বৃহস্পতিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০১৭

নাথুরাম গোডসে ও গান্ধিজি


নাথুরাব গোডসে ও গান্ধিজি






নাথুরাম গোডসে ও গান্ধিজি



শ্রী মিন্টু ঘোষের পোস্ট  শেয়ার করা হয়েছে !             শেয়ার করেছেন   শ্রী প্রণব কুমার কুণ্ডু।




Pranab Kumar Kundu.



Mintu Ghosh
7 ঘণ্টা ·


আমি গান্ধীকে কেন বধ করেছি...
পর্ব - 1
-------------------------------------------------------------------------
সুপ্রীম কোর্টের অনুমতি পাওয়ার পর প্রকাশিত হয় মাননীয় নাথুরাম গোডসের ভাষণ --- আমি গান্ধীকে কেন মেরেছি। 60 বছর এটা নিষেধ ছিল! আপনারা সকলেই জানেন --- 30 শে জানুয়ারী, 1948 গোডসে গুলি মেরে গান্ধীজিকে হত্যা করেছিলেন। গুলি মেরে উনি ঘটনা স্হল থেকে পালিয়ে যান নি! উনি আত্মসমর্পণ করেছিলেন! গোডসের সঙ্গে আরও 17 জনের বিরুদ্ধে মামলা শুরু হল। মামলা চলাকালীন প্রধান বিচারপতির কাছে অনুরোধ করা হয়,  যাতে নাথুরাম গোডসে তাঁর বক্তব্য রাখতে পারেন। অনুমতি তো মিলল,  কিন্তু শর্ত সাপেক্ষ! সরকারের নির্দেশ অনুসারে কোর্টের বাইরে যাওয়া চলবে না। পরে ওনার ছোট ভাই গোপাল গোডসে দীর্ঘদিন মামলা চালানোর পর ---- প্রায় 60 বছর পর অনুমতি পাওয়া যায়, সেই বক্তব্য,  সর্ব সমক্ষে রাখার।

1. নাথুরাম ভাবতেন --- গান্ধীজির অহিংসা এবং মুসলিম তোষণ নীতি,  হিন্দুদের কাপুরুষে রূপান্তরিত করে দিচ্ছে। কানপুরে গণেশ শঙ্কর বিদ্যার্থীকে মুসলিমরা নির্মম ভাবে হত্যা করে। আর যে গণেশজি গান্ধীজির ভাব ধারায় প্রভাবিত ছিলেন ---- তাঁর হত্যাকান্ডে গান্ধীজি চুপ রইলেন!

2. 1919 এর জালিয়ানওয়ালা বাগের হত্যাকান্ডে, দেশের সমস্ত মানুষ,  আক্রোশে ফুঁসছিল। এই নৃশংস হত্যাকারী,  খলনায়ক,  জেনারেল ডায়ারের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য গান্ধীকে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু গান্ধিজি,  পরিস্কার মানা করে দেন!

3. গান্ধী খিলাফত আন্দোলনকে সমর্থন করে ভারতে সাম্প্রদায়িকতার বীজ,  বুনলেন! নিজেকে কেবল মুসলিমদের হিতৈষী হিসাবে হাভ-ভাবে বুঝিয়ে দিতেন। কেরালায় মোপলা মুসলিমরা 1500 হিন্দুকে হত্যা,  2000 হিন্দুকে ধর্মান্তরিত করল! গান্ধীজি বিরোধিতা পর্যন্ত করলেন না!

4. কংগ্রেসের ত্রিপুরা অধিবেশনে,  নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস,  বিপুল সমর্থনে জয়লাভ করেন। কিন্তু গান্ধীর পছন্দের প্রার্থী ছিলেন, পট্টভি সীতা রামাইয়া! সুভাষ চন্দ্র বোসকে পরে বাধ্য করা হয়,  ইস্তফা দেওয়ার জন্য।

5. 23 শে মার্চ, 1931 --- ভগৎ সিংকে ফাঁসী দেওয়া হয়। সারা দেশের মানুষ,  এই ফাঁসি আটাকানোর জন্য গান্ধীজিকে অনুরোধ করেন। গান্ধীজি ভগৎ সিং এর কার্যকলাপকে,  অনুচিত মনে করে,  সেই অনুরোধ রাখেন নি!

6. গান্ধীজি কাশ্মীরের রাজা হরি সিংকে পদত্যাগ করতে বলেন --- কারণ কাশ্মীর মুসলিম বহুল রাজ্য! উনি হরি সিংকে কাশী গিয়ে প্রায়শ্চিত্ত করতে বলেন! অথচ হায়দ্রাবাদের নিজামের ক্ষেত্রে চুপ। গান্ধীজির নীতি ধর্ম বিশেষে বদলাত। পরে সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের সক্রিয়তায় হায়দ্রাবাদকে ভারতের সঙ্গে রাখা হয়।


!! আমি গান্ধীকে কেন মেরেছি !!
(পর্ব - 2)
------------------------------------------------------------------------
7. পাকিস্তানে,  হিন্দু নিধন যজ্ঞ চলছে তখন। প্রাণ বাঁচাতে বেশ কিছু হিন্দু ভারতে চলে আসেন। অস্হায়ী ভাবে আশ্রয় নেন দিল্লীর মসজিদে। মুসলিমরা এর জন্য বিরোধিতা শুরু করে। ভয়ঙ্কর শীতের রাতে মা-বোন-বালক-বৃদ্ধ সকলকে জোর করে মসজিদ থেকে বের করে দেওয়া হয়। নিরব রইলেন গান্ধীজি!

8. গান্ধী মন্দিরে কোরান পাঠ ও নামাজ পড়ার ব্যবস্থা করলেন! এর বদলে কোন মসজিদে গীতা পাঠের ব্যবস্থা করতে পারলেন না! অসংখ্য হিন্দু, ব্রাহ্মণ,  এর প্রতিবাদ করেছিলেন ---- গান্ধীজি আমলই দিলেন না!

9. লাহোর কংগ্রেসে সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটৈলের জয় হল, কিন্তু গান্ধী জেদ করে এই পদ নেহেরুকে দিলেন। নিজের ইচ্ছা সফল করানোতে উনি সিদ্ধহস্ত ছিলেন। ধরনা, অনশন, রাগ, বাক্যালাপ বন্ধ করা ---- এই কলাগুলির সাহায্যে যখন- তখন ব্লাকমেল করতেন। সিদ্ধান্তের ঠিক, কি ভুল, তাও বিচার করতেন না।

10.   14 ই জুন, 1947 দিল্লীতে অখিল ভারতীয় কংগ্রেস সমিতির বৈঠক ছিল। আলোচনার বিষয় ছিল ভারত বিভাজন। এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অদ্ভুত ভাবে দেশ ভাগের প্রস্তাব গান্ধী সমর্থন করলেন। এই ইনিই একদিন বলেছিলেন ---- দেশ ভাগ করতে গেলে ওনার মৃতদেহের ওপর দিয়ে করতে হবে!
লাখ লাখ হিন্দু মারা গেলেও,  উনি চুপ থেকেছেন! মুসলিমদের কখনো শান্তি বজায় রাখার আদেশ দেন নি ---- যত আদেশ-উপদেশ শুধু হিন্দুদের জন্য!

11. ধর্ম নিরপেক্ষতার ছদ্মবেশে "মুসলিম তোষণ"-এর জন্ম দেন, গান্ধী। যখন হিন্দী ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষা করার বিরোধীতা করল মুসলিমরা ---- স্বীকার করলেন গান্ধী!
অদ্ভুত এক সমাধান দিলেন --- "হিন্দুস্তানী" (হিন্দী ও' উর্দুর খিচরি)! বাদশাহ রাম, বেগম সীতা বলার চল শুরু হল!

12. কিছু মুসলমানের বিরোধিতায় মাথা নত করলেন আবার ---- "বন্দে মাতরম" কে জাতীয় সংগীত হতে দিলেন না!




!! আমি গান্ধীকে কেন বধ করেছি !!
(পর্ব - 3)
----------------------------------------------------------------------
13. গান্ধীজি বেশ কয়েকবার ছত্রপতি শিবাজী, মহারাণা প্রতাপ, গুরু গোবিন্দ সিংহকে,  পথভ্রষ্ট দেশভক্ত বলেছেন! কিন্তু সেখানে মোহাম্মদ আলি জিন্নাহকে "কায়দে আজম" বলে ডাকতেন!

14.    1931-এ জাতীয় কংগ্রেস,  স্বাধীন ভারতের জাতীয় পতাকা কেমন হবে,  তা নির্ধারণ করার জন্য একটি কমিটি তৈরী করে। এই কমিটি সর্ব সম্মতিতে ঠিক করেন ---- গেরুয়া বস্ত্রের পতাকা হবে,  যার মাঝখানে চরখা থাকবে। কিন্তু গান্ধীজির জেদে সেটা তেরঙ্গা করতে হয়!

15. যখন সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটৈলের উদ্যোগে সোমনাথ মন্দিরের পুনঃনির্মার্ণের প্রস্তাব সংসদে রাখা হয় ----- তখন উনি বিরোধিতা করলেন! এমনকি উনি মন্ত্রীমন্ডলেও ছিলেন না! কিন্তু অদ্ভুত ভাবে 13 ই জানুয়ারী, 1948 এ আমরণ অনশন শুরু করলেন --- যাতে সরকারি খরচে দিল্লীর মসজিদ তৈরী হয়! কেন এই দ্বিচারিতা? উনি হিন্দুকে হয়ত ভারতীয় ভাবতেনই না!

16. গান্ধীজির মধ্যস্হায় ঠিক হয় ---- স্বাধীনতার পর ভারত পাকিস্তানকে 75 কোটি টাকা দেবে। 20 কোটি শুরুতেই দেওয়া হয়। বাকি ছিল 55 কোটি। কিন্তু 22 শে অক্টোবর, 1947 পাকিস্তান কাশ্মীর আক্রমণ করে! পাকিস্তানের এই বিশ্বাস ঘাতকতার জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীমন্ডল সিদ্ধান্ত নেয়,  বাকি টাকা আর পাকিস্তানকে দেওয়া হবে না। কিন্তু সেই বেঁকে বসলেন লাঠিধারী! শুরু করলেন আবার ব্ল্যাকমেল --- আবার অনশন। শেষে সরকার বাকি 55 কোটি টাকাও বিশ্বাসঘাতক পাকিস্তানকে দিতে বাধ্য হল!
এইরকম  জিন্নাহ,  ও অন্ধ পাকিস্তান প্রীতি দেখে বলতে পারি,  উনি প্রকৃতপক্ষে পাকিস্তানের রাষ্ট্রপিতা ছিলেন ---- ভারতের নয়। প্রতিটি মুহুর্তে পাকিস্তানের সমর্থনে কথা বলেছেন ---- সে পাকিস্তানের দাবি যতই অন্যায় হোক!




-------------------------------------------------------------------------
!! আমি গান্ধীকে কেন বধ করেছি!!
(পর্ব 4 )
------------------------------------------------------------------------
আদালতে দেওয়া নাথুরাম গোডসের কিছু বয়ানের বঙ্গানুবাদ।
" আমি ওনাকে অনেক শ্রদ্ধা করি। কিন্তু কোন দেশভক্তকে দেশ ভাগ ও একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের পক্ষপাতিত্ব করার অনুমতি দিতে পারি না। আমি গান্ধীকে মারি নি ---- বধ করেছি --- বধ। গান্ধীজিকে বধ করা ছাড়া আমার কাছে আর কোন উপায় ছিল না। উনি আমার শত্রু ছিলেন না ---- কিন্তু ওনার সিদ্ধান্ত দেশের বিপদ ডেকে আনছিল। যখন কোন ব্যক্তির কাছে আর কোন রাস্তা থাকে না,  তখন ঠিক কাজ করার ভুল রাস্তা নিতে হয়।
মুসলিম লীগ ও পাকিস্তান নির্মাণে গান্ধীজির সমর্থনই আমাকে বিচলিত করেছে। পাকিস্তানকে 55 কোটি টাকা পাইয়ে দেবার জন্য গান্ধীজি অনশনে বসেন। পাকিস্তানে অত্যাচারের জন্য ভারতে চলে আসা হিন্দুদের দুর্দশা আমাকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। গান্ধীজির মুসলিম লীগের কাছে মাথা নত করার জন্য অখন্ড হিন্দু রাষ্ট্র সম্ভব হয়নি। ছেলের মাকে টুকরো করে ভাগ করতে দেখা,  আমার অসহনীয় ছিল। নিজ দেশেই যেন বিদেশি হয়ে গেলাম।
মুসলিম লীগের সমস্ত অন্যায় আব্দার উনি মেনে চলছিলেন। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম ---- ভারত মাতাকে পুনরায় টুকরো হওয়ার হাত থেকে ও দুর্দশার হাত থেকে বাঁচানোর জন্য,  আমাকে গান্ধীজির বধ করতে হবে। আর সেইজন্যই আমি গান্ধীকে বধ করেছি।
আমি জানতাম এর জন্য আমার ফাঁসি হবে এবং আমি এর জন্য প্রস্তুত। আর এখানে যদি মাতৃভূমির রক্ষা করা অপরাধ হয় ----- তাহলে এরকম অপরাধ আমি বার বার করব ---- প্রত্যেক বার করব। আর যতক্ষণ না সিন্ধু নদী অখন্ড ভারতের মধ্যে না বাহিত হয় ---- আমার অস্থি ভাসিও না। আমার ফাঁসির সময় আমার এক হাতে কেশরীয়, জাফরান রঙের,  পতাকা ও অন্য হাতে,  অখন্ড ভারতের মানচিত্র যেন থাকে। আমার ফাঁসিতে চড়ার আগে অখন্ড ভারত মাতার জয় বলতে চাই।
হে ভারত মাতা --- আমার খুব দুঃখ যে আমি কেবল এইটুকুই তোমার সেবা করতে পেরেছি ।"


শেষ পর্ব ভিডিও। ফেসবুকে অন্যত্র খুঁজুন !

জয় হিন্দ ।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন