রূপক রায়ের কলাম ( ছয় )
ফেসবুক থেকে শেয়ার করেছেন প্রণব কুমার কুণ্ডু
প্রণব কুমার কুণ্ডু
প্রণব কুমার কুণ্ডু
মুহম্মদের ইহুদি বিদ্বেষ, একটি মিথ্যাগল্প ও কিছু নৃশংস ঘটনা :
"এক ইহুদি বুড়ি নবীর যাতায়াতের পথে কাঁটা দিতো। নবী প্রতিদিন সেই কাঁটা সরিয়ে যাতয়াত করতো। একদিন নবী দেখলো, পথে কাঁটা নেই। লোকজনদেরকে এর কারণ জিজ্ঞেস করলে তারা জানালো, যে বুড়িটা কাঁটা দিতো, সে অসুস্থ। নবী ঐ বুড়ির বাড়ি গেলো, তার অসুস্থতার খোঁজ-খবর নিলো এবং তার সেবা-যত্ন করলো। নবীর এই মহানুভবতায় ঐ বুড়ি ইহুদি ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহন করলো।"
- পৃথিবীর অন্যান্য দেশের কী অবস্থা জানি না, কিন্তু বাংলাদেশের বাচ্চা থেকে বুড়ো এমন কোনো মুসলমান নেই যে এই গল্প জানে না এবং মুসলমানদের কাছ থেকে শুনতে শুনতে আমার মতো অনেক হিন্দুরও এই কাহিনী একেবারে মুখস্থ। শুধু তাই নয়, এই কাহিনীর উদাহরণ দিয়ে মুসলমানরা বলার চেষ্টা করে যে, তাদের নবী কত মহৎ -মহান ! এবং এভাবে মুসলমানরা হিন্দুদেরকে ইসলাম ধর্মে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে। ইসলাম সম্পর্কে এক পাতাও না প‘ড়ে মুসলমানদের এই মিথ্যা প্রচারণার ফাঁদে পড়ে হিন্দুরাও মনে করে, আরে বাহ! নবী তো একজন মহান মানুষ, নিশ্চয় ইসলামও একটি মহান ধর্ম হবে। পরিশেষে হিন্দু মুসলমান সবারই এই ধারণা জন্মায় যে, যে মানুষ এমন মহান দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করতে পারে, সে নিশ্চয় খারাপ হতে পারে না। মুহম্মদ নিশ্চয় ভালো মানুষ।
২০০১ সালে, লাদেন, আমেরিকার টুইন টাওয়ারে হামলা করলে মুসলমানরা উৎফুল্ল হয়ে ভেবেছিলো, মুসলমানদের চিরশত্রু আমেরিকার উপর হামলা করা সম্ভব হয়েছে, এবার তাদের ধ্বংস করা সম্ভব হবে এবং সুপার পাওয়ার আমেরিকাকে ধ্বংস করতে পারলে সারা পৃথিবীতে ইসলামের বিজয় পতাকা উড়ানো তখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। কিন্তু নির্বোধ মুসলমানরা সেদিন বোঝে নি, ২০০১ সালে টুইন টাওয়ার নয়, লাদেন আসলে আঘাত করেছে, ইসলামের ভিত্তিমূলে। কারণ, ২০০১ এর আগে উৎসাহী দু'চার জন ছাড়া কেউ, কখনো, কোরান-হাদিসে কী লেখা আছে, তা পড়ে দেখার প্রয়োজন বোধ করে নি। তাই বেশির ভাগ অমুসলিম আগে জানতে পারে নি ইসলামের মূল কথা এবং মুসলমানদের চরিত্র। কিন্ত টুইন টাওয়ার ধ্বংসের পর সারা পৃথিবী হামলে পড়ে ইসলামের উপর, সবাই জানার চেষ্টা করতে থাকে, আসলে কী লেখা আছে কোরান ও হাদিসে ?
২০০১ সাল পর্যন্ত মুসলমানরা ইসলাম সম্পর্কে যা বলেছে, বাকি পৃথিবী তাই বিশ্বাস করেছে। এভাবেই উপরের বহুল প্রচলিত গল্পটি বিশ্বাস না করে কোনো উপায় ছিলো না। কারণ, কোরান হাদিস কারোই পড়া ছিলো না। কিন্তু এখন কোরান হাদিস পড়ে জানা যাচ্ছে উপরোল্লিখিত ইহুদি বুড়ি ও নবীর গল্পটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। কারণ, ৬টি সহীহ হাদিসের বই এবং কোরানে এই ঘটনার কোনো উল্লেখ নেই। শুধু তাই নয়, নবী, ইহুদিদের সাথে যে আচরণ করেছে, তাদের যেভাবে হত্যা করেছে, যেভাবে তাদের জমি বাড়ী দোকান দখল করে তাদেরকে বাস্তুভিটা থেকে উৎখাত করে তাড়িয়েছে, তার প্রত্যেকটি ঘটনা রীতিমতো শিউরে উঠার মতো।
খুব সংক্ষেপে সেগুলোর কয়েকটি বর্ণনা করার আগে মুহম্মদের ইহুদি বিদ্বেষ সংক্রান্ত কয়েকটি হাদিস উল্লেখ করছি : মুসলিম শরীফের ৪৩৬৬ নং হাদিসে আছে,
"একমাত্র মুসলমান ছাড়া ইহুদি খ্রিষ্টান সবাইকে আমি আরব ছাড়া করবো।"
মুসলিম শরীফের ৪৩৬৩ নং হাদিসের বর্ণনা এরকম : "একদিন আল্লাহর রাসূল সঙ্গী সাথীদের নিয়ে ইহুদিদের এলাকায় গিয়ে চিৎকার করে বলতে থাকলেন যে, 'ওরে ইহুদির দল, ইসলাম গ্রহন কর, তাহলে তোদের কোনো বিপদ হবে না।' এ প্রস্তাবে তারা সম্মত না হলে আল্লাহর রাসূল বললেন, 'তোরা হয়তো জানিস না, এই পৃথিবীর মালিক আল্লাহ এবং তার রাসূল এবং আমার ইচ্ছা এই দেশ থেকে তোদের বিদায় করি।"
মৃত্যুর কয়েকদিন আগেও মুহম্মদ বলে গেছে, 'পৌত্তলিকদের আরব থেকে তাড়াও।' এই হাদিসটি আছে মুসলিম শরীফের ৮০১৮ নং এ। এছাড়া মুহম্মদ আরও বলেছে, "আল্লা, ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের ধ্বংস করুন।...ইসলাম ব্যতীত আর কোনো ধর্ম যেন আরবে না থাকে।" এজন্যই আরবের ১০০% মানুষ মুসলমান। সৌদি আরব কাউকে কোনো দিন নাগরিকত্ব দেয় না। অন্য কোনো ধর্ম পালনের অধিকার আরবে নেই এবং সেকারণেই কোনো মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা আরবে নেই। যে ঘটনাগুলোর মাধ্যমে মুহম্মদ এবং তার পরবর্তী খলিফারা আরবকে ১০০% মুসলমানের দেশে পরিণত করে, সে ঘটনাগুলো এরকম :
তিন ইহুদি কবিকে গুপ্ত হত্যা :
মদীনায় হিজরতের পর মুহম্মদের- ডাকাত বাহিনী গঠন ক‘রে, মক্কার কুরাইশদের বাণিজ্য কাফেলার উপর হামলা, লুঠপাট ও তাদের হত্যা করার বিরোধিতা ক‘রে কবিতা লিখে মানুষকে সচেতন করছিলো মহিলা কবি আসমা, কবি আবু আকাফ ও কবি কাব বিন আশরাফ। বদর যুদ্ধে জয়লাভ করার কিছুদিনের মধ্যেই গুপ্ত ঘাতক পাঠিয়ে এই তিনজনকেই নৃশংসভাবে খুন করায় মুহম্মদ।
কানুইকা গোত্রের ইহুদিদের মদীনা থেকে বিতাড়ন :
বাজারের মধ্যে এক মুসলমান মহিলাকে নিয়ে হাসাহাসি করার এক তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে, এক মুসলমান প্রথমে খুন করে এক ইহুদিকে, পরে ইহুদিরা খুন করে ঐ মুসলমানকে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুহম্মদ কানুইকা গোত্রের ৭০০ জন ইহুদিকে মদীনা থেকে তাড়িয়ে দিয়ে তাদের সকল স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি দখল করে।
নাজির গোত্রের ইহুদিদের মদীনা থেকে বিতাড়ন :
একবার এক খুনের ঘটনার আপোষ মীমাংসা করার জন্য মুহম্মদ, মদীনা থেকে ৩ মাইল দূরে নাজির গোত্রের ইহুদিদের বসতিতে গিয়েছিলো। কথা বার্তার মাঝে হঠাৎ ই সে উঠে মদীনায় চলে আসে এবং এভাবে তার চলে আসার কারণ জিজ্ঞেস করলে বলে, ইহুদিরা তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছিলো, এদেরকে উৎখাত করতে হবে। এর পর ২/৩ সপ্তাহ ঐ ইহুদিদের দুর্গ অবরোধ করে থাকার পর, ইহুদিদেরকে তাদের বসতি ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করে এবং তাদের বিশাল উর্বর ভূমি এবং বাড়ি-ঘর মুহম্মদ একাই দখল করে ভোগ করতে শুরু করে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই মুহম্মদ কোরানের ৫৯ নং সূরা ২ থেকে ৯ নং আয়াত ডাউনলোড করে। আমার কথায় সন্দেহ থাকলে কোরান খুলে দেখে নিতে পারেন। এই নাজির গোত্রের ইহুদিরা মদীনা থেকে বিতাড়িত হয়ে মুহম্মদের এলাকার বাইরে খয়বর নামক স্থানে বসতি গড়ে। পরে ওমর খলিফা হয়ে খয়বর থেকেও নাজিরদেরকে আরবের বাইরে বের করে দেয়। কারণ, মুহম্মদের ইহুদি বিদ্বেষ এতই সাংঘাতিক ছিলো যে, মৃত্যু শয্যায়ও সে ইহুদিদেরকে ক্ষমা না করে বলে গেছে, "হে আল্লাহ, আরবে ইসলাম ছাড়া আর যেন কোনো ধর্ম না থাকে।" যে কথা আগেই উল্লেখ করেছি, মুহম্মদের এই কথা স্মরণ করেই ওমর, নাজিরদেরকে আরব থেকে বিতাড়িত করে।
কুরাইজা গোত্রের ইহুদিদের গণহত্যা :
এই ঘটনাটা একটু বিস্তারিত বলা দরকার। তাহলে মুহম্মদ যে কী পরিমান নৃশংস ছিলো তা উপলব্ধি করা যাবে।
মদীনা সনদে সকল ধর্মের লোকেদের মদীনায় বসবাসের সমান অধিকার দিয়ে সকলের সম্মতিতে চুক্তি হওয়ার পরও তুচ্ছ সব ঘটনা নিয়ে মুহম্মদ শুধু ইহুদি কবিদের হত্যা ই নয়, কানুইকা ও নাজির গোত্রের ইহুদিদেরকে, তাদের সকল সম্পত্তি কেড়ে নিয়ে মদীনা থেকে তাড়িয়ে দেয়। এরই প্রেক্ষাপটে খন্দকের যুদ্ধে কুরাইজা গোত্রের ইহুদিরা মক্কার কুরাইশদের পক্ষ নেয়। কিন্তু এই যুদ্ধেও কুরাইশরা, মুসলমানদের ছল-চাতুরি ও ধোকাবাজির জন্য জিততে না পেরে অবশেষে হাল ছেড়ে দিয়ে মক্কায় প্রত্যাবর্তন করে এবং মুহম্মদ তার বাহিনী নিয়ে কুরাইজাদের উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্য মদীনা থেকে ৩ মাইল দক্ষিণ-পূর্বে কুরাইজাদের দূর্গ অবরোধ করে। প্রায় দেড় মাস অবরুদ্ধ থাকার পর কুরাইজারা বলে পাঠায়, তাদের ছেড়ে দিলে, তারাও কানুইকা ও নাজির গোত্রের মতো সকল সম্পত্তি ফেলে খালি হাতে মদীনা ছেড়ে চলে ইচ্ছুক। এরপর কুরাইজারা যখন দূর্গ থেকে বেরিয়ে আসে তখন মুহম্মদের ইচ্ছা অনুসারে তাদের মহিলা-শিশুদের ও পুরুষদের আলাদা করা হয় এবং পুরুষদের পিঠ মোড়া করে বেঁধে ফেলা হয়। মহিলাদের মধ্যে মুহম্মদের চোখ সুন্দরী রিহানার উপর উপর পড়ে এবং মুহম্মদ তাকে তার জন্য আলাদা করে রাখে। আত্মসমর্পনের আগেই কুরাইজারা মুহম্মদের কাছে আবেদন করে জানিয়েছিলো, তারা যদি ভুল করে থাকে তাহলে তাদের বিচারের ভার আউসগোত্রের কাউকে দিয়ে করানো হোক। নবী সঙ্গে সঙ্গে বিচারক হিসেবে আউসগোত্রের সাদ ইবনে মুয়াজ এর নাম প্রস্তাব করে। কারণ, সাদ ইতোমধ্যেই ইসলাম গ্রহন করেছিলো এবং খন্দকের যুদ্ধে কুরাইজারা, কুরাইশদের পক্ষ নেওয়ায়, সাদও কুরাইজাদের উপর ক্ষেপে ছিলো, এসব খবর কুরাইজারা জানতো না, কিন্তু মুহম্মদ ঠিকই জানতো।
ইতোমধ্যে কুরাইজাদের সকল অস্থাবর সম্পত্তি দুর্গের বাইরে এনে স্তুপ করে রাখা হয়েছিলো। একদিকে পিঠমোড়া করে বাঁধা মৃত্যু ভয়ে ভীত ৮০০ পুরুষ, অন্যদিকে ভয়ে ম্লান প্রায় ১২০০ নারী ও শিশু। মাঝখানে গনিমতের মালের স্তুপ। অত্যন্ত বিষাদময় পরিস্থিতি। সবাইকে ঘিরে আছে মুসলমান বাহিনী; তাদের চোখ, নারী শিশু ও গনিমতে মালের উপর। মুহম্মদ, সাদকে তার রায় জানাতে বললো, অন্যদিকে কুরাইজারাও সাদকে, তাদেরকে দয়া করার আবেদন জানিয়ে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে সাদ কুরাইজাদের উদ্দেশ্যে বললো, "আমি যে রায় দেবো, আল্লার রায় বলে তোমরা কি তা মেনে নেবে ?" কুরাইজারা সম্মতি জানালে সাদ বললো, 'আমার রায় হলো, সকল পুরুষদেরকে হত্যা করা হবে, সকল নারী ও শিশুকে ক্রিতদাস হিসেবে বাজারে বিক্রি করা হবে এবং গনিমতের মাল মুসলমানদের মধ্যে বন্টন করা হবে।" মুহম্মদ তৎক্ষণাৎ এই রায়কে সম্পূর্ণ সঠিক বলে ঘোষণা করে বললো, "সপ্তম স্বর্গ থেকে স্বয়ং আল্লাহর বিচারই যে সাদ এর বিচারের মধ্যে দিয়ে প্রকাশিত হয়েছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।"
রায় ঘোষণার পর প্রায় ১২০০ নারী ও শিশুকে আলাদা করে এবং ৮০০ পুরুষকে একটি বড় গুদাম ঘরে বন্দী করে রাখা হলো।
সেই দিন রাতেই মদীনার বাজারে ৮০০ লোককে মাটি চাপা দেবার মতো একটি বিশাল গর্ত খোঁড়া হলো এবং পরদিন ভোর থেকেই শুরু হলো কোতল পর্ব। পিছনে হাত পা বাঁধা অবস্থায় ৫/৬ জন বন্দীকে সেই গুদাম ঘর থেকে বের করে আনা হতে থাকলো এবং আলী ও নবীর আর এক চাচাতো ভাই জুবায়ের তাদের গলা কেটে কেটে সেই গর্তে ফেলতে থাকলো। গুদাম ঘরের বন্দীরা প্রথমে বুঝতেই পারে নি, ৫/৬ জন করে করে তাদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যে ব্যক্তি তাদের ডেকে নিয়ে যাচ্ছিলো, তাকে একজন বৃদ্ধ ইহুদি জিজ্ঞেস করলো, ডেকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছো ? তখন সে বললে, এখনও মাথায় ঢোকেনি ? যাদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে,তারা কি আর ফিরে আসছে ?” তখন তারা হত্যার বিষয়টি বুঝতে পারলো এবং এক অসহায় ক্রন্দনে গুদাম ভরে উঠলো।
এই হত্যাকাণ্ড ভোর থেকে শুরু হয়ে সারাদিন চললো। সন্ধ্যার পর অন্ধকার হয়ে এলেও হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা হলো না, গর্তের চারপাশে মশাল জ্বালিয়ে আলোকিত করা হলো, এভাবে মধ্যরাত পর্যন্ত হত্যাকাণ্ড চলার পর ৮০০ ইহুদির কোতল পর্ব শেষ হলো। এই পুরো ঘটনা মুহম্মদ এক জায়গায় বসে বসে প্রত্যক্ষ করলো।
আমার এই বর্ণনায় কারো যদি সন্দেহ থাকে বুখারি শরীফের ২৬০৩ নং হাদিস এবং মুসলিম শরীফের ৪৩৬৪ নং হাদিস বের করে দেখতে পারেন। আরো সন্দেহ থাকলে কোরানের ৩৩ নং সূরার ২৬ নং আয়াত দেখতে পারেন, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই মুহম্মদ এই আয়াতটি ডাউনলোড করে। এই আয়াতে বলা হয়েছে,
"আহলি কিতাবদের (ইহুদি খ্রিষ্টান) মধ্য যারা এই আক্রমনকারীদের সাহায্য করেছিলো (অর্থাৎ কুরাইশদের) আল্লাহ তাদেরকে তাদের গহ্বর (দুর্গ) হতে উঠিয়ে আনলেন এবং তাদের অন্তরে এমন ভীতির সঞ্চার করে দিলেন যে, আজ তাদের একদলকে (পুরুষদেরকে) তোমরা হত্যা করছো, অপর দলকে ( নারী ও শিশুদেরকে) বন্দী করে নিচ্ছো।"
কোতল পর্ব শেষ হওয়ার পর, পরদিন সকালে গনিমতে মালগুলো চার ভাগে ভাগ করা হলো। জমি-জায়গা বা স্থাবর সম্পত্তি, অস্থাবর সম্পত্তি, গৃহপালিত পশু এবং নারী ও শিশু অর্থাৎ ক্রীতদাস। মুহম্মদ সব ভাগ থেকেই তার ২০% নিয়ে নিলো। মুহম্মদের ভাগে যেসব নারী পড়লো, তাদের মধ্য থেকে সুন্দরী কয়েকজনকে, মুহম্মদ তার ক্লোজফ্রেন্ডদের উপহার দিলো, বাকিদের বিক্রি করার জন্য নেজাদে পাঠিয়ে দিলো। সবচেয়ে সুন্দরী যে মেয়েটি, রিহানা, তাকে তো মুহম্মদ আগেই নিজের জন্য আলাদা করে রেখেছিলো। এই রিহানাকে মুহম্মদ বিয়ে করতে চাইলে রিহানা মুসলমান হতে অস্বীকার করে এবং মুহম্মদকে নাকি চড় মারে , ফলে তাকে মুহম্মদের যৌনদাসী হিসেবেই জীবন কাটাতে হয় এবং নিজ গোত্রের সমস্ত পুরুষকে খুন হতে দেখা রিহানা শোক সইতে না পেরে কয়েক বছর পর যুবতী বয়সেই, মুহম্মদের আগেই মারা যায়। এই গনিমতের মাল সম্পর্কিত একটি আয়াত দেখতে পারেন কোরানের ৩৩ নং সূরার ২৭নং আয়াতে। সেখানে বলা হয়েছে,
"তিনি তোমাদেরকে তাদের যমীন, ঘর-বাড়ি এবং তাদের ধন মালের উত্তরাধিকারী বানিয়ে দিয়েছেন, আর তাদের সেই সব অঞ্চল তোমাদের দিয়েছেন, যেখানে ইতিপূর্বে তোমরা কখনো পদসঞ্চার করো নি।"
এই সব নারী ও শিশুদেরকে আরবের অন্যান্য অঞ্চলে বসবাস কারী ইহুদিরা মানবিকতার দায়ে চড়া দামে কিনে তাদেরকে মুক্ত করে। ফলে এই মানুষ বিক্রি থেকেও মুসলমানরা প্রচুর টাকা আয় করে।
দেখা যাচ্ছে জিহাদে গেলে মুসলমানদের শুধুই লাভ, আর লাভ; একবার আক্রমন করে পরাজিত করতে পারলেই তাদের স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পত্তি লাভ, পরে বন্দী নারী শিশুদেরকে বাজারে দাস হিসেবে বিক্রি করেও লাভ। বিনা পুঁজির এই ব্যবসার একমাত্র আবিষ্কারক, নিঃসন্দেহে, হযরত মুহম্মদ। ইহকালীন লাভ ও পরকালের কল্যানের জন্য, এজন্যেই জিহাদ হচ্ছে, মুসলমানদের কাছে সবচেয়ে পূণ্যময় কাজ এবং বেহেশতে যাওয়ারও সবেচেয়ে সহজ উপায়। কারণ জিহাদকারীর মর্যাদা আল্লা ও নবীর কাছে সর্বোচ্চ।
উকল গোত্রের ৮ ইহুদিকে হত্যা :
একবার উকল গোত্রের ৮ ইহুদি মদীনায় এসে ইসলাম গ্রহন করে। কিন্তু মদীনার আবহাওয়া সহ্য না হওয়ায় তারা অসুস্থ হয়ে পড়লে মুহম্মদ তাদের উটের দুধ ও প্রস্রাব খাওয়ার পরামর্শ দেয় এবং উটের আস্তাবলে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়। কিছুদিন পর তারা সুস্থ হয়ে উঠলে ঐ আস্তাবলের দারোয়ানকে খুন করে কয়েকটি উট নিয়ে পালিয়ে যায়। কয়েকদিনের মধ্যেই মুহম্মদের বাহিনী তাদেরকে ধরে এনে মুহম্মদের সামনে হাজির করে।
চোরের উপর বাটপারি বলে বাংলায় একটা প্রবাদ আছে, কিন্তু ডাকাতের উপর ডাকাতিকে প্রকাশ করার জন্য বাংলায় কোনো প্রবাদ না থাকায়, এখানে সেই উদাহরণটি দিতে পারলাম না।
এই ৮ জন, একজনকে খুন করে উট নিয়ে পালিয়ে নিশ্চয় অন্যায় করেছিলো। কিন্তু মুহম্মদ, যিনি নাকি দয়ার নবী, সেই মুহম্মদ তাদের নিজের হাতে কী রকম নৃশংস শাস্তি দিয়েছিলো, সেটা একবার সেই সময়ে গিয়ে কল্পনার চোখে দেখুন। উপলব্ধি করতে পারবেন, নৃশংসতা কাকে বলে ? এই ঘটনাগুলোর বর্ণনা পাওয়া যাবে মুসলিম শরীফের ৪১৩০ ও ৪১৩৩ নং হাদিসে এবং বুখারী শরীফের ৬৩৩৩ থেকে ৬৩৩৬ নং পর্যন্ত হাদিসে।
মুহম্মদ প্রথমে দুটি লোহার রড চেয়ে নিলো এবং সেগুলোকে তাদের সামনেই আগুনে লাল করে গরম করলো এবং তারপর ৮ জনের চোখেই একের পর এক ঢুকিয়ে দিয়ে তাদের অন্ধ করে দিলো। এরপর একটি ধারালো তলোয়ার দিয়ে তাদের প্রত্যেকের হাত পা কেটে আলাদা করে ফেললো এবং মরুভূমির বালির মধ্যে দুপুরের তপ্ত রোদের মধ্যে ফেলে রাখলো। তারা জল খেতে চাইলেও মুহম্মদ তা কাউকে দিতে নিষেধ করলো , এভাবে পড়ে থেকে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সবাই মারা গেলো।
একজন মানুষ কী পরিমান নিষ্ঠুর হলে এরকম শাস্তি কাউকে নিজ হাতে দিতে পারে, সেটা একবার কল্পনা করুন আর প্রথমেই উল্লেখ করা ইহুদি বুড়ির গল্পের সাথে এই ঘটনার তুলনা করে দেখুন, ঐ রকম দয়ালু লোকের পক্ষে এরকম নিষ্ঠুর হওয়া সম্ভব কি না ? বা এরকম নিষ্ঠুর লোকের পক্ষে ঐ রকম দয়ালু হওয়া সম্ভব কি না ? এই সব নিষ্ঠুরতার পক্ষে হাদিসে কিন্তু সব রকম প্রমান আছে, কিন্তু নবীর ওই দয়ালু চরিত্রের পক্ষের কোনো হাদিস কিন্তু নেই। এই ঘটনাকে জায়েজ করার জন্যই মুহম্মদ কোরানের ৫ নং সূরার ৩৩ নং অয়াত ডাউনলোড করে। আয়াতটির ভাষ্য এরকম :
" যারা আল্লাহ ও তার রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং পৃথিবীতে অশান্তি উৎপাদন করে, নিশ্চয়ই তাদের শাস্তি এই যে, তাদেরকে হত্যা করো কিংবা শুলে বিদ্ধ করো, অথবা তাদের হস্ত ও পদসমূহ বিপরীত দিক হতে কর্তন কর, কিংবা তাদের দেশ হতে বহিষ্কার করো। ইহাই তাদের পার্থিব প্রতিফল এবং পরকালে তাদের জন্য বিষম শাস্তি আছে।"
বস্তুত মুহম্মদের এই নৃশংসতাগুলোকে আড়াল করার জন্যই প্রয়োজন হয়ে পড়েছিলো ঐ রকম দয়ালু নবীর গল্পের। মুহম্মদের চরিত্রের প্রশংসা করার জন্য কোনো কাহিনী বানিয়ে মিথ্যা বললেও তাতে কোনো অপরাধ নেই; কিন্তু বর্তমানে এসব সত্য কথা, যেগুলোর রেফারেন্স হাদিস কোরানে আছে, সেগুলো বলাও মারাত্মক অপরাধ। বর্তমানে- অন্ধ, সীলগালা ও বিৃকত মুসলমানদের কাছে হাদিস কোরানের রেফারেন্সেরও কোনো দাম নেই। এখন তাদের কাছে প্রধান বিবেচ্য হচ্ছে, ইসলাম সম্পর্কে বলা আপনার কোনো কথা, নবীর পক্ষে গেলো, না বিপক্ষে গেলো ? যদি পক্ষে যায়, তাহলে ভালো; আর বিপক্ষে গেলেই আপনার ঘাড়ে চাপাতির কোপ।
এই তরোয়াল আর চাপাতির কোপের ভয়েই মুহম্মদের এই নৃশংসতাগুলো এতদিন চাপা পড়েছিলো, আর মুসলমানরা তা কাউকে কোনো দিন জানতে না দিয়ে নিজেদের ইচ্ছামতো রচনা করেছে মুহম্মদের চরিত্র আর ধোকা দিয়েছে সারা পৃথিবীর মানুষকে। কিন্তু এখন ইন্টারনেট আর ফেসবুকের কল্যানে সেই ধোকাবাজির দিন শেষ হয়েছে। সত্যকে সামনে আনার সময় হয়েছে, সেই সাথে কাউন্ট ডাউন শুরু হয়েছে ইসলামের পতনের। মুসলমানরা ১০% সত্য আর ৯০% মিথ্যা প্রচার করে ইসলামকে টিকিয়ে রেখেছে। এই ৯০% মিথ্যাকে যদি ঠিক মতো প্রচার করা যায়, তাহলে আগামী ১০০ বছরের মধ্যে ইসলামের ধ্বংস অনিবার্য।
ধ্বংস হোক মিথ্যার, জয় হোক সত্যের এবং সকল সনাতনী জানুক ইসলামের এই সব নৃশংস ঘটনা, তারা সচেতন হোক ইসলাম ও মুসলমানদের সম্পর্কে; এই কামনায়-
জয় হিন্দ।
জয় শ্রী রাম। জয় শ্রী কৃষ্ণ।
জয় শ্রী রাম। জয় শ্রী কৃষ্ণ।
শুরুতেই কোরান হাদিস থেকে দুটি রেফারেন্স দিয়েছি, দেখে নিন সেগুলো-
কোরান, ৫/৬৪ = “আমি তোমাদের মধ্যে ও ইহুদিদের মধ্যে কেয়ামত পর্যন্ত শত্রুতি সৃষ্টি করে দিয়েছি।”
“রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, "কিয়ামত সংঘটিত হবে না ততক্ষণ পর্যন্ত, যতক্ষণ না মুসলমানেরা ইহুদীদের সাথে লড়াই করবে। তারা (মুসলমানেরা) ইহুদীদেরকে হত্যা করবে। ইহুদীরা পাথর খণ্ড ও গাছের আড়ালে লুকাবে। তখন পাথর ও গাছগুলি বলবেঃ হে মুসলিম! এই যে ইহুদী আমার পিছনে। এসো, ওকে হত্যা করো।" - (সহীহ মুসলিম, হাদীস- ৮২, কিতাবুল ফিতান; মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদীস- ৫১৪৪)
💜 জয় হোক সনাতনের 💜
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন