শনিবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

রূপক রায়ের কলাম ( সাত )

রূপক রায়ের কলাম ( সাত )
ফেসবুক থেকে           শেয়ার করেছেন           প্রণব কুমার কুণ্ডু


প্রণব কুমার কুণ্ডু










রূপক রায়ের কলাম ( সাত )


Rupok Roy


দুর্গা, গণেশ, শিব, কৃষ্ণের উপর আরোপিত অশ্লীলতা প্রসঙ্গে মুসলমানদের মিথ্যা প্রচারণার দাঁত ভাঙ্গা জবাব :

“দেবদেবীদের মধ্যে যদি মা ছেলে, ভাই বোনের সম্পর্কে এমন অবাধ যৌনতা, নোংরামি, নষ্টামি, ভন্ডামি থাকে তারা কিভাবে পূজনীয় হতে পারে ?”

উপরের এই কমেন্টটি করেছে কোনো এক মুসলমান। তার কমেন্টটি অনেক বড়, সেজন্য শুরুতেই তা সম্পূর্ণ উল্লেখ না করে অংশবিশেষ মাত্র উল্লেখ করলাম, তবে পোস্টের শেষে তার পূর্ণ কমেন্ট দিয়ে দেবো, সেখানে দেখে নিতে পারবেন।

এর জবাবে প্রথমেই বলছি, দেব-দেবীরা কি মানুষ, যে তাদের সেক্স করার প্রয়োজন হবে ? যার সেক্স করার প্রয়োজন হবে, তাকে পৃথিবীতে বায়োলজিক্যাল নিয়মে কোনো না কোনো প্রাণী রূপে জন্ম নিতে হবে এবং এক সময় তার মৃত্যু হবে। অবতারগণ ছাড়া কোনো দেব-দেবী কি এইভাবে পৃথিবীতে বায়োলজিক্যাল নিয়মে জন্ম নিয়েছিলো ? উত্তর হচ্ছে, না। যদি তাদের জন্মই না হয়ে থাকে, তাহলে তাদের মৃত্যুও হয় নি। আর যার জন্ম ও মৃত্যু হয় নি, তার উপর যৌনতার অভিযোগ আরোপ করা কি মূর্খামি নয় ? অবশ্যই মূর্খামি এবং মুসলমানরা হলো সেই প্রথম শ্রেণির মূর্খ।

এখানে প্রশ্ন উঠতে পারে, দেব-দেবীদের যদি বায়োলজ্যিাল নিয়মে জন্মই না হয়ে থাকে, তাহলে তারা আসলো কিভাবে এবং কেনোই বা আমরা তাদেরকে পূজা করছি ?

বিশ্বসৃষ্টিকে ব্যাখ্যা করার জন্য আমাদের মুনি-ঋষিগণ প্রকৃতির বিভিন্ন শক্তিকে দেব-দেবী হিসেবে কল্পনা করে নিয়েছিলেন, যেমন আমরা কোনো অংকের সমাধান করার জন্য এক্স, ওয়াই, জেডকে ধরে নিই; মুনি-ঋষিদের কল্পিত সেই প্রকৃতির শক্তিগুলোই হলো দেব-দেবী; এদের না আছে জন্ম, না আছে মৃত্যু, আর না এরা পৃথিবীতে কোনো দিন বাস্তব অস্তিত্বে ছিলো। তাহলে যাদের বাস্তব অস্তিত্বই পৃথিবীতে কোনোদিন ছিলো না, তারা সেক্স করবে কোথা থেকে ?

এখানে অন্য প্রশ্ন হচ্ছে, দেব-দেবীদের যদি বাস্তব অস্তিত্ব না ই থাকে, তাহলে আমরা তাদেরকে পূজা করছি কেনো ?

একটু আগেই বলেছি, মুনি-ঋষিরা প্রকৃতির বিভিন্ন শক্তিকে কল্পনা করে নিয়েছিলেন, তারাই পরবর্তীতে বিভিন্ন দেব-দেবীর রূপ লাভ করেছে। যেমন প্রকৃতির এক বিশাল শক্তি বায়ু বা বাতাস, এই বায়ু যে শুধু প্রাণীদেরকে বাঁচিয়েই রাখে, তা নয়, মাঝে মাঝে সাইক্লোনের রূপ ধরে তা ধ্বংসযজ্ঞও চালায়। বায়ু আমাদেরকে বাঁচিয়ে রাখে, এই ক্ষেত্রে তার ভূমিকা বিষ্ণুর মতো, যে বিষ্ণুর কাজ হলো পালন করা; আবার বায়ু ধ্বংস যজ্ঞও চালায়, এই ক্ষেত্রে বায়ুর ভূমিকা শিবের মতো; এইভাবে বায়ুকে কল্পনা করা হয়েছে একটি দেবতা রূপে, যার নাম পবনদেব । ঠিক তেমনি জলের শক্তিকে শ্রদ্ধা বা পূজা করার জন্য কল্পনা করা হয়েছে জলের দেবতা বরুনকে এবং গীতায় শ্রীকৃ্ষ্ণের বিশ্বরূপের থিয়োরি অনুযায়ী যেহেতু সকল দেব-দেবীই শ্রীকৃষ্ণ, সেহেতু প্রকৃতির সকল শক্তিই দেব-দেবী এবং আল্টিমেটলি তারাই পরমেশ্বর বা ব্রহ্ম। প্রকৃতির যে শক্তিগুলি, যেগুলো আমাদেরকে বাঁচিয়ে রেখেছে বা পালন করছে, সেই শক্তিগুলিকে শ্রদ্ধা বা সম্মান দেখানোর জন্যই আমরা বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা করি।

এক কথায় যে বা যিনি আমাদের জন্য উপকারী, তিনিই আমাদের কাছে শ্রদ্ধা বা সম্মানের পাত্র, যেমন বাংলাদেশ বা ভারতের স্বাধীনতার জন্য যারা জীবন দিয়েছে এবং বর্তমানে যারা দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করছে, তাদেরকে আমরা নানাভাবে শ্রদ্ধা বা সম্মান জানাই, এককথায় তাদের পূজা করি। এই তো কিছুদিন আগে, ২০১৭ সালে, পশ্চিমবঙ্গে, নোট বাতিলের মতো সাহসী সিদ্ধান্ত নেওয়ায় মোদীকেই দেবতা রূপেই পূজা করা হলো; কারণ তিনি দেশের উন্নতির জন্য নিবেদিত প্রাণ, তাই তিনি শ্রদ্ধা, সম্মান বা পূজা পাবার যোগ্য।

উপরের এই আলোচনা থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, উপকারী এবং শুভরূপের কল্পনা থেকে মানুষের মনে দেব-দেবীর উৎপত্তি হয়েছিলো, এই সূত্রে দেব-দেবীদের চরিত্রের কোনো দোষ থাকবে না এটাই স্বাভাবিক। শত দোষ থাকা সত্ত্বেও যেমন মুসলমানা মনে করে মুহম্মদের চরিত্র ফুলের মতো পবিত্র (!), তেমনি যাদের কল্পনায় দেব-দেবীর উৎপত্তি হয়েছিলো, তাদের মনেও দেব-দেবীরা ছিলো নিষ্কলুষ নির্মল চরিত্রের অধিকারী এবং এই নিষ্কলুষ ভাবেই তারা দেব-দেবীদের উৎপত্তি ঘটিয়েছিলো; যেমন- মুহম্মদ তার আল্লার উৎপত্তি ঘটিয়েছিলো সর্বশক্তিমান হিসেবে। এই যদি হয় প্রকৃত ব্যাপার, তাহলে, কোনো কোনো পুরানে দেব-দেবীদের চরিত্র কালিমালিপ্ত কেনো বা তাদের নিয়ে বিভিন্ন যৌন কাহিনী প্রচলনের কারণ কী ?

সাধারণ মানুষকে দেব-দেবীদের তত্ত্ব বোঝানোর জন্য পুরাণের কাহিনীগুলো বানানো হয়েছিলো, পরে এগুলো মোটামুটি ৫ হাজার বছর পূর্বে মহর্ষি বেদব্যাস কর্তৃক লিখিত রূপ পাওয়ার পূর্ব মূ্হুর্ত পর্যন্ত নানা জনের মুখে ঘুরতে ঘুরতে কাহিনীর নানা ডালপালা গজিয়েছিলো, এইভাবে পুরাণের কাহিনী নানাভাবে বিকৃতি হয়েছে। আগে যাই হোক, বেদব্যাস কর্তৃক লিখিত রূপ পাওয়ার পরও যদি পুরাণের কাহিনীগুলি রক্ষা পেতো, তবু একটা সান্ত্বনা ছিলো; কিন্তু সেই সময় ছাপাখানার কোনো ব্যবস্থা না থাকায়, বইগুলো কপি হতো হাতে লিখে, এইভাবে পুরাণগুলো কপি করার সময় সেই লিপিকাররা সেগুলোকে নানাভাবে বিকৃত করেছে, এই বিকৃতি মোটামুটি মহামারী আকার ধারণ করে ভারতে মুসলিম শাসন শুরু হওয়ার পর। সেই সময় মুসলিম শাসকরা পুরাণগুলো শুধু বিকৃতি করেই ছাড়েই নি, তারা নতুন পুরাণও লিখিয়েছিলো, এমন একটি পুরাণ হলো ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ। যে পুরাণে রাধাকে প্রথম আবিষ্কার করা হয় এবং রাধার মাধ্যমে কৃষ্ণের চরিত্রকে কলুষিত করা হয়। এই পুরাণকে ভিত্তি করেই পরে- জয়দেব, সংস্কৃত ভাষায় লিখে গীতগোবিন্দ এবং বড়ু চণ্ডীদাস বাংলায় লিখে শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য এবং রাধা কৃষ্ণের এই সব কাহিনীর উপর ভিত্তি করেই চৈতন্যদেবের কিছু আগে ও পরে লিখিত হয় বৈষ্ণব পদাবলী বা পদাবলী কীর্তন।

সুতরাং কৃষ্ণ চরিত্র, ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণের পরের ভার্সন শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের মাধ্যমে কিভাবে কলুষিত হয়েছে, সেই বিষয়টি আশা করি সবার কাছে পরিষ্কার হয়েছে। এই ব্যাপারে নিচে আরো ডিটেইলস আলোচনা রয়েছে, সেখানে বিষয়টি আরো পরিষ্কার হবে। কিন্তু মুমিনের কমেন্টের এই অংশের মূল টার্গেট হলো- দূর্গা, গনেশ, শিবের অশ্লীলতা; যার জন্য সে রেফারেন্স হিসেবে উল্লেখ করেছে- ভগবত, নবম স্কন্ধঃ৫৯৮, কিন্তু হিন্দু শাস্ত্রে ভগবত ব'লে কোনো গ্রন্থ নাই, আছে "ভগবতগীতা" বা শ্রীমদ্ভগবদগীতা এবং ভাগবত পুরাণ।

ভগবদগীতা হলো ৭০০ শ্লোকের একটি গ্রন্থ, যাতে- শ্রীকৃষ্ণ, অর্জুন, সঞ্জয় ও ধৃতরাষ্ট্র, এই চারজনের নাম রয়েছে, আর ভাগবত পুরাণ হলো সনাতন ধর্মের আদি থেকে অন্তের বর্ণনা সমৃদ্ধ একটি বৃহৎ গ্রন্থ; এর ১০ম স্কন্ধের ৯০টি অধ্যায়ে রয়েছে শ্রীকৃষ্ণের প্রামান্য জীবনী, যেখানে শুধু শ্রীকৃষ্ণ রিলেটেড ব্যাপারগুলো আলোচনা করা হয়েছে; এই মুমিন যেহেতু নবমস্কন্ধ বলে উল্লেখ করেছে, ধরে নিচ্ছি সে ভাগবত পুরাণকেই নির্দেশ করেছে, তাহলে ভগবত পুরাণের নবম স্কন্ধে রয়েছে মাত্র ২৪টি অধ্যায়, সেখানে সে ৫৯৮টি অধ্যায় পেলো কোথা থেকে ?

এ প্রসঙ্গে মুসলমানদেরকে বলছি, রেফারেন্স দিতে হলেও পড়াশুনা করে দিতে হয়, অন্যের কমেন্ট কপি করে দিলেই বাহাদুর হওয়া যায় না; যেমন আমি যেই রেফারেন্সগুলো দিই, ক্ষমতা থাকলে সেখান থেকে একটা ভুল বের করিস, যদি ভুল বের করতে পারিস, তাহলে ইসলামের বিরুদ্ধে লেখা শুধু বন্ধই করে দেবো না, ইসলাম গ্রহন করে মুসলমান হয়ে যাবো। আর হিন্দুদের ধর্মীয় জ্ঞান কম বলে যে একটা সস্তা প্রচার বাজারে চালু আছে, এখন সেটাও মাথা থেকে ডিলিট করে দে, আর হিন্দুধর্ম সম্পর্কে যা খুশি মনগড়া কাহিনী বানানো বা বলা বাদ দে; কারণ, তোদের এই সব অপপ্রচারের জবাব দিতে, শুধু জাকিরের বাপ নয়, জাকিরের বাপ এর বাপ এর জন্ম হয়েছে।

যা হোক, দেব-দেবীদের উপর আরোপিত যৌনতার অভিযোগ যে দেব-দেবীদের মতোই কাল্পনিক আর মুসলমানদের অভিযোগের মতোই মিথ্যা, এই বিষয়টি সম্ভবত সবার কাছে ক্লিয়ার হয়েছে।

এখানে দেব-দেবীকে কাল্পনিক বলায় কোনো কোনো হিন্দুর মনে ধাক্কা লাগতে পারে, তাদের উদ্দেশ্যে বলছি- পৃথিবীতে যা ছিলো না এবং এখনও যা নেই, সেই সবই কাল্পনিক, এই সূত্রে অবতারগণ বাদে হিন্দু শাস্ত্রে বর্ণিত সকল দেব-দেবীই শুধু কাল্পনিক নয়, ইসলামের ইতিহাসের নভোযান, যাতে করে মুহম্মদ সাত আসমান পারি দিয়ে আল্লার সাথে দেখা করতে গিয়েছিলো, সেই নারীমস্তক সম্বলিত ঘোড়া, যাকে বলা হয় বোরাক, সেই বোরাক ই শুধু কাল্পনিক নয়, কাল্পনিক- মুহম্মদ এবং মুসলমানদের পরম আরাধ্য- আল্লাও। তাই দেব-দেবীরা কাল্পনিক বলে মন খারাপ করার কিছু নেই। বরং দেব-দেবীকে বাস্তব ধরে নিলেই আপনি বিপদে পড়বেন; কারণ, তখন কিছুই আপনি আর যুক্তিসঙ্গতভাবে ব্যাখ্যা করতে পারবেন না।

এই মুমিনের একটি বড় অভিযোগ কৃষ্ণকে নিয়ে। সে কৃষ্ণের চরিত্রকে বোঝাতে শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের থেকে বেশ কিছু শ্লোক উল্লেখ করেছে, আগে দেখে নিন তার কমেন্টের কিছু অংশ-

"প্রথমে আমরা দেখি প্রভু কৃষ্ণের ভন্ডামি: (মামির যৌবনে পাগল কৃষ্ণ) মাউলানীর যৌবনে কাহ্নের মন। বিধুমুখে বোলেঁ কাহ্নাঞিঁ মধুর বচন॥ সম্বন্ধ না মানে কাহ্নাঞিঁ মোকে বোলেঁ শালী। লজ্জা দৃষ্টি হরিল ভাগিনা বনমালী ॥ দেহ বৈরি হৈল মোকে এরুপ যৌবন। কাহ্ন লজ্জা হরিল দেখিআঁ মোর তন।" (পোস্টের শেষে পাবেন পুরো কমেন্ট।)

এই প্রসঙ্গে বলছি, এখন বা একশ বছর আগে মুহম্মদের নামকে অবলম্বন করে কিছু লিখলেই সেটা যেমন ইসলামের প্রবর্তক মুহম্মদের জীবনী হয়ে যাবে না, তেমনি খ্রিষ্টীয় ত্রয়োদশ শতকে লিখা শ্রীকৃ্ষ্ণকীর্তন কাব্যও হিন্দুদের আরাধ্য দেবতা শ্রীকৃষ্ণের জীবনী নয়। শ্রীকৃষ্ণের সম্পূ্র্ণ জীবনী আছে সংস্কৃতে লিখা শ্রীমদ্ভাগবতে এবং আংশিক মহাভারতে। মুসলমানদেরকে চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি, যদি ক্ষমতা থাকে সেগুলো থেকে কোনো রেফারেন্স দিয়ে শ্রীকৃষ্ণের চরিত্রকে কলুষিত করে দেখা।

এই প্রসঙ্গে শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে রাখা ভালো, তাহলে আত্মবিশ্বাস আরো দৃঢ় হবে। শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য লিখেছে বড়ু চণ্ডীদাস নামে এক কবি, ১৩৫০ থেকে ১৪০০ সালের মধ্যে; এই বড়ু চণ্ডীদাস হিন্দুদের কোনো প্রসিদ্ধ বা স্বীকৃত ধর্মগুরু ছিলো না, ছিলো এজন সস্তা কবি, যার উদ্দেশ্য ছিলো কৃষ্ণকে নিয়ে একটি মনগড়া সস্তা যাত্রাপালা লিখা এবং যার এই হীন কাজের পৃষ্ঠোপোষক ছিলো তৎকালীন মুসলিম শাসক। সুতরাং সেই সস্তা যাত্রাপালায় কৃষ্ণের নামকে অবলম্বন করে যা বলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের কাহিনী যে সম্পূর্ণ কাল্পনিক, এবার তার কিছু প্রমান দিই- শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের নায়িকা রাধা, কিন্তু এই রাধার কোনো অস্তিত্ব নাই মহাভারত এবং শ্রীকৃষ্ণের প্রামান্য জীবনী ভাগবতে; শুধু তাই নয়, হিন্দু ধর্মের প্রাচীন কোনো গ্রন্থে রাধার কোনো উল্লেখ নেই। হিন্দুসমাজে রাধার আবিষ্কার ভারতে মুসলিম শাসন শুরু হওয়ার পরে লিখা ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে, যার কাহিনীকে বেস করে লিখা হয়েছে শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য, যে কথা একটু আগেই বলেছি।

ভাগবত অনুসারে, শ্রীকৃষ্ণ ১০ বছর ২ মাস বয়সে বৃন্দাবন ছেড়ে মথুরায় চলে যায় এবং তারপর সে কোনোদিন আর বৃন্দাবনে ফিরে যায় নি। কিন্তু শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যে- কৃষ্ণ, যুবক বয়সেও বৃন্দাবনে থেকে যায় এবং রাধার সাথে প্রেম চালিয়ে যায়, তাহলে এই কাহিনী মনগড়া নয় তো কী ?

রাধা-কৃষ্ণের প্রেম কাহিনীর মাধ্যমে হিন্দুদেরকে ধোকা দেওয়ার জন্য, যে পুরাণ থেকে এই রাধা-কৃষ্ণের প্রেমলীলার উৎপত্তি, সেই ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণের পৃষ্ঠপোষকদের সবচেয়ে সূক্ষ্ম ও মারাত্মক ষড়যন্ত্র হলো, এটার রচয়িতা হিসেবে মহর্ষি বেদব্যাসের নামের ব্যবহার। অথচ একটু ভাবলেই এটা পরিষ্কার হয়ে যায় যে- যে বেদব্যাস, ভাগবত ও মহাভারতে শ্রীকৃষ্ণকে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর হিসেবে তুলে ধরেছে, যার চরিত্রে কোথাও এতটুকু কালি লাগতে দেয় নি, সেই বেদব্যাস কিছুতেই ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণের মতো একটি সস্তা যৌনকাব্য লিখতে পারে না।

সবচেয়ে বড় কথা, কৃষ্ণের যৌবনকালে কৃষ্ণ ছিলো দ্বারকার প্রধান ব্যক্তি, এককথায় রাজার মতো এবং তখন সে রীতিমতো রুক্মিনীর সাথে প্রেম করছিলো এবং যাকে সে বিবাহ করে, তাহলে সেই কৃষ্ণ কখন রাধার সাথে প্রেম করলো বা প্রেম করার জন্য বৃন্দাবন গেলো ? আর রাধার সাথে কৃষ্ণের যদি এতই প্রেম থাকে তাহলে কৃষ্ণ, রাধাকে বিয়ে করলো না কেনো ?

হিন্দু ধর্মের প্রাচীন কোনো গ্রন্থে রাধার কোনো উল্লেখ নেই, এই কথা সর্বপ্রথম বলেন বঙ্কিমচন্দ্র, তার ‘কৃষ্ণ চরিত্র’ গ্রন্থে ১৮৬০/৭০ সালের দিকে। একটা বিষয় খেয়াল রাখবেন, আমি আপনি হয়তো ভালো করে সংস্কৃত পড়তে জানি না বা পারি না, বঙ্কিমচন্দ্র কিন্তু সংস্কৃত পড়তে ঠিকই জানতেন।

চৈতন্যদেবের সময় থেকে শুরু হয় রাধার ঝড়, সেই ঝড়ের মুখে দাঁড়িয়ে বঙ্কিমচন্দ্র যখন এই মত ব্যক্ত ক'রে এই ভাবে রাধাকে অস্বীকার করেছেন, তখন তিনি যে আন্দাজে কোনো কথা বলেন নি, এটা কিন্তু খুব সহজেই ধরে নেওয়া যায়। শুধু তাই নয়, বঙ্কিমের আগে "উইলসন" নামের ইংরেজ ভদ্রলোক রাধার উপর গবেষণা করেছিলেন, বঙ্কিম তারও রেফারেন্স দিয়ে বলেছেন যে,

“রাধাকে প্রথমে ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে দেখিতে পাই। উইলসন সাহেব বলেন যে, ইহা পুরাণগণের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ বলিয়াই বোধ হয়। ইহার রচনাপ্রণালী আজিকালিকার ভট্টাচার্যদিগের রচনার মত। ”

অবস্থাটা বোঝেন আজিকালিকার ভট্টাচার্যদিগের মতো। এই ভট্টাচার্যরা যে জন্মসূত্রে হিন্দু ছিলো তাতে কোনো সন্দেহ নেই, কিন্তু এরা কর্মসূত্রে ছিলো মুসলমান; তাই মুসলমানদের ফরমায়েশ খেটে হিন্দু ধর্মের প্রধান পুরুষ শ্রীকৃষ্ণকে নিয়ে এরকম একটি কুরুচিকর যৌনকাব্য লিখতে তাদের বিবেকে বাধে নি। আর সেই মিথ্যাগুলো এখন প্রচার করতেও মুসলমানদের বিবেকে বাধছে না; আর বাধবে কিভাবে, বিবেক থাকে তো মানুষের, মুসলমানরা- কোথায়, কবে, কখন মানুষ ?

জয় হিন্দ।
জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীকৃষ্ণ।
----------------------------------------------------

নিচে দেখে নিন মুসলমানদের অপপ্রচারের সম্পূর্ণ কমেন্টটি :

দূর্গা, গনেশ, শিব, কৃষ্ণের অশ্লীলতাঃ পর্ব ১ ******★*******★★************ তথ্যসূত্র: [সত্যভূত(Fb), wikipedia, ছুপামালু, বেদ, শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন ইত্যাদি] (হিন্দু ধর্মানুসারী বন্ধুদের কাছে বিনীত অনুরোধ, উপরোক্ত সুত্রগুলো থেকে প্রাপ্ত নিম্নের রেফারেন্সগুলো কতটা সঠিক জানতে আপনাদের সাহায্য চাই। বর্ণিত গ্রন্থগুলোতে এসব আছে কি না? যদি না থাকে, তবে মুল শ্লোকগুলো অনুবাদসহ জানতে চাই। আর যদি সত্যি হয়ে থাকে, তবে আমি সবিনয়ে প্রশ্ন করতে চাই, ধর্মের দেবদেবীদের মধ্যে যদি মা ছেলে, ভাই বোনের সম্পর্কে এমন অবাধ যৌনতা, নোংরামি, নষ্টামি, ভন্ডামি থাকে তারা কিভাবে পূজনীয় হতে পারে? যে গ্রন্থগুলোতে চটিবইসম এমন যৌনতার কাহিনী বিদ্যমান, সেগুলো ধর্মগ্রন্থ হয় কোন যুক্তিতে? আমি সত্য জানতে চাই। আশা করি আপনাদের সাহায্য পাব।)

প্রথমে আমরা দেখি প্রভু কৃষ্ণের ভন্ডামি: (মামির যৌবনে পাগল কৃষ্ণ) মাউলানীর যৌবনে কাহ্নের মন। বিধুমুখে বোলেঁ কাহ্নাঞিঁ মধুর বচন॥ সম্বন্ধ না মানে কাহ্নাঞিঁ মোকে বোলেঁ শালী। লজ্জা দৃষ্টি হরিল ভাগিনা বনমালী ॥ দেহ বৈরি হৈল মোকে এরুপ যৌবন। কাহ্ন লজ্জা হরিল দেখিআঁ মোর তন ॥ শ্রীকৃষ্ণ কীর্ত্তনের দানখন্ডঃ রামগিরীরাগঃ পৃষ্ঠাঃ ২০ ॥ (শব্দার্থঃ মাউলানী- মামী, কাহ্নের- কৃষ্ণের, বোলেঁ- বলে, হরিল- হারাল, বনমালী- কৃষ্ণ, মোকে- আমাকে, দেখিআঁ- দেখে, তন- স্তন।) চন্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণ কীর্ত্তন এর বৃন্দাবন খন্ডে পাওয়া যায়ঃ এ তোর নব যৌবনে ল আহোনিশি জাগে মোর মনে। তাহাত তোক্ষা রমণে ল খেতি করে আক্ষার পরাণে॥ .....॥ শ্রীকৃষ্ণ কীর্ত্তন (চন্ডীদাস বিরচিত) : বৃন্দাবন খন্ডঃ পৃষ্ঠা-৮৯ ॥ (শব্দার্থঃ আহোনিশি- অহরহ, তোক্ষা - তোমার, খেতি করে - কর্ষণ করে বা আঘাত করে, আক্ষার -আমার) অর্থঃ “রাধে, তোমার এই নব যৌবনের সুষমা অহরহ আমার মনে জাগিতেছে। তাহাতে আবার তোমার সহিত রমণেচ্ছা প্রবল হইয়া আমার হৃদয়কে অতিমাত্রায় কর্ষণ করিতেছে।” (শ্রীকৃষ্ণ কীর্ত্তন : ভাষাসর্ব্বস্ব টীকা-২৫২পৃষ্ঠা) রাধার সখিদের সাথে কৃষ্ণের ভন্ডামি- শ্রীকৃষ্ণ কীর্ত্তনের
যমুনা খন্ডে বলা হয়েছেঃ আহা।গোপীর বসন হার লয়িআঁ দামোদর। উঠিলা গিআঁ কদম্ব তরুর উপর ॥ তথাঁ থাকী ডাক দিআঁ বুইল বনমালী। কি চাহি বিকল হঅ সকল গোআলী ॥১॥ নিকট আইস মোর মরণ সব গোপীগণে। আজি কথা সুণ মোর মরণ জীবনে ॥ধ্র“॥ দেখি[ল] হরষে তা সব গোপযুবতী। গাছের উপরে কাহ্নাঞিঁ উল্লাসিত মতী ॥ হরিআঁ গোপীর হার আঅর বসনে। হাসে হাসি খলখলি কাহ্নাঞিঁ গরুঅ মনে ॥২॥ কুলে পরিধান নাহি দেখি গোপনারী। হৃদঞঁ জানিল তবে নিলেক মুরারী ॥ তবে বড় গল করী বুইল জগন্নাথে। তোক্ষার বসন হের আক্ষার হাতে ॥ ৩॥ যাবত না উঠিবেঁহে জলের ভিতর। তাবত বসন নাহি দিব দামোদর ॥ এহা জাগী তড়াত উঠিআঁ নেহ বাস। বাসলী শিবে বন্দী গাইল চন্ডীদাস॥৪॥ ॥ শ্রীকৃষ্ণ কীর্ত্তন : যমুনা খন্ড ॥ পাহাড়ীআরাগ ॥ পৃষ্ঠাঃ ১০২॥ - এখানে রাধা-কৃষ্ণের প্রেমের বর্ণনা করা হয়েছে। রাধা তার অষ্টসখিদের নিয়ে পুকুরে স্নান করতে যায়। সখিরা তাদের নিজ নিজ বসন খুলে বিবস্ত্র হয়ে জলেতে নামিল। বিবস্ত্র হয়ে জলে নামার কথাটা উল্লেখ আছে পরের শ্লোকে। পৃষ্ঠা : ১০৩, ধানুষীরাগ : ॥ একতালী॥ আল বড়ায়ি সাত পাঁচ সখিজন লআঁ। জলেত ণাম্বিলী লাঙ্গট হআঁ ॥ল॥ .....॥ শ্রীকৃষ্ণ কীর্ত্তন : যমুনা খন্ড :পৃষ্ঠা : ১০৩ : ধানুষীরাগ :॥ (শব্দার্থঃ কদম্ব তরুর- কদম গাছ, তোক্ষার- তোমার, আক্ষার- আমার,যাবত- যতক্ষণ, উঠিবেঁহে- উঠিয়া আসিবে, জলের ভিতর- জল থেকে, তড়াত- তাড়াতাড়ি করে,বুইল- বলল, দিআঁ- দিয়ে, গিআঁ-গিয়ে, দামোদর - কৃষ্ণ, করী- করে,লআঁ- নিয়ে, ণাম্বিলী- নামিল,লাঙ্গট- উলঙ্গ।) এখানে, তোক্ষার বসন আক্ষার হাতে ॥৩॥ তোমার কাপড় আমার হাতে। যাবত না উঠিবেঁহে জলের ভিতর। যতক্ষণ না উঠিয়া আসিবে জল থেকে। তাবত বসন নাহি দিব দামোদর ॥ ততক্ষণ কাপড় নাহি দিবে কৃষ্ণ। সখিসব স্নানশেষে কূলেতে তাকিয়ে দেখে তাদের পরিধানের বসন নেই। এদিক সেদিক তাকিয়ে দেখে শ্রীকৃষ্ণ তাদের বসন গুলো নিয়ে কদম গাছের ডালে বসে বাঁশি বাজাচ্ছে। বসন চাইলে কৃষ্ণ তাদের কে জলের ভিতর থেকে উঠে আসতে বলে। সখিসব বিবস্ত্র অবস্থায় কূলে উঠতে ইতস্ততঃ বোধ করল। কিন্তু না উঠে উপায় কি? যতক্ষণ পর্যন্ত তারা জল থেকে না উঠে আসবে ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের বসন ফেরত দেবেনা।

এবার আমরা দেখবো মনু/শিব,গনেশ আর দেবী দূর্গার অশ্লীলতা: হিন্দু মহিলারা প্রত্যহ সন্ধ্যায় শিব লিঙ্গ পূঁজা করে থাকে। শিব হইল মনু বা মহাদেবের অপর নাম, আর শিবলিঙ্গ মানে হলো মাহাদেবের ফ্যামিলি জুয়েল। মূল কাহিনি:- চিরাচরিত নিয়ম অনুযাই একদিন মহাদেব তার পত্নী পার্বতীর সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হয়। পার্বতী হলো দূর্গার অপর নাম। যখন মাহাদেবের প্রমত্ত যৌন উত্তেজনার ফলে পার্বতী মরনাপন্ন হয়ে পড়ে, তখন পার্বতী প্রান রক্ষার জন্য ভগবান কৃষ্ণের উদ্দেশ্যে প্রার্থণা করতে থাকে। এ অবস্থায় কৃষ্ণ তার সুদর্শন চক্রের দ্বারা উভয় লিঙ্গ কেটে দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে পার্বতীর প্রান রক্ষা করেন। আর এই স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য প্রবর্তন হয় এই যুক্তলিঙ্গ পূজা । (ভগবত, নবম স্কন্ধঃ৫৯৮) এর পর পার্বতী নিজ যৌন চাহিদা মিটাতো তার পেছনের রাস্তা.... দিয়ে। আর মাহাদেব যেহেতু লিঙ্গ কাটার পর পার্বতীর যৌন চাহিদা পুরা করতে পারত না। তাই পার্বতী অন্যান্য ভগবানদের সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হত। একদিনের ঘটনা। পার্বতী ভগবান বিষ্ণুর সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হয়েছে। ঠিক এমন সময় সেখানে গনেশ এসে হাজির। গনেশ ছিল পার্বতীর আপন ছেলে। তখন পার্বতী গনেশের থেকে নিজেকে লুকানোর জন্য নিজ চেহারা তুলশীর চেহারায় পরিবর্তন করে ফেলে। তুলশীর সাথে গনেশের পূর্ব থেকে যৌন সম্পর্ক ছিল। তখন গনেশ নিজ মা পার্বতীকে তুলশী ভেবে তার সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হন। পরবর্তীতে এই ঘটনা মহাদেব জানতে পেরে অভিশাপ দিয়ে নিজ ছেলে গনেশের মাথা হাতির মাথায় পরিবর্তন করে দেয় । (স্কন্ধ পুরাণ, নাগর খন্ডম ৪৪৪১, পৃঃ১-১৬) আরও কিছু তথ্য: ১. যিনি যৌতুক হিসেবে ২২ হাজার দাসী নিয়েছিলেন; তিনি=কৈলাসের দেবদাস [ওরফে চন্দ্রশেখর ওরফে শিব ] (কালিকাপুরাণ ৪৮ অধ্যায়, পৃষ্ঠা-৪৭৪)

💜 জয় হোক সনাতনের 💜


শেয়ার করেছেন
Pranab Kumar Kundu



1 টি মন্তব্য:

  1. হিন্দু ধর্মের মা কালী ও পাঠা বলীর
    মহৎ এবং সুন্দর ইতিহাস। হিন্দু ধর্ম গ্রন্থ থেকে।
    *সূত্রঃ-[কালিকা পুরান:আধ্যায় -১৩: পাঠাবলী খন্ড:ভুবনময় চট্টোপাধ্যায়:৪র্থ সংকলন*

    কালী দেবীর বর্তমান মুর্তিতে ইচ্ছে করে কাপড় লাগিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু,হিন্দু ধর্মগ্রন্থ মতে কালি সব সময় উলঙ্গ হয়েই থাকতে পছন্দ করত, তাই কালি দিনে বের হতো না, রাতের বেলাতে বের হতে তার ভালো লাগত। তো কালি একদিন রাতের বেলায় বনের মধ্যে ঘুরতে বেড়িয়ে ছিলো, ঘুরতে ঘুরতে দেখলো সকাল হয়ে যাচ্ছে, কালি এখন কি করবে উলঙ্গ অবস্তায় মানুষ যদি দেখে ফেলে তবেতো কালি লজ্জা পাবে। তার মান ইজ্জত যাবে।
    কালি চিন্তা করলো যে,এখন কি করা যায়?
    আমাকে তো সবাই দেখে ফেলবে হঠাৎ করে কালি দেবি দেখতে পেলো এক যুবক ছাগলের পাল নিয়ে যাচ্ছে, কালি দেবি তখন ছাগীর রূপ ধারন করে সেই ছাগলের পালের মধ্যে প্রবেশ করলো।
    সেই ছাগলের পালের মধ্যে এক পাঠা(পুরুষ ছাগল) নতুন একটা ছাগীকে দেখে উত্তেজিত হয়ে পাঠা কালী রূপী ছাগীর সাথে যৌন সঙ্গম করে ফেললো।
    এবার ছাগী রূপী কালি ভীষন ক্ষেপে গেলো, যে এতো বড় সাহস!! আমি হলাম একজন দেবী আর আমার সাথে এই আকাম কুকাম করলো পাঠা??? সুতরাং এই পাঠাকে প্রতিদিন আমার (কালীর) সামনে বলী দিতে হবে!!
    এভাবে কালিপূজায় পাঠা বলীর নিয়ম শুরু হয়েছে।
    *সূত্রঃ-[কালিকা পুরান:আধ্যায় -১৩: পাঠাবলী খন্ড:ভুবনময় চট্টোপাধ্যায়:৪র্থ সংকলন]*
    এখন হয়তো কিছু আধুনিক হিন্দুভাইয়েরা নাক কপালে উঠাবে এবং নিজের অজানতে জ্ঞান প্রদান করিবে- আ'হা, পুরাণ-!! এর কোন ভিত্তি নেই.!! এগুলো বিকৃত রূপকথার কাহিনি!!
    কিন্তু আপনি একজন সচেতন হিন্দু হলে, তার পাগলামির প্রলাপ ছিন্ন করতে পারবেন..
    আপনি যদি ছান্দোগ্য উপনিষৎ পড়ে থাকেন (ছান্দোগ্য উপনিষৎ হল, সামবেদের ছান্দোগ্য ব্রাহ্মণের অন্তর্ভুক্ত..)
    তাহলে সেখানে সুস্পষ্ট দেখতে পাবেন যে "পুরাণকে পঞ্চম বেদ বলা হয়েছে.."
    (ছান্দোগ্য উপনিষৎ ৭ম প্রপাঠক বা অধ্যায়ের, ১ম খণ্ডের, ২য় ভার্স..) অর্থাৎ, উপনিষদের ভাষ্য অনুযায়ী পুরান ধর্ম গ্রন্থগুলোই হচ্ছে বেদের অংশ। যেহেতু হিন্দু ধর্মের প্রথম দুটি ধর্ম গ্রন্থ হচ্ছে বেদ এবং উপনিষদ যা হিন্দু ধর্মের অনুসারীরা মনে প্রাণে বিশ্বাস করে।

    বি:দ্র: এখানে সমস্ত কিছু দেওয়া হয়েছে হিন্দু ধর্ম গ্রন্থ থেকে রেফারেন্সসহ। তাই রেফারেন্সটা খেয়াল করুন।

    হিন্দু ভাইদের কাছে আমার একটা প্রশ্ন,
    এটা কেমন ধর্ম? যে ধর্মের দেবিকে ছাগল ধর্ষণ করে?🤣😂

    উত্তরমুছুন