ইসলামের ঘরোয়া কাহিনি
5 বছর আগে
ইসলামের ঘরোয়া কাহিনি
ফেসবুক থেকে শেয়ার করেছেন প্রণব কুমার কুণ্ডু
Rupok Roy
বাজারে, মুসলমানদের ওয়াজ মাহফিলের অডিও ভিডিওর কোনো অভাব নেই, সাধারণ লোকজন ইসলামের গোপন ইতিহাস জানে না ব'লে, হুজুরদের বলা ওয়াজ মাহফিলের বক্তৃতাকে সত্য বলে মনে করে, আর মনে করে ইসলাম হইলো গিয়া মহান ও শান্তির ধর্ম! কিন্তু আমার কানে যখন কোনো ওয়াজ মাহফিলের বক্তৃতা আসে, তখন বুঝতে পারি, যা বলছে তার প্রায় সবই মিথ্যা। তারপরও সেই মিথ্যাকে মুখ বন্ধ করে সহ্য করতে হয়। মুসলমানরা তাদের হিংস্রতা দিয়ে এই যে অমুসলিমদের মুখ বন্ধ রাখতে পেরেছে, এটাই হলো ইসলামের সবচেয়ে বড় শক্তি এবং ইসলামি আগ্রাসনের প্রধান ভিত্তি।
বাংলা এলাকায় সুন্নী মুসলমানদের সংখ্যা বেশি; কিন্তু এরা জানে না বা বোঝে না যে, এরা আসলে মুহম্মদের মেয়ে ফাতেমা এবং তার চাচা কাম স্বামী, আলী, যারা ছিলো মুহম্মদের অতি প্রিয়, তাদের বিরোধী শক্তির সমর্থক; কারণ, আলীর সমর্থকরাই শিয়া বলে পরিচিত এবং বাকি মুসলমানরা সুন্নী।
মুহম্মদ তার জীবদ্দশায় যে সন্ত্রাসের রাজত্ব গড়ে তোলে, নিয়তির নির্মম পরিহাসে সেই সন্ত্রাসেরই বলি হয় মুহম্মদের সমগ্র পরিবার, যার প্রথম শিকার ছিলো মুহম্মদের মেয়ে ফাতেমা, মুসলমানরা যাকে আদর করে বলে মা ফাতেমা।
চাল-চুলোহীন দরিদ্র মুহম্মদ, তার ধোকাবাজির ইসলাম থিয়োরির মাধ্যমে, কিছু লোভী-লম্পট ও দরিদ্র বেদুইনকে, জিহাদ করলে গনিমতের মালের নামে ইহকালে নারী দেহ ভোগ ও পরাজিত অমুসলিমদের সম্পদ এবং পরকালে বেহেশতে ৭২ হুরকে অনন্তকাল ধরে দোচার ( প্রথম দুই বর্ণের স্থানান্তর হবে) লোভ দেখিয়ে, দলে টেনে একটি লুটেরা ও ডাকাত দল গঠন করে এবং তাদের লুঠপাট করা সম্পদের ২০% কমিশন খেয়ে আরবের এক শ্রেষ্ঠ ধনী এবং তার জিহাদী অনুসারীদের দ্বারা অসীম ক্ষমতার অধিকারী হয়, কিন্তু মূর্খ মুহম্মদ তার এই অবৈধ সাম্রাজ্যের কোনো উত্তরাধিকারী নির্বাচন করে যায় নি, যার ফলে তার মৃত্যুর পর শুরু হয় ক্ষমতা নিয়ে কোন্দল, ষড়যন্ত্র ও দলাদলি, যার প্রথম শিকার হয় ফাতেমা।
মুহম্মদের মৃত্যুকে মহিমান্বিত করে তোলার জন্য মুসলমানরা যতই আষাঢ়ে গল্প বানাক না কেনো, প্রকৃত সত্য হচ্ছে- বিষে আক্রান্ত হয়ে নিদারুণ কষ্টে ভুগে মুহম্মদের মৃত্যু হয়; আর মুহম্মদের মৃত্যুর সাথে সাথে পরবর্তী খলিফা কে হবে, এই নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে দলাদলি শুরু হয় এবং সহজে কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হতে না পারায়, মুহম্মদের লাশ তিন দিন ধরে পড়ে থাকে; শেষ পর্যন্ত আবু বকর খলিফা নির্বাচিত হয় এবং আবু বকরের মেয়ে আয়েশার ঘরে মুহম্মদকে দাফন করা হয়।
আলী ছিলো মুহম্মদের ভাতিজা এবং ইসলামের পক্ষের একজন শক্তিশালী বীর। এর আগে মুহম্মদ তার চাচাতো বোন উম্মে হানি, যিনি আলীর নিজের বড় বোন এবং আবু তালিবের মেয়ে, মুহম্মদ তাকে বিয়ে করতে চাইলে, রক্তের সম্পর্কের মধ্যে বিয়ে প্রচলিত ছিলো না বলে আবু তালেব তা নাকচ করে দেয় এবং মুহম্মদের কুনজর উম্মে হানির থেকে সরানোর জন্য আবু তালিব তড়িঘড়ি করে দুই বারের বিধবা ৪০ বছর বয়স্কা খাদিজার সাথে মুহম্মদের বিয়ের প্রস্তাবকে স্বীকার করে নিয়ে খাদিজার সাথে মুহম্মদের বিয়ে ঘটিয়ে দেয়, ফলে আবু তালিব মুহম্মদের এক অপছন্দের ব্যক্তিতে পরিণত হয়।
এই আবু তালিবের উপর নীরব প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য মুহম্মদ, আলীকে তার নিজের আদর্শে উদ্বুদ্ধ করে এবং আলী যখন ইসলাম গ্রহণ করে, তখন তাকে নিজের হাতে রাখার জন্য প্রচলিত নীতি রীতিকে উপেক্ষা করে, স্বাভাবিক ভাবে পৃথিবীতে যা কোনো দিন ঘটে নি এবং ভবিষ্যতেও ঘটবে না, তাই ঘটায়, চাচাতো ভাই আলীর সাথে নিজের মেয়ের বিয়ে দিয়ে চাচা ভাতিজির পবিত্র সম্পর্ককে স্বামী-স্ত্রীর অশ্লীল যৌনসম্পর্কে রূপান্তরিত করে।
যা হোক, চাচাতো ভাই কাম জামাই, এই দুই দিক থেকেই আলী ছিলো মুহম্মদের পরিবারের খাস লোক, তাই আলীর এবং ফাতেমার আশা ছিলো, মুহম্মদের মৃত্যুর পর তারাই হবে ইসলামি সাম্রাজ্যের সর্ব ক্ষমতার অধিকারী এবং আলীই হবে খলিফা। কিন্তু অন্যদিকে আবু বকর, মুহম্মদের নবুয়তের শুরু থেকেই ছিলো মুহম্মদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক এবং পরে নিজের বাচ্চা মেয়ে আয়েশাকে মুহম্মদের বিছানায় তুলে দিতে বাধ্য হয়ে হয় মুহম্মদের শ্বশুর; এছাড়াও মুহম্মদের ডাকাত বাহিনী, যাদেরকে মুসলমানরা ভালোবেসে বলে সাহাবী, তাদের মধ্যে আবু বকরই ছিলো সিনিয়র, তাই আবু বকর হয় মুহম্মদ পরবর্তী খলিফা এবং আলী ও ফাতেমা হয়ে যায় আবু বকরের শত্রু। শত্রুর সহজাত বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে ষড়যন্ত্র করা, আলী এবং ফাতেমাও তাই করছিলো আবু বকরের বিরুদ্ধে, এটা বুঝতে পেরে আলীকে শায়েস্তা করার জন্য আবু বকরের নির্দেশে উমর এবং তার অনুসারীরা হামলা করে আলীর বাড়িতে, আলীকে রক্ষা করতে তার সামনে দাঁড়ায় অন্তঃসত্ত্বা ফাতেমা; উমরের এক অনুসারী হামলা করে বসে ফাতেমার উপরই, সাথে সাথে ফাতেমার গর্ভপাত হয়ে যায় এবং তার উরু ভেঙ্গে যায়। এই ঘটনার পর আলীর পরিবার রাজশক্তির চক্ষুশূল হয়ে নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করতে বাধ্য হয় এবং তিন মাস বিছানায় পড়ে থাকার পর শুকিয়ে হাড্ডিসার হয়ে ফাতেমার মৃত্যু হয়। ফাতেমার মৃত্যুর পর আবু বকরের ভয়ে কেউ তাকে দাফন করতে জানাজায় আসে নি, শেষে আলী এবং তার দু্ই ছেলে মিলে ফাতেমার দাফন করে।
অথচ এই সত্যকে চাপা দিয়ে মুসলমানরা ওয়াজে বলে- মৃত্যুর পূর্বে, নবী, ফাতেমাকে বলে গিয়েছিলো, তার অনুসারীদের মধ্যে পরকালে প্রথম যার সাথে সাক্ষাত হবে, সে হবে ফাতেমা। তাই একরাতে ফাতেমা বুঝতে পারে, তার পিতা অর্থাৎ মুহম্মদের সাথে তার সাক্ষাত আসন্ন, এরপর আলী ঘরে এলে ফাতেমা তাকে বলে আজ রাতে আমার মৃত্যু হবে, আমার মতো পর্দানশীল মহিলার লাশ অন্য কেউ দেখবে বা দাফন কালে স্পর্শ করবে, এটা হতে পারে না; তাই আপনি একাই আমার লাশ দাফন করবেন, এমনকি আমার মৃত্যুর পূর্বে আমার দুই ছেলেকেও আপনি ডাক দেবেন না; কারণ, তারা যদি জিজ্ঞেস করে, আমাদের ছেড়ে আপনি কোথায় যাচ্ছেন ? তাহলে তার জবাব আমি দিতে পারবো না। এরপর ফাতেমা মৃত্যু বরণ করে এবং আলী একাই তার লাশ দাফন করে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ঘটনা সম্পূর্ণ উল্টো, উমরের এক অনুসারী, ফাতেমার তলপেটে ও উরুতে আঘাত করলে ফাতেমার গর্ভপাত হয়ে যায় এবং সে অসুস্খ হয়ে শয্যাশায়ী হয় এবং আবু বকরের ভয়ে কেউ ফাতেমার জানাজায় না আসায় আলী ও তার নাবালক দুই ছেলে মিলে ফাতেমার দাফন সম্পন্ন করে, যেটা একটু আগেই বলেছি।
কিন্তু এত তাড়াতাড়ি ফাতেমার যে মরার শখ ছিলো না, তার প্রমান আছে ইসলামের ইতিহাসেই; কেননা, নবীর মৃত্যুর পর আবু বকর খলিফা হলে, ফাতেমা, একটি ফলের বাগান আবু বকরের কাছে চেয়েছিলো, যেটা ছিলো মুহম্মদের- গনিমতের মালের নামে দখল করা- ব্যক্তিগত সম্পত্তি; কিন্তু তার বিরুদ্ধে গোপন ষড়যন্ত্রের সংবাদ পেয়ে আবু বকর, আলী ও ফাতেমার উপর আবু বকর এতটাই ক্ষেপে ছিলো যে, নবীর ব্যক্তিগত সম্পত্তি হলেও সে তা ফাতেমাকে দিতে অস্বীকার করে এবং বলে যে নবীদের কোনো ব্যক্তিগত সম্পত্তি থাকে না। এছাড়াও ফাতেমা যখন মৃত্যু হয়, তখন তার বয়স মাত্র ২৭ (৬০৫-৬৩২ খ্রিষ্টাব্দ) এবং তার দুই ছেলে হাসান ( ৬২৪-৬৭০) ও হোসেনের (৬২৬-৬৮০) বয়স যথাক্রমে মাত্র ৮ ও ৬ বছর এবং তখন ফাতেমার স্বামী আলীর (৬০১-৬৬১) বয়স মাত্র ৩২ বছর; নিজের যুবক স্বামী এবং দুই শিশু পুত্রকে রেখে কোনো নারী কোনো অবস্থাতেই স্বেচ্ছায় মৃত্যুকে স্বীকার করতে পারে না, তাছাড়া ইসলামের ইতিহাসে কারো স্বেচ্ছায় মৃত্যু বরণ করার নজিরও নেই। মুসলমানরা ওয়াজে যেভাবে ফাতেমার মৃত্যুকে বর্ণনা করে, তাতে মনে হয়ে পিতার সাথে দেখা করার জন্য ফাতেমা নিজের ইচ্ছাতেই মৃত্যু বরণ করেছে, কিন্তু বাস্তবে তার মৃত্যু স্বাভাবিকও ছিলো না, ছিলো অপঘাতে মৃত্যু, যার বর্ণনা দুইবার উপরে দিয়েছি।
যা হোক, আবু বকরের সাথে দ্বন্দ্বের ঘটনায় আয়েশাও শত্রু হয়ে যায় ফাতেমার, তাই ফাতেমার মৃত্যুর পর আয়েশাও তাকে আর দেখতে পর্যন্ত যায় নি।
এর আগে ফাতেমা ও আলীর সাথে আবু বকরের সম্পর্ক এমন তিক্ততার পর্যায়ে যায় যে নবীর ব্যক্তিগত সম্পত্তি ‘ফদক’ (ফলের বাগান) কেড়ে নেয়া হয় ফাতেমা কাছ থেকে, যেটা উপরেও উল্লেখ করেছি। এই বাগানটি আসলে ছিল হিজাজের ইহুদীদের শমরুখ দূর্গ দ্বারা সংরক্ষিত যা ইহুদীদের থেকে নবীজি দখল করেছিলো। পরে এটি গণিমতের মাল হিসেবে নবী নিজের ভাগে নেয়। ব্যক্তিগত সম্পত্তি হিসেবে পরে এটি কন্যা ফাতেমাকে দান করে নবী- এমনটাই দাবী হযরত ফাতেমার। কিন্তু সদ্য খলিফা নিযুক্ত হওয়া আবু বকর - নবীদের কোন উত্তোরাধিকার থাকে না- এই যুক্তিতে ফলের বাগানটি রাষ্ট্রয়ত্ব করে নেয়।
যা হোক, আবু বকর মারা যাওয়ার পর উমর এবং তার পরে ওসমান খলিফা হয় এবং শেষে হয় খলিফা হয় আলী। কিন্তু আবু বকরের মেয়ে হওয়ায় আয়েশার সাথে আলীর শত্রুতা শেষ হয় না, ইসলামি সম্রাজ্যের শাসন ক্ষমতা নিজের কব্জায় রাখার জন্য, আয়েশা, আলীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে, এই যুদ্ধ ‘জামাল ই জঙ’ নামে পরিচিত এবং এতে প্রায় ৫০ হাজার মুসলমান মারা যায়। কথিত আছে, ‘জামাল ই জঙ’ বা উটের যুদ্ধে, যুদ্ধক্ষেত্রে রক্ত পড়ে পড়ে এত পিছলা হয়ে গিয়েছিলো যে, লোকজন তার উপর হেঁটে যেতে পারছিলো না।
এছাড়াও প্রচন্ড ক্ষমতালোভী আয়েসা বার বার বিদ্রোহের চক্রান্ত করতে থাকে । আলীর পর ইসলামি সম্রাজ্যের খলিফা হয় মুয়াবিয়া, খলিফা হয়েই আয়েশার ক্ষমতা লিপ্সাকে চিরতরে ধ্বংস করার জন্য মুয়াবিয়া এক প্ল্যান করে, শলা পরামর্শ বা সন্ধির জন্য আয়েশাকে মন্ত্রনায় ডেকে ঘরের মেঝেতে কূপ খুঁড়ে রাখে, সেই কুপে গাঁথা ছিল ধারালো তলোয়ার, কূপটি ছিলো কার্পেটে ঢাকা, আয়েসা ঘরে ঢুকতেই সেই কূপে পড়ে তার দেহ টুকরো টুকরো হয়ে যায়। তারপর সেই লাশের টুকরাগুলো কোথাও নিয়ে গিয়ে মাটি চাপা দেয়, এজন্য আয়েশার কোনো কবর সৌদি আরবের কোথাও পাওয়া যায় না।
সব মিলিয়ে আয়েশা এক ভাগ্যহীনা নারীর নাম, যার ছয় বছর বয়সে ৫২ বছরের বুড়ার সাথে বিয়ে হয়েছে, ৯ বছর বয়সে ৫৫ বছরের সেই বুড়ো মুহম্মদের দ্বারা ধর্ষিতা হয়েছে। তারপর যখন তার ভরা যৌবন, সেই ১৮ বছর বয়সে সে বিধবা হয়েছে। এমনকি মুহম্মদ যেহেতু কোরানের আয়াত দিয়ে নবীর সকল স্ত্রীকে মুসলমানদের মা হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে এবং নবীর মৃত্যুর পর তাদেরকে বিয়ে করা কোনো মুসলমানের জন্য জায়েজ নয় বলে ঘোষণা দিয়ে গেছে, সেহেতু আয়েশাকে কোনো মুসলমান বিয়ে করতে সাহস পায় নি, তাই মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আয়েশাকে যৌন যন্ত্রণাময় এক বিধবার জীবন যাপন করে যেতে হয়েছে।
মুসলমানরা এসব ইতিহাসের কিছু না জেনে, নবীর প্রিয় স্ত্রীর নামে নিজেদের মেয়েদের নাম রাখে আয়েশা। কিন্তু তারা যদি আয়েশার জীবনের প্রকৃত ঘটনা জানতো, তাহলে তারা কখনোই নিজেদের মেয়েদের নাম আয়েশা তো রাখতে পারতোই না, এই নামটাকে ঘৃণা না করলেও এড়িয়ে চলতো। আয়েশার জীবনের প্রকৃত ঘটনা আমি জানি ব’লে, যখনই কোনো মুসলমান মেয়ের নাম শুনি আয়েশা, তখনই আমার মনে হয়, আয়েশার মতো দুর্ভাগ্যের জীবন যদি তোর হয়, তখন বুঝবি যন্ত্রণা কাকে বলে, আর নবীর স্ত্রীর নামে নাম রাখার মজা হাড়ে হাড়ে নয় কোষে কোষে টের পাবি।
একই কথা প্রযোজ্য ফাতেমার বেলায়ও। আগেই বলেছি ফাতেমার জীবনীকাল মাত্র ২৭ বছর। ফাতেমা যেহেতু ছিলো খাদিজার মেয়ে এবং খাদিজার যেহেতু ধন-সম্পদ ছিলো, সেহেতু ফাতেমার শৈশব কাল বেশ ভালোই কেটেছে, কিন্তু ৬২২ খ্রিষ্টাব্দে মুহম্মদ, মক্কা থেকে মদীনায় পালাতে বাধ্য হলে ফাতেমাও মদীনায় চলে যায়, সেখানে তাকে যথেষ্ট দারিদ্রতাকে ভোগ করতে হয়েছে; একটা হাদিসে পড়েছিলাম, ফাতেমা তার বাপ মুহম্মদকে বলছে, সে গত দুই দিন ধরে কিছু খায় নি, জবাবে মুহম্মদ বলছে, সে গত তিন দিন ধরে কিছু খায় নি। কিন্তু মদীনায় পলায়নের বছর খানেকের মধ্যেই মুহম্মদ তার ডাকাত বাহিনী গঠন করে কোরাইশদের বাণিজ্য কাফেলায় হামলা শুরু করে লুঠপাট করা আরম্ভ করে, এর ফলে মুহম্মদ ও মুসলমানদের দারিদ্রতা দূর হতে শুরু করে।
ফাতেমা একদিক থেকে বেশ সৌভাগ্যের অধিকারিণী, কারণ তার কোনো সতীন ছিলো না এবং তাকে সতীনের কোনো জ্বালা যন্ত্রণা ভোগ করে স্বামীকে ভাগ করতে হয় নি। এর কারণ ছিলো মুহম্মদের প্রতি আলীর ভয়। মুহম্মদসহ সব মুসলমানকে একের পর এক বিয়ে করতে দেখে, একবার আলীরও শখ হয় একটা বিয়ে করার। এই খবর যায় মুহম্মদের কানে, মুহম্মদ কঠোর ভাষায় বলে, যদি আলীর শখ হয় আরেকটি বিয়ে করার, তাহলে যেন সে আগে ফাতেমাকে তালাক দিয়ে দেয়; কারণ, ফাতেমার কষ্ট মানে আমার কষ্ট, আর সেটা আমি কখনোই মেনে নেবো না। এই হুমকি পেয়ে আলী, দ্বিতীয় বিয়ে করার পরিকল্পনাকে ত্যাগ করে।
এখানে আমার প্রশ্ন হচ্ছে, যে মুহম্মদ নিজের মেয়ের সতীনকে সহ্য করতে পারে নি, সে একের পর এক বিয়ে করে তার স্ত্রীদেরকে নরক যন্ত্রণায় ফেলেছে কেনো ? বা মুসলমানদের এক সাথে চার স্ত্রী রাখার অধিকার দিয়ে অন্য মুসলিম নারীদেরকে সতীনের সংসারের নরক যন্ত্রণার বিধান দিয়েছে কেনো ?
কথায় বলে, সব ভালো তার শেষ ভালো যার, ফাতেমার প্রথম জীবন ভালো কাটলেও শেষ ভালোর সূত্রে ফাতেমার জীবন মোটেই ভালো ছিলো না; কারণ, হাসান হোসেনের জন্মের পর তৃতীয় সন্তান গর্ভে থাকাকালীন ফাতেমার উপর হামলা হয়, তাতে তার গর্ভপাত হয় এবং উরু ভেঙ্গে গিয়ে দীর্ঘ তিন মাস শয্যাশায়ী থাকার পর চিকিৎসা বিহীন অবস্থায় শুকিয়ে হাড্ডিসার হয়ে ফাতেমার মৃত্যু হয়, যে কথা উপরে বলেছি। এই ফাতেমা নাকি আবার ‘খাতুনে জান্নাত’ মানে ‘বেহেশতি নারীদের সর্দার’। ভালো ব্যাপার। বেহেশত তো আল্লার পতিতালয়, আর পতিতালয়ের সব মেয়েই তো হয় পতিতা, সেই হিসেবে ফাতেমাও পতিতা, সমস্যা নাই। মুসলমানদের যত ইচ্ছা হয় তত বলুক ‘খাতুনে জান্নাত ফাতেমা’, যার মানে- ফাতেমা হলো ‘পতিতাদের সর্দারনী’।
শুধু আয়েশা এবং ফাতেমার করুণ মৃত্যুই নয়, আবু বকর ছাড়া মুহম্মদসহ অন্য তিন খলিফার মুত্যু হয়েছে অপঘাতে, মুহম্মদ মরেছে বিষে আক্রান্ত হয়ে, আর অন্য তিন খলিফা মরেছে নিজেদের মধ্যে কোন্দলের শিকার হয়ে ছুরিকাঘাতে। এছাড়াও নবীর নাতি হাসান মরেছে বিষ প্রয়োগে এবং হোসেন মরেছে এজিদের হাতে নৃশংসভাবে কারবালার প্রান্তরে। আর মুহম্মদ ছাড়া এরা সবাই মরেছে মুসলমানদের হাতেই, তার মানে ইসলামি দুনিয়ায় শান্তি কখনোই ছিলো না আর পুরোনো আদর্শ অনুসরণ করে এখনও নেই; তারপরও মিথ্যার ব্যবসায়ী মুসলমানরা রাত দিন চিৎকার করে বলে যাচ্ছে- ইসলাম শান্তির ধর্ম! ইসলাম শান্তির ধর্ম!!
আসলে এই মুসলমানদের পাছায় গরম রড ঢুকিয়ে দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়া দরকার যে, আসলে শান্তি কাকে বলে এবং শান্তি মানে প্রকৃতপক্ষে কী, যেমন দিয়েছে বা দিচ্ছে রোহিঙ্গা মুসলমানদেরকে মায়ানমারের বৌদ্ধরা।
জয় হিন্দ।
-------------------------
ফাতেমা এবং আয়েশা সংক্রান্ত যে নতুন তথ্যগুলো এই পোস্টে দিয়েছি, সাধারণত বাংলায় এগুলো প্রচলিত নয়; কারণ, এখানের সুন্নী মুসলমানরা কৌশলে তাদের বক্তৃতা বিবৃতিতে এগুলোকে এড়িয়ে চলে বা ঢেকে রাখে, কিন্তু এই তথ্যগুলো পাওয়া যায় শিয়া লেখকদের বইয়ে, সেরকম কিছু রেফারেন্স দিলাম নিচে, যার উপর ভিত্তি করে উপরের লেখাটা লিখেছি:
ইবনে শাহর অশুব (মৃ: ৫৯৯ হি.) বর্ণনা করেছেন :
“উম্মে সালমা ফাতেমার ঘরে প্রবেশ করে বলল : ওহে নবী কন্যা! কিভাবে রাত কাটালেন। ফাতেমা বললেন : শোক ও দুঃখ-ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে রাত কাটিয়েছি। শোক এই কারণে যে, প্রিয় নবীকে হারিয়েছি ও দুঃখ এই জন্য যে, তাঁর স্থলাভিষিক্তের উপর আরোপিত জুলুম। আল্লাহর কসম করে বলছি: এতে নবীর উত্তরসূরীর প্রতি অবমাননা হয়েছে (মানাকিবু অলে আবি তালিব, ২/২০৫।)।
এর মানে হলো- আলীর স্থলে আবু বকর খলিফা নির্বাচিত হওয়ায় ফাতেমা দুঃখ পেয়েছে।
আল্লামা তাবারসি (মৃ: ষষ্ট হিজরি) বর্ণনা করেছিন:
ফাদাকের (ফলের বাগান) খোৎবা সমাপ্তির পর ফাতেমা বলেছিলেন :
لَیتَنِی مِتُّ قَبلَ هینَـتِی وَ دُونَ ذِلَّتِی...
হায়, যদি এমন জুলুমের স্বীকার হবার পূর্বে মারা যেতাম! (এহতিজাজ, খন্ড ১, পৃ ১০৭)।
কাজি নোমানি মাগরিবি বর্ণনা করেছেন :
[عَن أبِی عَبدِاللهِ جَعفَرِبنِ مُحَمَّدٍ الصادِقِعلیهالسّلام عَن أبِیهِعلیهالسّلام: قالَ:]
إنَّ رَسُولَ اللهِصلّیاللهعلیهوآله أسَرَّ إلی فاطِمَةَعلیهاالسّلام أنَّها أولی(أوَّلُ) مَن یَلحَقُ بِهِ مِن أهلِ بَـیتِهِ فَلَمّا قُبِضَ وَ نالَها مِن القَومِ ما نالَها لَزِمَت الفِراشَ وَ نَحَلَ جِسمُها وَ ذابَ لَحمُها وَ صارَت کَالخَیالِ. *
ইমাম জাফর সাদিক আ. তাঁর পিতার কাছ থেকে বর্ণনা করেছেন : রাসূল স. ফাতেমাকে চুপিসারে বললেন : তাঁর ওফাতের পর তার আহলে বাইতের মধ্য থেকে সর্ব প্রথম যে তাঁর সাথে গিয়ে মিলিত হবে, সে হল ফাতেমা আ.। অতঃপর যখন নবী স. মৃত্যু বরণ করলেন এবং তার ঘরে হামলা করে তাকে আহত করা হল, তখন তিনি শয্যাশায়ী হয়ে গেলেন, ক্রমশ দূর্বল হয়ে পড়লেন ও এমন ভাবে শুকিয়ে গেলেন যেন মনে হয়েছিল শুকনো কাঠি হয়ে গেছেন (দায়ায়িমুল ইসলাম, ১/২৩২)।
শেখ তুসি বর্ণনা করেন :
وَ المَشهُورُ الَّذِی لاخِلافَ فِیهِ بَـینَ الشِیعَةِ أنَّ عُمَرَ ضَرَبَ عَلی بَطنِها حَتّی أسـقَطَت...
শিয়াদের মধ্যে এ বিষয়ে প্রসিদ্ধি রয়েছে ও কোনরূপ মতপার্থক্য নেই যে, ফাতেমার পেটে ওমর এমন আঘাত হেনেছিল যে কারণে গর্ভের সন্তান পড়ে যায় (তালখিছুশ শাফি, ৩/১৫৬)।
মুহাম্মদ ইবনে জারির ইবনে রুস্তম তাবারি (মৃ: চতূর্থ হিজরি) বর্ণনা করেন:
فَلَمّا قُبِضَ رَسُولُ اللهِصلّیاللهعلیهوآله وَ جَری ما جَری فِی یَومِ دُخُولِ القَومِ عَلَیها دارَها وَ إخراجِ ابنِ عَمِّها اَمِیرِالمُؤمِنِینَ علیهالسّلام وَ ما لَحِقَها مِن الرَجُلِ أسـقَطَت بِهِ وَلَداً تَماماً وَ کانَ ذلِکَ أصلَ مَرَضِها وَ وَفاتِها.
নবী স. যখন মারা গেলেন, তারপর যেদিন ফাতেমার ঘরে হামলার ঘটনা ঘটল, আমিরুল মুমিনিনকে জোরপূর্বক বের করে আনা হল এবং ঐ পুরুষের দ্বারা যে বালা ফাতেমার উপর আসল, যে কারণে তাঁর গর্ভের পূর্ণ ছেলে-সন্তানের গর্ভপাত ঘটল। আর এটাই ছিল তাঁর অসুস্থতা ও মৃত্যুর মূল কারণ (দালায়েল উল ইমামাহ/২৭)।
আল্লামা হিল্লি (মৃ: ৭২৬ হি.) বর্ণনা করেন,
وَ ضُرِبَت فاطِمَةُعلیهاالسّلام فَألقَت جَنِیناً اسمُهُ مُحسِنٌ...
ফাতেমাকে আ. এমন আঘাত হানা হল, যে কারণে তার গর্ভের সন্তান ‘মোহসেন’ পড়ে গেল ... (শারহুত তাজরিদ/৩৭৬)।
মুহাম্মদ ইবনে জারির ইবনে রুস্তম তাবারি (মৃ: চতূর্থ হিজরি) বর্ণনা করেন:
[عَن أبِیبَصِیرٍ عَن أبِی عَبدِاللهِعلیهالسّلام: قالَ:]
وَ کانَ سَبَبُ وَفاتِها أنَّ قُنفُذاً مَولی عُمَرَ لَکَزَها بِنَعلِ السَیفِ بِأمرِهِ، فَأسـقَطَت مُحسِناً وَ مَرِضَت مِن ذلِکَ مَرَضاً شَدِیداً...
ইমাম আবু আব্দিল্লাহের কাছ থেকে আবু বাছির বর্ণনা করেছেন : ওমরের নির্দেশে তার ভৃত্য ‘কুনফুয’ তরবারির গিলাফ দিয়ে ফাতেমাকে আঘাত হেনেছিল, যে কারণে মুহসিনের গর্ভপাত ঘটে এবং সে কারণেই ফাতেমা আ. মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন… (দালায়েল উল ইমামাহ/৪৫)।
কাফয়ামি (মৃ: ৯০৫ হি.) বর্ণনা করেছেন :
إنَّ سَبَبَ وَفاتِهاعلیهاالسّلام هُوَ أنَّها ضُرِبَت وَ أسـقَطَت.
নিশ্চয় ফাতেমার মৃত্যুর কারণ হল: তিনি আঘাত প্রাপ্ত হলেন ও তাতে গর্ভপাত হল (মেসবাহ/৫২২)।
তাবারসি বর্ণনা করেন :
وَ حالَت فاطِمَةُعلیهاالسّلام بَـینَ زَوجِها وَ بَـینَهُم عِندَ بابِ البَیتِ فَضَرَبَها قُنفُذٌ بِالسَوطِ عَلی عَضُدِها، فَبَـقِیَ أثَرُهُ فِی عَضُدِها مِن ذلِکَ مِثلَ الدُملُوجِ مِن ضَربِ قُنفُذٍ إیّاها فَأرسَلَ أبوبَکرٍ إلی قُنفُذٍ إضرِبها، فَألجَـأها إلی عِضادَةِ بَـیتـِها، فَدَفَعَها فَکَسَرَ ضِلعاً مِن جَنبِها وَ ألقَت جَنِیناً مِن بَطنِها، فَلَم تَزَل صاحِبَةَ فِراشٍ حَتّی ماتَت مِن ذلِکَ شَهِیدَه ...
হযরত ফাতেমা তাঁর স্বামি ও আক্রমনকারী ব্যক্তিদের মাঝে দাড়িয়ে প্রতিরোধ করেছিলেন, তখন ‘কুনফুয’ ফাতেমার উরুতে এমন আঘাত হানল যে, তার দাগ বেন্ডেজের আকার ধারণ করল। আবুবকর কুনফুযকে ফাতেমাকে মারার জন্য পাঠিয়েছিল! তাই কুনফুয ফাতেমাকে ঘর থেকে আছার দিয়ে ফেলে দিল, তখন তাঁর উরুর হাড় ভেঙ্গে গেল ও পেটের সন্তানের গর্ভপাত ঘটল। অতঃপর দীর্ঘ শহ্যাশায়ী হল এবং সে অবস্থাতেই শহীদি মৃত্যু বরণ করলেন …(এহতেজাজ, ১/৮৩)।
--------------------------------------------------------------------------------------
প্রথম বার যখন লেখাটা পোস্ট করি, তখন এক পাঠক নিচের এই কমেন্টটি করেছিলো, যাতে পাবেন, আরও কিছু তথ্য :
আবু বকরের সাথে আলির (বরং মহম্মদের বলাই ভাল) শত্রুতার আরও গভীর কারণ ছিল। নারী সম্ভোগের ক্ষেত্রে মহান আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের জন্য উদার ও প্রশস্ত ব্যবস্থা করার পরে মহম্মদের বাল্যবন্ধু ও সহচর আবু বকর মহম্মদের যুবতী কন্যা ফাতেমাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন। আবু বকরের এই ধৃষ্টতা সম্ভবত নবীজি মেনে নিতে পারেন নি। কিন্তু সেটা প্রকাশ না করে তিনিও পাল্টা প্রস্তাব দেন আবু বকরের ছ’বছর বয়সী শিশুকন্যা আয়েশাকে বিয়ে করার। যুবতী ফাতেমার প্রতি আবু বকর এতটাই কামাসক্ত হয়ে পরেছিলেন যে নিজের শিশুকন্যা আয়েশাকে পর্যন্ত বলি দিতে সে রাজী হয়ে গেলেন। মহান খোদার অপার মহিমায় দুই বাল্যবন্ধু সমঝতা করেন যে তাঁরা পরস্পর পরস্পরের মেয়েকে বিয়ে করবেন ! অতি সত্বর নবীজির সাথে ছ’বছর বয়সী শিশু আয়েশার শাদি মুবারক সুসম্পন্ন হল। এবার আবু বকর ফাতেমাকে বিয়ে করার জন্য তাগাদা দিতে থাকল। “এখনও আল্লার নির্দেশ পাইনি” বলে মুহম্মদ আবু বকরকে বার বার ফেরাতে থাকেন। এই করতে করতেই হঠাৎ এক সময় নিজের চাচাত ভাই আলির সাথে ফাতেমার বিয়ে দিয়ে দিলেন। মহান নবীর এই ‘পবিত্র প্রতারণা’ সেই সময় হজম করা ছাড়া আবু বকরের আর কোনও উপায় ছিল না। তাই মহম্মদের মৃত্যুর পরে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করেছিলেন।
From: Krishna kumar das
জয় হোক সনাতনের
শেয়ার করুন
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন