রবিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

কুমারী পূজা


কুমারী পূজা



প্রণব কুমার কুণ্ডু





 







  কুমারী পূজা

  ফেসবুক থেকে      শেয়ার করেছেন       প্রণব কুমার কুণ্ডু


রানা চক্রবর্তী গোষ্ঠীটিতে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন: ইতিহাসের বিভিন্ন তথ্য


কুমারী পূজার ইতিবৃত্ত: কুমারী পূজা কি? কেন করা হয়? শাস্ত্র, পুরাণ ও প্রাচীন গ্রন্থে কুমারী পূজার ব্যাখ্যা, স্বামী বিবেকানন্দের কুমারী পূজার ইতিহাস এবং কুমারী পূজার দার্শনিক তত্ব:

(তথ্যসূত্র:
শ্রীশ্রীচণ্ডী, অনুবাদ ও সম্পাদনাঃ স্বামী জগদীশ্বরানন্দ, উদ্বোধন কার্যালয়, কলকাতা।
পূজা-বিজ্ঞান, স্বামী প্রমেয়ানন্দ, উদ্বোধন কার্যালয়, কলকাতা
পৌরাণিকা : বিশ্বকোষ হিন্দুধর্ম (প্রথম খণ্ড অ-ন), অমলকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, ফার্মা কেএলএম প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা।
সাধন-সমর, ব্রহ্মর্ষি শ্রীসত্যদেব, সাধন-সমর কার্যালয়।
স্বামী বিবেকানন্দ রচনাবলী, উদ্বোধন কার্য্যালয়, কলকাতা।)



রানা চক্রবর্তী  কুমারী পূজা কি? কেন করা হয়? শাস্ত্র, পুরাণ ও প্রাচীন গ্রন্থে কুমারী পূজার ব্যাখ্যা, স্বামী বিবেকানন্দের কুমারী পূজার ইতিহাস এবং কুমারী পূজার দার্শনিক তত্ব: 


বিবেকানন্দের কুমারী পূজার ইতিহাস এবং পূজার দার্শনিক তত্ত্ব:ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণ বলেছেন,- “ দিব্যচক্ষু চাই। মন শুদ্ধ হলেই সেই চক্ষু হয়। দেখনা কুমারীপূজা। হাগা-মোতা -মেয়ে, তাকে ঠিক দেখলুম সাক্ষাৎ ভগবতী।” তিনি আরও বলেছেন,- “সারদা মা কে কুমারীর ভিতর দেখতে পাই বলে কুমারীপূজা করি।” কুমারী হল শুদ্ধ আধার।কুমারী পূজা হলো তন্ত্রশাস্ত্রমতে অনধিক ষোলো বছরের অরজঃস্বলা কুমারী মেয়ের পূজা। বিশেষত দুর্গাপূজার অঙ্গরূপে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও কালীপূজা, জগদ্ধাত্রীপূজা এবং অন্নপূর্ণা পূজা উপলক্ষে এবং কামাখ্যাদি শক্তিক্ষেত্রেও কুমারী পূজার প্রচলন রয়েছে।প্রতিবছর দুর্গাপূজার মহাষ্টমী পূজার শেষে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয় তবে মতান্তরে নবমী পূজার দিনও এ পূজা অনুষ্ঠিত হতে পারে।সূদূর অতীত থেকেই কুমারী পূজার প্রচলন ছিলো এবং তার প্রমাণ পাওয়া যায় "কুমারীপূজাপ্রয়োগ" গ্রন্থের পুথি থেকে।


● বর্ণনা: যোগিনীতন্ত্র, কুলার্ণবতন্ত্র, দেবীপুরাণ, স্তোত্র, কবচ, সহস্রনাম, তন্ত্রসার, প্রাণতোষিণী, পুরোহিতদর্পণ প্রভৃতি ধর্মীয় গ্রন্থে কুমারী পূজার পদ্ধতি এবং মাহাত্ম্য বিশদভাবে বর্ণিত হযে়ছে। বর্ণনানুসারে কুমারী পূজায় কোন জাতি, ধর্ম বা বর্ণভেদ নেই। দেবীজ্ঞানে যে-কোন কুমারীই পূজনীয়, এমনকি বেশ্যাকুলজাত কুমারীও। তবে সাধারণত ব্রাহ্মণ কুমারী কন্যার পূজাই সর্বত্র প্রচলিত। এক্ষেত্রে এক থেকে ষোলো বছর বয়সী যে কোনো কুমারী মেযে়র পূজা করা যায়। বয়সের ক্রমানুসারে পূজাকালে এই সকল কুমারীদের বিভিন্ন নামে অভিহিত করা হয়।


১) এক বছরের কন্যা — সন্ধ্যা। 
২) দুই বছরের কন্যা — সরস্বতী।
৩) তিন বছরের কন্যা — ত্রিধামূর্তি।
৪) চার বছরের কন্যা — কালিকা।
৫) পাঁচ বছরের কন্যা — সুভগা।
৬) ছয় বছরের কন্যা — উমা।
৭) সাত বছরের কন্যা — মালিনী।
৮) আট বছরের কন্যা — কুষ্ঠিকা।
৯) নয় বছরের কন্যা — কালসন্দর্ভা।
১০) দশ বছরের কন্যা — অপরাজিতা।
১) এগারো বছরের কন্যা — রূদ্রাণী।
১২) বারো বছরের কন্যা — ভৈরবী।
১৩) তেরো বছরের কন্যা — মহালক্ষ্মী।
১৪) চৌদ্দ বছরের কন্যা — পীঠনাযি়কা।
১৫) পনেরো বছরের কন্যা — ক্ষেত্রজ্ঞা।
১৬) ষোলো বছরের কন্যা — অন্নদা বা অম্বিকা।
● কুমারী পূজা বিষয়ে বিভিন্ন শাস্ত্রীয় ও পৌরাণিক ধারনা: বৃহদ্ধর্মপুরাণের বর্ণনা অনুযায়ী দেবতাদের স্তবে প্রসন্ন হয়ে দেবী চণ্ডিকা কুমারী কন্যারূপে দেবতাদের সামনে দেখা দিয়েছিলেন। দেবীপুরাণে বিস্তারিত এ বিষয় উল্লেখ আছে। তবে অনেকে মনে করেন যে, দুর্গা পূজায় কুমারী পূজা সংযুক্ত হয়েছে তান্ত্রিক সাধনামতে। এক সময় শক্তিপীঠ সমূহে কুমারী পূজার রীতি প্রচলিত ছিল। শ্বেতাশ্বতর উপনিষদেও কুমারীর কথা উল্লেখ আছে। আর এ থেকে অনুমান করা কঠিন নয় যে, দেবীর কুমারী নাম অনেক পুরনো। দেবীর কুমারী নাম যেমন পুরনো, তার আরাধনা ও পূজার রীতিনীতিও তেমনি প্রাচীন এবং ব্যাপক। যোগিনীতন্ত্রে কুমারী পূজা সম্পর্কে উল্লেখ আছে ব্রহ্মাশাপবশে মহাতেজা বিষ্ণুর দেহে পাপ সঞ্চার হলে সেই পাপ থেকে মুক্ত হতে হিমাচলে মহাকালীর তপস্যা শুরু করেন। বিষ্ণুর তপস্যায় মহাকালী খুশি হন।দেবীর সন্তোষ মাত্রেই বিষ্ণুর পদ্ম হতে সহসা 'কোলা' নামক মহাসুরের আবির্ভাব হয়। সেই কোলাসুর ইন্দ্রাদি দেবগণকে পরাজিত করে অখিল ভূমণ্ডল, বিষ্ণুর বৈকুণ্ঠ এবং ব্রহ্মার কমলাসন প্রভৃতি দখল করে নেয়।তখন পরাজিত বিষ্ণু ও দেবগণ 'রক্ষ' 'রক্ষ' বাক্যে ভক্তিবিনম্রচিত্তে দেবীর স্তব শুরু করেন। বিষ্ণু ও আদি দেবগণের স্তবে সন্তুষ্টা হয়ে দেবী বলেন“হে বিষ্ণু! আমি কুমারীরূপ ধারণ করে কোলানগরী গমন করে কোলাসুরকে সবান্ধবে হত্যা করিব।” অতঃপর তিনি কোলাসুরকে বধ করলে-সেই থেকে দেব-গন্ধর্ব, কিন্নর-কিন্নরী, দেবদেবীগণ সকলে সমবেত হয়ে কুসুম-চন্দন-ভারে কুমারীর অর্চনা করে আসছেন।
পুরাণে আছে, ব্রহ্মার নির্দেশানুসারে শ্রীরামচন্দ্র দেবীপূজার আয়োজন করলেন। কিন্তু দেবী কি তখন জাগ্রত না নিদ্রিত? দেবী কি এখন আবির্ভূত হতে প্রস্তুত। তাই ধ্যানে খোঁজ নিলেন যে দেবী এখন কোথায় আছেন? ধ্যানমানসে উদ্ভাসিত হলেন দেবী এবং জানতে পারলেন যে, দেবী তখন কুমারীরূপে শায়িত আছেন বিল্বশাখায়। স্রষ্টা ব্রহ্মার নির্দেশ অনু্যায়ী শ্রীরামচন্দ্র শুক্লা ষষ্ঠীর সকালে কল্পারম্ভ এবং সন্ধ্যায় বিল্ব বৃক্ষমূলে শুরু করলেন দেবীর বোধন। ষষ্ঠীতে বোধিত হলেন দেবী। সপ্তমীতে ষোড়শোপচারে দেবীকে পূজা করলেন শ্রীরামচন্দ্র; কিন্তু তখন পর্যন্ত দেবীর কোন সাড়াশব্দ পাওয়া গেল না। তখন অষ্টমী তিথিতে সকল যোগিনীদের ডেকে আবার সমস্ত পূজা-অর্চনা করে আরাধনা করা হল দেবীকে। দেবী তখনও কোন সাড়া দিলেন না। আগত যোগিনীদের হৈ-চৈ-তে দেবী তখন কেবল একটু নড়ে চড়ে পাশ ফিরে শয়ন করলেন। কিন্তু জাগ্রত হলেন না। তখন অষ্টমীর শেষ এবং নবমীর শুরুতে মহা সন্ধিক্ষণে করলেন দেবীর আবার বিশেষ পূজা। যাকে বলা হয় সন্ধিপূজা। অষ্টমীর ২৪ মিনিট এবং নবমীর ২৪ মিনিট নিয়ে মোট ৪৮ মিনিটের পূজা হল সন্ধিপূজা। সন্ধিপূজা হল দেবী চামুন্ডার বিশেষ পূজা। শ্রীরামচন্দ্র তখন চামুন্ডা দেবীকে আবাহন করে বললেন-যেভাবেই হোক দেবী দুর্গাকে জাগাতে হবে। চামুন্ডার সহযোগীতায় দেবী তখন জেগে উঠলেন নবমী তিথিতে। শ্রীরামচন্দ্র দেবীকে যোগিনীদের সঙ্গে বিশেষ পূজা করলেন। এবং দেবীকে দর্শন করলেন কুমারীরূপে। সেই থেকে কুমারীরূপী দেবীপূজা শুরু। শ্রীরামচন্দ্র দেবী দুর্গাকে একসঙ্গে একশ আটটি নীলপদ্ম অঞ্জলি দিলেন এবং দেবী নবমীর দিন কুমারীরূপে পূজিতা হলেন।
মহাভারত অনুসারে, বাসুদেব শ্রীকৃষ্ণের নির্দেশে তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুন কুমারী পূজা করেন। শ্বেতাশ্বর উপনিষদেও কুমারী পূজার উল্লেখ পাওয়া যায়। এছাড়া প্রাচীন শাস্ত্র ও গ্রন্থ থেকে নেপাল, ভুটান ও সিকিমেও কুমারী পূজার উল্লেখ পাওয়া যায়।

● স্বামী বিবেকানন্দের কুমারী পূজার ইতিহাস: স্বামী বিবেকানন্দ প্রথম কুমারী পূজা করেন ১৮৯৮ সালে, তাঁর কাশ্মীর ভ্ৰমণকালে। তিনি যখন ১৮৯৮ সালে কাশ্মীর ভ্রমণে গেছিলেন, তখন তিনি এক মুসলমান মেয়েকে কুমারীপূজা করেছিলেন। শাস্ত্ররীতিতে ব্রাহ্মণ কন্যাকেই কুমারীপূজার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তিনি সমস্ত রীতির উর্ধ্বে গিয়ে পূজা করেছেন মুসলমান -কন্যাকে। তিনি জাতপাতের উর্ধ্বে দেবী দর্শন করেন। দেবীত্ব কেবল ব্রাহ্মণত্বের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বা দেবীত্ব ও মাতৃ্ত্ব কারোর একচেটিয়া সম্পদ নয়। মাতৃত্ব ও দেবীত্ব প্রতিটি নারীর আজন্ম সম্পদ। স্বামীজির ধ্যানে ও দর্শনে তা প্রমাণিত। তাই তিনি মুসলমান -কন্যার মধ্যে দেবীত্বের সন্ধান পেয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন দর্শকদের, যেদিকে তাকাচ্ছি দেখছি কেবল মা’র মূর্তি। অবাক হয়ে গিয়েছিলেন দর্শকরা স্বামীজির ভাবমূর্তি দেখে।

১৮৯৯ সালে তিনি কন্যাকুমারী শহরে ডেপুটি একাউণ্ট্যাণ্ট জেনারেল মন্মথ ভট্টাচার্যের কন্যাকে কুমারী রূপে পূজা করেছিলেন।

১৯০১ সালে স্বামী বিবেকানন্দ, বেলুড় মঠে দুর্গা পূজা ও কুমারী পূজা শুরু করেন।
১৯০১ সালে বেলুড় মঠের প্রথম কুমারী পুজায় স্বামী বিবেকানন্দ নয় জন কুমারী কে পূজা করেন।
এখন বেলুড়মঠে একজনকেই করা হয়ে থাকে। এটাই নাকি শাস্ত্রীয় রীতি। স্বামীজির দিব্যদৃষ্টিতে সকল কুমারীই দেবীর এক-একটি রূপ। সেই দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে তিনি পূজা করেছিলেন ৯ জন কুমারীকে। স্বামীজি প্রতিটি কন্যাকে ভক্তিভরে পূজা করেছিলেন। ভূমিষ্ঠ হয়ে প্রণাম করেছিলেন শ্রদ্ধাভরে। এই নয়জন কন্যার মধ্যে একজন ছিলেন গৌরীমার পালিতা কন্যা দুর্গামা। যাঁর কপালে টিপ পরাতে গিয়ে স্বামীজি ভাবাবিষ্ট হয়ে গিয়েছিলেন। চন্দনের টিপ পরানোর সময় তিনি ভাবে শিহরিত হয়েছিলেন। আবেগভরে তিনি বলেছিলেন- “ আঃ! দেবীর বোধ হয় তৃ্তীয় নয়নে আঘাত লেগে গেল।” তাঁর দৃষ্টি ঠিকই। আমাদের দুটো চোখ থাকলেও, তৃ্তীয় চোখ থাকে দেবী দুর্গার। তিনি সেই কুমারীর মধ্যে তৃ্তীয় নয়ন প্রত্যক্ষ করেছিলেন। তাঁর দৃষ্টিতে তিনি যেমন ‘সেদিন দুর্গারূপে প্রতিষ্ঠিতা’- পরবর্তীকালেও সেই কন্যা দুর্গামা নামে পরিচিতা হয়েছিলেন। স্বামীজির স্নেহধন্যা ছিলেন এই কন্যা। স্বামীজির কুমারীপূজায় যেন সত্যিই সত্যি ঠিক ঠিক দুর্গামারূপে তিনি পরিগণিতা হয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, ‘দুর্গামা’ অধ্যক্ষারূপে প্রতিষ্ঠিতা হয়েছিলেন সারদেশ্বরী আশ্রমে। স্বামীজির অন্তর্দৃষ্টি যেন বাস্তবায়িত হয়েছিল এই কুমারীপূজার মধ্য দিয়ে। অবশ্য এই নয়জন কুমারীর মধ্যে দুর্গামা যেমন ছিলেন, তেমনি শ্রীরামকৃষ্ণের ভাইপো রামলালদাদার কনিষ্ঠা কন্যা রাধারানীও ছিলেন। স্বামীজি এই পূজার দ্বারা যেন একটা নূতন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন। সমস্ত নীতির উর্ধ্বে গিয়ে তিনি সৃষ্টি করেছিলেন এক নূতন নীতি। তিনি নারীজাতির প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা নিদর্শন করেছেন এই কুমারীপূজার মধ্য দিয়ে। শুধু তাই নয়, ইদানীং যে দুর্গাপূজার সময় জীবন্ত কন্যাকে কুমারীপূজা করার প্রচলন তা স্বামীজিরই আবিষ্কার বা তিনিই এর প্রচারক।
অন্য একটি ঘটনার মধ্যে আমরা পাই তাঁকে দিব্যভাবের পূজক হিসাবে। তিনি তখন উত্তর প্রদেশের গাজীপুরে (খুব সম্ভবত ১৯০০ সাল)। সেখানে এক প্রবাসী বাঙালির কুমারী মেয়েকে কুমারীপূজা করেছিলেন। সেই মেয়েটির নাম ছিল মণিকা। পরবর্তীকালে এই মণিকাদেবী হয়ে উঠেছিলেন যশস্বিনী সন্ন্যাসিনী। এ যেন স্বামীজির ঐ দিব্য বীজের বপন, যেন অনাঘ্রাত কুসুমকে দেবসেবায় উৎসর্গ করা। যথার্থ তাঁর দেবী দর্শন। কুমারীপূজায় উৎসর্গীকৃ্তা মণিকা যেন দেবীমূর্তিতে প্রতিষ্ঠিতা। এই মণিকাদেবী শেষজীবনে সন্ন্যাসিনী হয়ে যশোদা-মাঈ নামে পরিচিতা হয়েছিলেন জগতে। এও স্বামীজির এক অন্য আবিষ্কার।
● দার্শনিক তত্ত্ব: কুমারী পূজার দার্শনিক তত্ত্ব হলো নারীতে পরমার্থ দর্শন ও পরমার্থ অর্জন। 

বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে যে ত্রিশক্তির বলে প্রতিনিয়ত সৃষ্টি, স্থিতি ও লয় ক্রিয়া সাধিত হচ্ছে, সেই ত্রিবিধ শক্তিই বীজাকারে কুমারীতে নিহিত। 
কুমারী প্রকৃতি বা নারী জাতির প্রতীক ও বীজাবস্থা। তাই কুমারী বা নারীতে দেবীভাব আরোপ করে তার সাধনা করা হয়। এ সাধনপদ্ধতিতে সাধকের নিকট বিশ্বজননী কুমারী নারীমূর্তির রূপ ধারণ করে; তার নিকট নারী ভোগ্যা নয়, পূজ্যা। পৌরাণিক কল্পকাহিনিতে বর্ণিত আছে, এ ভাবনায় ভাবিত হওয়ার মাধ্যমে রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব নিজের স্ত্রীকে ষোড়শীজ্ঞানে পূজা করেছিলেন।



মন্তব্যগুলি



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন