পাঁচের দশকে শশধর মুখোপাধ্যায়ের ‘নাগিন’ বক্স-অফিসে ঝড় তুললেও এ ধরনের ছবি আর হয়নি৷ ষাট-সত্তরে অনেক হিন্দি ছবিতে একটি ইচ্ছাধারী নাগিনের ভূমিকা থাকতো, যেখানে সুন্দরী অভিনেত্রী মাঝে মাঝেই সাপের সঙ্গে চেহারা বদল করতেন৷ কয়েক বছর আগে ‘হিসসস’ বলে একটি কুশ্রী ছবি গণেশ ওলটানোর পরে সে ধারাও থেমে গিয়েছে ৷তবু সাপের ছবি বললে আমার একটি ছবি মনে পড়ে— শেষ সত্তর কি প্রথম আশিতে নির্মিত কৃষ্ণ শাহের বিশাল ব্যয়বহুল ‘শালিমার’, যাতে প্রথম এবং শেষ বার পর্দা ভাগ করে নিয়েছিলেন রেক্স হ্যারিসন, শাম্মি কাপুর ও ধর্মেন্দ্র৷ তাতে কয়েকটি দীর্ঘ নাগনৃত্যের দৃশ্য ছিল, আবহতে দ্রিমি দ্রিমি মাদলের সঙ্গে রাহুল দেববর্মনের সুরে নাগদেবতার উদ্দেশে সম্মেলক গানটি বেশ মায়া ছড়িয়েছিল৷ কিন্তু কালের নিয়মে নাগদেবতা ‘ভাগ-দেবতা’ হয়ে উঠেছেন, খারাপ লাগলেও মেনে নিতে হবে, পুরাকালের আন্তরিকতায় ফিরে যাওয়ার পথ বোধ হয় আর খুঁজে পাওয়া যাবে না ৷
তথ্যসূত্র:
১. The Living Goddess By Isabella Tree, Penguin Viking, 2014
২. Apprenticed To A Himalayan Master By Shri M, Magenta Press, 2011.
৩. সুমন গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলাপচারিতা
৪. মহাভারত, অনুবাদক কালীপ্রসন্ন সিংহ, সাক্ষরতা প্রকাশন, ১৯৭৪
৫. পৌরাণিক অভিধান, সুধীরচন্দ্র সরকার, এম সি সরকার এন্ড সনস, ১৯৫৮
 
 
সবাই এর সাথে শেয়ার করা হয়েছে
সবাই

 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন