বৃহস্পতিবার, ২৪ মার্চ, ২০২২

কচুরিপানা

 কচুরিপানা

শেয়ার করেছেন : প্রণব কুমার কুণ্ডু












20 ফেব্রুয়ারি, 2020 
সবাই এর সাথে শেয়ার করা হয়েছে
নিম্ন গাঙ্গেয় অঞ্চলে জলজ জীববৈচিত্র্য এর হত্যাকারী কচুরি পানা।:-
বিনোদ সরদার(20/02/2020)
গ্রামের পুকুর গুলো এখন বার্ধক্যের দশায়। কচুরিপানা,প্লাস্টিক বর্জ্য, সবুজ শ্যাওলা বা শ্যামা, অথবা বাড়ির নর্দমার পয়প্রণালীর নোংরা দূষিত জল পড়ে পুঁতি গন্ধময় হয়ে আছে। পুকুরে এখন অবগাহন দুর্ভাগ্য বিষয় বলতে হয়। বিশেষ করে ভাগের পুকুরের হাল খুবই খারাপ। তার দিকে সবাই উদাসীন। যত্ন করে পুকুরে মাছ উৎপাদন যৌথ পরিবারে এখন বিরল। যে সমস্ত পুকুর লিজ দেওয়া হচ্ছে তা কেবল মাছ চাষের জন্য উপযোগী কিন্তু স্নান করার জন্য টলমলে জল আর দেখা পাওয়া যায়না। গ্রামের এই টলমলে জল ও তার অপার প্রাণরাশির ওপর প্রথম আঘাত হানে ব্রাজিল থেকে আসা বহিরাগত ঘাতক উদ্ভিদ কচুরিপানা। সমস্ত বঙ্গ এর উৎপাতে ভয়ানক জব্দ। পুকুর খাল ও বিলের স্বাভাবিক উদ্ভিদ কুল অবলুপ্তির পথে।
আগ্রাসী প্রজাতি কচুরিপানা ও ঔপনিবেশিক আমলে এই বিদেশী জল-আগাছার সঙ্গে বঙ্গের মানুষ-প্রশাসন যে লড়াই করেছিল, সেটা কিন্তু যথেষ্ট কৌতূহলোদ্দীপক। এ ধরনের বিষয়ে নিরীক্ষার জন্য পরিবেশ, ইতিহাসের বিরাট পরিসর ধরে এগোনো প্রয়োজন।
জীববৈজ্ঞানিক আদান-প্রদান নিয়ে আলফ্রেড ক্রসবির যুগান্তকারী কাজের পরে নিরাপদ ঔপনিবেশিক রাজ্য ও আক্রমণাত্মক উদ্ভিদের সাক্ষাতের পরিবর্তে উদ্ভিদ স্থানান্তর ও সাম্রাজ্য বিস্তারের মধ্যকার সম্পর্কের ওপর অধিক গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।
‘কচুরিপানা (Water Hyacinth) এক প্রকার ভাসমান জলজ উদ্ভিদ Eichornia crassipes। মাঝে মাঝে অত্যধিক পরিমাণে জন্মায় এবং নদীনালা ভরে তুলে নৌ-চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে। এটি অবাধ ভাসমান গুল্ম, নিচে থেকে এক থোকা লম্বা গুচ্ছমূল, ওপরে খর্বিত কাণ্ডে এক থোকা পাতা। পাতার বোঁটা খাটো ও স্পঞ্জি। মঞ্জরি ১৫-২০ সেমি লম্বা, দণ্ডে থাকে ১০-১২ দৃষ্টিনন্দন ফুল।
কচুরিপানা বঙ্গদেশে (তত্কালীন) এনেছিলেন খুব সম্ভবত জর্জ মরগান। জর্জ ছিলেন স্কটিশ অভিবাসী ও নারায়ণগঞ্জের পাট ব্যবসায়ী। মরগান কচুরিপানার ফুল ও পাতার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছিলেন, অস্ট্রেলিয়া থেকে ফেরার পথে তিনি এ উদ্ভিদ বঙ্গদেশে নিয়ে আসেন। অরেকটি মত অনুসারে, কচুরিপানা ১৮৯০-এর দশকে ব্রাজিল থেকে কলকাতা বোটানিক গার্ডেনে আনা হয়েছিল। কয়েক বছর পরে বেশ কয়েক ভদ্রমহিলা এর ফুল দেখে আকৃষ্ট হয়ে সেগুলো ঢাকায় নিয়ে এসে তাদের বাগানে লাগান। আবার অনেকে মনে করেন, কচুরিপানা এই ব-দ্বীপে আসাম থেকে ব্রহ্মপুত্র দিয়ে ভাটির টানে পূর্ববাংলায় গিয়েছিল। আবার প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সূচনাকালে বঙ্গে এই আগাছার দ্রুতগতিতে বিস্তৃত হওয়ার পেছনে অনেকে জার্মানদের দায়ী করেন। জার্মানরা ব্রিটিশদের দুর্বল করতে তাদের উপনিবেশের ‘ভারতীয় প্রজাদের’ হত্যা করতে চেয়েছিল; এমনকি কচুরিপানা তখন ‘জার্মান পানা’ নামেও পরিচিত পেয়েছিল। আবার শোনা যায়, একটি বহুজাতিক কোম্পানি কচুরিপানা বাংলায় এনে থাকতে পারে।
কচুরিপানার ছড়িয়ে পড়ায় যেহেতু তেমন কোনো বাধা পড়েনি, তাই এর ফলে শস্য ও কৃষি ব্যবস্থার ওপর যে ধ্বংসযজ্ঞ বয়ে এনেছিল, তার বিরুদ্ধেও কোনো প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেয়া যায়নি। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ময়মনসিংহ জেলায় বছরের পর বছর ১০০ বর্গমাইলের বেশি এলাকায় কচুরিপানার ধ্বংসযজ্ঞের কারণে চাষীরা ফসল উৎপাদন করতে পারেননি। খুলনার বিল এলাকায় ধান চাষ কঠিন হয়ে পড়েছিল এবং নিচু জমিতে কচুরিপানার আক্রমণে ধান ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। কুমিল্লা জেলার নাসিরনগরের বাসিন্দারা সরকারের কাছে পিটিশন দাখিল করে, যাতে অভিযোগ করা হয় যে— ১৯১৫ সাল থেকে তাদের অঞ্চলের একটি বিরাট এলাকার ফসল বন্যা ও কচুরিপানার কারণে নষ্ট হচ্ছে। ঢাকা জেলার মুন্সীগঞ্জের আড়িয়ল বিলে বিপুল পরিমাণ ধান নষ্ট হয়েছিল বলে জানা যায়। কুমার নদ থেকে আসা কচুরিপানা ১৭৪ বর্গমাইল এলাকার ধান ও পাট প্রতি বছর নষ্ট করত। এটাও জানা যায় যে, অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন ও আমন ধান ফলানো কঠিন হয়ে যায় কচুরিপানার আগ্রাসনের কারণে। ১৯২৬ সালের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, বছরের পর বছর ধরে আমন ধানের ১৫ থেকে ২০ শতাংশ নষ্ট হচ্ছে কচুরিপানার আগ্রাসনে। বেঙ্গল ওয়াটার হায়াসিন্থ বিল (১৯৩৩)-এর উত্থাপকরা উল্লেখ করেছিলেন, ‘কিছুদিন আগে’ কচুরিপানা কর্তৃক বাংলায় বার্ষিক ক্ষতির পরিমাণ ছিল ৬ কোটি রুপি এবং যে বছর এ কথাগুলো বলা হয়েছিল, সে বছর ক্ষতির পরিমাণ ছিল আরো বেশি। এসব কথা একটু বাড়িয়ে বলা ছিল না, কারণ কচুরিপানা বিশেষত বিলে জন্মানো ধানের জন্য ধ্বংসাত্মক ছিল। ব-দ্বীপের নিম্নভূমিতে অর্থাত্ বাংলার সব এলাকা ধান চাষের জন্য সমানভাবে উপযুক্ত নয়। কচুরিপানার ধারাবাহিক উপস্থিতি ও ধ্বংসযজ্ঞ কৃষির ওপর যে প্রভাব রেখেছিল, তাকে এখনকার ভাষায় বলা যায়— ‘অর্থনৈতিক মন্দা’। ‘বাংলাদেশে এটি এত দ্রুত ছড়াতে থাকে যে, ১৯২০-এর দশকের মধ্যেই দেশের সবগুলো জলাশয় কচুরিপানায় ভরে যায়। এতে নৌ-চলাচলে বিঘ্ন ঘটে এবং নিচু জমিতে আমনজাতীয় জলিধান ও পাট চাষ কঠিন হয়ে ওঠে। ফলে বাংলার অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দেয়।’ (মোস্তফা কামাল পাশা; বাংলাপিডিয়া)
কচুরিপানার সমস্যা আরো জটিল হয়ে ওঠে এ অঞ্চলের জলপ্রবাহ হ্রাস পাওয়ায়। বন্যা প্রতিরোধী ও রেলওয়ের জন্য বাঁধ নির্মাণের ফলে নদীর জলপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত বা হ্রাস পেয়েছিল। খাল বা শীর্ণ স্রোত বয়ে চলা নালায় পিলার বা স্লুইস গেট নির্মাণের ফলে সেখানে পলি জমা শুরু হয় এবং কচুরিপানা জন্মানোর জন্য আদর্শ পরিস্থিতি তৈরি করে। রেল ও সড়কপথের ধারে খানাখন্দ বা পরিখা এই কচুরিপানার জন্য আরেক অনুকূল স্থান হয়ে দেখা দেয়। ফাল্গুন-চৈত্র মাসে কৃষকরা তাদের মাঠে জন্মানো কচুরিপানা ধ্বংস করতেন। কিন্তু ভূস্বামীদের হাতে থাকা খাসজমি ও সরকারি ভূমির কচুরিপানা অক্ষত থেকে যেত। বর্ষাকাল এলেই কচুরিপানা নতুন উদ্যমে মাঠে-ঘাটে ছড়িয়ে পড়ত এবং গরিব কৃষকদের ফসল নষ্ট করত। ১৯৪৬ সালের হিসাবে কচুরিপানার কারণে প্রতি বছর অন্তত ১ কোটি রুপির ফসল ও মাছের আবাদ নষ্ট হয়।
জনস্বাস্থ্যের জন্য কচুরিপানা হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছিল। ইনফ্লুয়েঞ্জা ও বিভিন্ন রকমের জলবাহিত রোগের বিস্তারের পেছনে ছিল এ কচুরিপানা। তবে কলেরা বিস্তারের পেছনে কচুরিপানার দোষ মানতে নারাজ ছিলেন স্যানিটারি কমিশন অব বেঙ্গলের কমিশনার সি. এ. বেন্টলি। তার মতামত ছিল, যদি মানববিষ্ঠা পানিতে মিশে এবং সেখানে কচুরিপানা থাকে, তাহলেই কেবল তা কলেরা বিস্তারের কারণ হতে পারে। বেন্টলি আরো মত দেন যে, উদ্ভিদ নিজে কলেরা ছড়াতে পারে তখনই, যখন দূষিত পানিকে ঢেকে রাখে এবং সূর্যালোক পৌঁছতে দেয় না। সূর্যালোকের দেখা না পেলে পানির প্রাকৃতিক শুদ্ধি প্রক্রিয়াটি বাধাগ্রস্ত হয়। তিনি কলেরার সঙ্গে কচুরিপানার সম্পর্ক খুঁজে না পেলেও এটিকে একটি ‘মারাত্মক উপদ্রব’ হিসেবে স্বীকৃতি দেন এবং কচুরিপানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার পক্ষে মত দেন। ম্যালেরিয়ার বিস্তারে কচুরিপানার ভূমিকা নিয়ে বেন্টলি একমত হতে পারেননি। তিনি বলেছিলেন, ‘কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে থাকা জলে অ্যানোফিলিস মশার লার্ভা তেমন কোথাও দেখা যায়নি।’ কিন্তু ম্যালেরিয়া রিসার্চ ইউনিট ইন বেঙ্গলের একজন মাঠকর্মী এসএন সুর বেন্টলির সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেন। তিনি তার পর্যবেক্ষণ থেকে জানান, কচুরিপানা ম্যালেরিয়ার বিস্তারে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। কারণ কচুরিপানার জন্য জলে কোনো আলোড়ন, স্রোত থাকে না; জলের তাপমাত্রা কমে যায়, যা মশার লার্ভার জন্য অনুকূল; তাছাড়া অন্যান্য প্রাকৃতিক শত্রু থেকেও এ কচুরিপানা মশার লার্ভাকে রক্ষা করে।
জনস্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানুষের পুষ্টির ওপরও কচুরিপানা নেতিবাচক প্রভাব রাখতে শুরু করে। পুকুরগুলোয় কচুরিপানা মাছের আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং খাবার জলের উত্সগুলো দূষিত করে। সে সময় বঙ্গের মৎস্য উৎপাদন বিপুলভাবে কমে যাওয়ার পেছনে একটি বড় কারণ হিসেবে দেখা হতো কচুরিপানাকে। শুধু কৃষি নয়, বঙ্গের গবাদিপশুর স্বাস্থ্যও কচুরিপানা দিয়ে আক্রান্ত হচ্ছিল। এ গবাদিপশু ছিল বাংলার কৃষির মেরুদণ্ড এবং মনে করা হচ্ছিল কচুরিপানা খাওয়ার কারণে পশুর স্বাস্থ্যহানি হচ্ছে। বরিশালের ম্যাজিস্ট্রেট জে. ডনোভান বলেছিলেন, বঙ্গদেশের মতো এত রুগ্ণ গবাদিপশু তিনি আর কোথাও দেখেননি। তিনি জেলার ভেটেরিনারি কর্মকর্তার কাছ থেকে শুনতে পান যে, চরার জায়গা ও খাবারের অভাবে গরুকে কচুরিপানা খাওয়ানো হতো এবং এ কারণে তাদের হজমের সমস্যা হতো। কচুরিপানা ও কৃষি উৎপাদন হ্রাস পাওয়ার সম্পর্ককে বুঝতে সেকালের একজন স্থানীয় মানুষের বিবরণ শোনা যেতে পারে—
‘বর্বর সেনাবাহিনীর আক্রমণ, তৈমুর লংয়ের আক্রমণ, দেশজুড়ে অগ্নি আর তলোয়ারের আক্রমণ বঙ্গদেশে নদীতে ভেসে বেড়ানো এই ক্ষুদ্র উদ্ভিদগুলোর আক্রমণের কাছে কিছুই না...খাঁড়ি, খাল ও ছোট নদীর পানির গতি রুদ্ধ হয়ে পড়েছে এবং শুকিয়ে যাচ্ছে। অনেক টাকা ব্যয় করে বছরে দুবার কচুরিপানা পরিষ্কার করেও এদের বিকাশ রুদ্ধ করা যাচ্ছে না... বন্যার সময় ভেসে এই পানা ফসলি জমিতে প্রবেশ করত এবং কয়েক দিনের মধ্যে পুরো ক্ষেতে ছড়িয়ে পড়ে ধান বা অন্য ফসল ধ্বংস করে দিত। বঙ্গদেশ ছিল ভারতের শস্যভাণ্ডার ও সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর স্থান, অথচ কচুরিপানা দিয়ে সৃষ্ট ম্যালেরিয়ার কারণে বঙ্গদেশ রিক্ত হয়ে পড়েছিল।
নির্মূল না ব্যবহার?
কচুরিপানার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বঙ্গের সরকার শুরু থেকেই দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছিল। আর তা হলো আগাছাটি পুরোপুরি নির্মূল করা হবে নাকি একে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। কচুরিপানাকে কাজে লাগানোর প্রথম প্রস্তাবটি আসে ১৯১৪ সালে। আঁশ বিশেষজ্ঞ রবার্ট ফিনলো পরামর্শ দেন যে, কচুরিপানা নদী থেকে তুলে এনে স্তূপ করে রাখতে হবে এবং পরবর্তীতে সেগুলো সার হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। তবে সরকারের মনে সন্দেহ ছিল যে, কাজটি কতটা আর্থিকভাবে লাভজনক হবে এবং নদী বা খাল থেকে কচুরিপানা পুরোপুরি না তুলে ফেললে খুব একটা ভালো ফল পাওয়া যাবে না। ভারত সরকার তাদের পর্যবেক্ষণ থেকে দেখে— এ কচুরিপানা এত দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে যে, একবার কোথাও জন্মাতে শুরু করলে তাকে থামানো প্রায় অসম্ভব। তাই সরকার পরামর্শ দেয়— যেখানেই সুযোগ পাওয়া যাবে সেখানেই কচুরিপানা নির্মূলে ত্বরিত ব্যবস্থা নিতে হবে। ফলে সরকার বস্তুগত সমৃদ্ধি ও জনস্বাস্থ্যের প্রতি এ হুমকিকে উত্খাত করতে সরকারি কর্মচারী ও সরকারের বাইরের সব জনসাধারণকে অনুরোধ জানান।
কচুরিপানা ধ্বংসের সরকারি সিদ্ধান্তের পরেও রবার্ট ফিনলো ও পূর্ব বাংলার কৃষির উপপরিচালক কেনেথ ম্যাকলিন তাদের মতে অনড় থাকেন। তারা সরকারকে আবারো কচুরিপানার বাণিজ্যিক ব্যবহারে পরামর্শ দেন এবং তাদের মতে, এ থেকে সরকার লাভবান হতে পারে। ১৯১৬ সালে ঢাকা এগ্রিকালচারাল ফার্মে পরীক্ষার পরে তারা জানান, প্রচুর পটাশ থাকার কারণে কচুরিপানা থেকে তৈরি সারে অনেক নাইট্রোজেন ও ফসফরিক অ্যাসিড থাকে। তারা আরো দেখেন যে, কচুরিপানা পচিয়ে তৈরি সারের চেয়ে সেগুলো শুকিয়ে পোড়ালে যে ছাই পাওয়া যায়, তাতে বেশি পটাশ পাওয়া যায়। কচুরিপানার এ সুবিধাগুলো ব্যবহার করে বাণিজ্য করার ইচ্ছা এত প্রবল ছিল যে, বলা হতে থাকল— একে ধ্বংস না করে যত্নসহকারে জন্মাতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে বহুজাতিক কোম্পানি মেসরস শ ও ওয়ালেস অ্যান্ড কোম্পানি কচুরিপানার ছাই নিয়ে আগ্রহ দেখায়। তারা প্রস্তাব দেয়— ভালো ও বিশুদ্ধ অবস্থায় ছাই তাদের কাছে পৌঁছে দিলে তারা প্রতি টন ছাইয়ের জন্য ৮৪ থেকে ১১২ টাকা দিতে রাজি আছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণে পটাশের সরবরাহ দুনিয়াজুড়ে হ্রাস পায়। তখন কোম্পানি বাংলার সরকারকে অনুরোধ করে যেন তারা কৃষিবিদ ও সংশ্লিষ্ট অন্যদের মাঝে কচুরিপানার ছাইয়ের বিষয়টি নিয়ে আগ্রহ তৈরি করে এবং তারা বিষয়টি কীভাবে গ্রহণ করলেন, সেটা যেন পরবর্তীতে তাদের জানানো হয়। দ্য শ ওয়ালেস কোম্পানি শুরুর দিকে পাঠানো কচুরিপানার গুণগত মান নিয়ে সন্তুষ্ট ছিল না। ১৯১৮ সালে কোম্পানির পরিচালক সরকারকে জানান যে, তারা ১৫ শতাংশ পটাশ না থাকলে সেই কচুরিপানা গ্রহণ করবেন না। কোম্পানির এ চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সরকার জনগণকে উপদেশ দেয়: ‘হাতের কাছে পেলেই যেকোনো কচুরিপানা সংগ্রহ করা যাবে না। বরং সতর্কতার সঙ্গে লম্বা, সবল কচুরিপানা থেকে ভালো মানের পটাশ পাওয়া যায়। এসব পানা গভীর পানিতে জন্মায় এবং তাদের মূল মাটি স্পর্শ করে না।...’
বঙ্গের সরকার এই অগাছার বাছাই ব্যবহারের বিপদ নিয়ে বারবার কথা বলে। তারা কচুরিপানা নির্মূল করার ইচ্ছা পুনরাবৃত্ত করতে থাকে। তারা আরো বলে, গোখাদ্য, জ্বালানি সার, ছাই ইত্যাদির জন্য কচুরিপানার কিছু ব্যবহার থাকলেও বর্তমানে পুরো বাংলার কৃষি এই আগাছার কারণে ঝুঁকিতে। এবং এই আগাছা নিয়ে ধীরগতিতে চালানো যেকোনো পরীক্ষা এ ঝুঁকিকে আরো বহুদিন জাগিয়ে রাখবে।
এমন পরিস্থিতিতে বঙ্গের সরকার সাত সদস্যবিশিষ্ট ওয়াটার হায়াসিন্থ কমিটি নিয়োগ করে। এ কমিটির সভাপতি ছিলেন বঙ্গের বিখ্যাত উদ্ভিদবিদ স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু। ১৯২১ সালের আগস্ট থেকে ১৯২২-এর আগস্ট সময়কালে এ কমিটি সাতটি সভা করে। কমিটি তাদের পর্যবেক্ষণে দেখে— পূর্ব বাংলার চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বাদে পুরো বঙ্গ কচুরিপানা দিয়ে আক্রান্ত। কিছু এলাকায় এ উদ্ভিদের বিস্তারের দ্রুতগতির কারণে কমিটির প্রতিবেদনে কচুরিপানাকে ‘জন আতঙ্ক’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তবে এ কমিটির বিভিন্ন সুপারিশে বোঝা যায়, তারা কচুরিপানাকে গবেষণার উপাদান হিসেবেই বিবেচনা করেছিল। অবাক হওয়ার কিছু নেই এটা জেনে যে, কচুরিপানার বৃদ্ধি ঠেকানোর উপায় আবিষ্কারের চেয়ে তাদের বৈজ্ঞানিক গবেষণার লক্ষ্য ছিল কচুরিপানার বাণিজ্যিক ব্যবহার খুঁজে বের করা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়নের অধ্যাপক এইচ. কে. সেন তার গবেষণা শেষ করে কচুরিপানার থেকে পণ্য তৈরির জন্য কারখানা স্থাপনের প্রস্তাব করেন। প্রতি মণ কচুরিপানার জন্য ১ টাকা ৮০ পয়সা দিলে তা চাষীদের জন্যও আকর্ষণীয় হবে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। এমন সময় বি. কে. ব্যানার্জি, সমসাময়িক একজন বক্তা কচুরিপানা নির্মূলের বিভিন্ন পদ্ধতি শনাক্ত এবং সেগুলোর কার্যকারিতার তুলনামূলক সমীক্ষা প্রকাশ করেন। তিনি দেখান যে, কেমিক্যাল পদ্ধতিই কচুরিপানা নির্মূলে সবচেয়ে কার্যকর এবং অর্থনৈতিকভাবে সাশ্রয়ী। তিনি সুবিমল বসু কর্তৃক উদ্ভাবিত স্প্রে সলিউশনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এই সলিউশন শুধু পানির ওপর ভাসমান কচুরিপানার ওপরের অংশই নষ্ট করত না, বরং নিচে থাকা কাণ্ডও ধ্বংস করত।
আইন প্রণয়ন
১৯১৯ সালে বঙ্গের সরকার বার্মার কচুরিপানা-সংক্রান্ত গৃহীত আইনের বিষয়ে বিশদ খোঁজখবর নেয়া শুরু করে। উদ্দেশ্য ছিল— একই ধরনের আইন বঙ্গে চালু করা। বার্মার আইন বিশ্লেষণ করে বাংলার কৃষি বিভাগের সচিব ম্যাকঅলপিন দেখতে পান— বার্মার উদ্দেশ্য ছিল তাদের মূল জলপথগুলো পরিষ্কার রাখা, তারা কখনই কচুরিপানা পুরোপুরি নির্মূল করতে পারেনি। ম্যাকঅলপিনের মনে হয়েছিল, বার্মার আইন ব্যর্থ। তার মনে হলো, বাংলার সরকারের চেয়ে অধিকতর ক্ষমতাধর বার্মার সরকার যদি কচুরিপানা নির্মূলে ব্যর্থ হয়, তাহলে বাংলায় তা সফল হওয়ার তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই। তাই তিনি আইন প্রণয়নের বিষয়টি বাদ দেয়ার প্রস্তাব করেন। ১৯২১ সালের জানুয়ারিতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত একটি সম্মেলনে কচুরিপানা-সংক্রান্ত আইনের একটি রূপরেখা দাঁড় করানো এবং তা অনুমোদন করা হয়। রূপরেখাটি শুধু ঢাকা ও বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির কয়েকটি সাব-ডিস্ট্রিক্টে প্রয়োগের অনুমোদন দেয়া হয়। আইন প্রণয়নের আগে সরকার দেখতে চাইছিল— কচুরিপানা নির্মূল অভিযান কতটুকু সফল হয়। অন্যদিকে বঙ্গের বিভিন্ন জেলায় কচুরিপানার আক্রমণ বিভিন্ন মাত্রায় হয়েছিল। তাই কেউ যদি দাবি করে— তার জমি উজান বা অন্য জেলা থেকে আসা কচুরিপানা দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত, তাহলে তো তাকে জরিমানা করাটা কঠিন হয়ে যাবে বলে মনে করেন ঢাকার সম্মেলনের অনেক ডেলিগেট। একই সঙ্গে ডেলিগেটদের সবাই একমত হন যে, কোনো আইন প্রণয়ন ও সারা ভারতজুড়ে কার্যকর না হলে ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডগুলো ক্ষমতাহীন হয়ে থাকবে। তাছাড়া তারা আরো মনে করেন— নির্মূলের জন্য বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি উদ্ভাবনের পরই আইনের দিকে যেতে হবে। রাজনৈতিক বিবেচনায়ও কিছু বিষয় উঠে আসে, যা একসময় স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুও বলেছিলেন; সরকারের হাতে তেমন অর্থ বরাদ্দ না থাকা এবং জনগণকে অর্থসহায়তা দিতে না পারার অবস্থার কারণে আইন প্রণয়ন হলে সাধারণ মানুষ ভুল বুঝতে ও ক্ষুব্ধ হতে পারে। ১৯৩৬ সালে বাংলায় কচুরিপানা আইন পাস হয়। এ আইনের মাধ্যমে মূলত কচুরিপানার সুবিধাজনক ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছিল।
আইন পেরিয়ে
বঙ্গ থেকে কচুরিপানা উত্খাতের উদ্দেশ্যে সরকার ১৯৩৯ সালের এপ্রিলের শেষ সপ্তাহকে ‘কচুরিপানা সপ্তাহ’ হিসেবে ঘোষণা করে। কৃষক প্রজা জোটের নির্বাচনী ওয়াদার মধ্যে ছিল কচুরিপানা নির্মূলের অঙ্গীকার। এবার তারা সেই ওয়াদা পূরণে নামলেন। ‘কচুরিপানা সপ্তাহ’ উপলক্ষে বাংলায় উত্সবমুখর এক পরিবেশ তৈরি হয়েছিল: সরকারি কর্মকর্তাদের জড়ো করা হয়, মন্ত্রীরা গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েন— সঙ্গে সাধারণ মানুষও হাতে হাত রেখে কচুরিপানা নির্মূলে কাজে নেমে পড়ে। ছাত্রদের নৌকা বাইচ ক্লাব তৈরির পরামর্শ দেয়া হয়, কারণ মনে করা হয়েছিল যে ছাত্ররা যখন নৌকা চালাবে তখন সেই আনন্দের সঙ্গে তারা যেখানে যাবে, সেখানে কচুরিপানা পরিষ্কারের উত্তেজনাও তাদের মধ্যে কাজ করবে। কিছু এলাকায় কিশোরদের যত বেশি সম্ভব সাপ মারার জন্য উত্সাহ দেয়া হয়েছিল, কারণ প্রচুর সাপ এ কচুরিপানার ভেতরে লুকিয়ে থাকত। ‘কচুরিপানা সপ্তাহ’-এ ঢাকার এক ছেলে ৬৪টি সাপ মেরেছিল, এজন্য তাকে স্বর্ণপদক দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। কিশোরীরাও পিছিয়ে ছিল না, তত্কালীন বাংলার প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী বলেছিলেন, বগুড়া জেলায় ছেলেদের তুলনায় স্কুলের মেয়েদের কাজ বেশি সফল ছিল। স্কাউট, স্কুলের শিক্ষার্থী, পণ্ডিত, মৌলভী, কৃষক, ভূস্বামী ও আইনজীবীরা কিশোরগঞ্জে যে উত্সাহ-উদ্দীপনা নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন, তা দেখে সোহরাওয়ার্দী আশা করেছিলেন যে, ‘কচুরিপানার মতো সাধারণ শত্রুর সঙ্গে লড়াইয়ের সময় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে কোনো বিভেদ থাকা উচিত নয় এবং যৌথ কাজ অবশ্যই হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ দূর করে দেবে।’ সপ্তাহ শেষে জানা গেল— কাজে নেমে একজন ইংরেজ সিভিল সারভেন্ট হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন এবং একজন কাদায় আটকে গিয়েছিলেন। তবে কচুরিপানা সমস্যার কোনো দীর্ঘমেয়াদি সমাধান চোখে পড়ছিল না। কোনো সন্দেহ নেই, অনেক এলাকা পরিষ্কার হয়েছে কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জনগণের উত্সাহও কমতে লাগল। মন্ত্রীরা কলকাতায় ফিরে গেলেন, কর্মকর্তারা তাদের মফস্বলের দপ্তরে ফিরলেন। আর স্কুলের শিক্ষার্থীরা তাদের শ্রেণীকক্ষে ফিরে গেল। কৃষক ও গ্রামবাসী যারা কৃষিকাজে যুক্ত, তারা আবার কচুরিপানার সমস্যা মোকাবেলা করতে লাগলেন। কচুরিপানা সপ্তাহ পালন শাসকদলের জন্য কৌশলী রাজনৈতিক পদক্ষেপ হলেও এর ব্যর্থতা এক রকম নিশ্চিতই ছিল, কারণ সমস্যাটা একই সঙ্গে জীবতাত্ত্বিক ও পরিবেশ-সংক্রান্ত। প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল বাস্তুতান্ত্রিক ব্যবস্থার পরিবর্তন নিয়ে গবেষণা। এ পরিবর্তনের কারণেই কচুরিপানা বৃদ্ধির জন্য অনুকূল পরিবেশ পাচ্ছিল। অবশ্য এই প্রয়োজনীয়তার কথা তখনই উঠেছিল। কচুরিপানা সপ্তাহ পালনের দুই সপ্তাহ আগে সুধীর চন্দ্র সুর এর বিরোধিতা করে বলেন, এ আয়োজনের মাধ্যমে কচুরিপানার বৃদ্ধির কারণকে প্রতিরোধ না করে শুধু একে পরিষ্কার করা হচ্ছে। সুর কচুরিপানা বৃদ্ধির জন্য সড়কপথ, রেলপথের জন্য বাঁধ, রেলের সেতুর পিলারের কারণে নদী ও অন্য জল উত্সগুলোর স্রোতে প্রতিবন্ধক সৃষ্টিকে দায়ী করেন। সুর আরো জানান, এ প্রতিবন্ধকগুলোর কারণে বিভিন্ন পানির ধারা জৈব উপাদান বড় নদীতে নিষ্কাশনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে পারছিল না। ফলে জলাশয়ের তলায় জৈব উপাদান জমা হচ্ছিল, যা কচুরিপানার বৃদ্ধির অনুকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। সুর আরো একটি জরুরি বিষয় তুলে ধরেন। তিনি বলেন, পানির স্রোতে প্রতিবন্ধক তৈরির দীর্ঘমেয়াদি প্রতিক্রিয়া কচুরিপানা সমস্যার চেয়েও অনেক ভয়ানক হবে। তিনি আরো উল্লেখ করেন যে, দীর্ঘ সময়ের কথা চিন্তা করলে কচুরিপানা প্রয়োজনীয়, কারণ এটা প্রচুর জৈব উপাদান শোষণ করে। ফলে বদ্বীপের বিরাট অংশ প্রাণী আর জৈব উপাদানে পূর্ণ জলাভূমিতে পরিণত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাবে। তিনি পরামর্শ দেন যে, এরই মধ্যে বাংলার মৃতপ্রায় জলপথ পুরোপুরি নষ্ট করে দেয়ার উপক্রম না করা পর্যন্ত কচুরিপানাকে বরং স্বাগত জানানো উচিত। তিনি মনে করেন, বড় নদীর স্রোতকে বাধা দেয়া কৃত্রিম প্রতিবন্ধকগুলো না সরালে কচুরিপানা সমস্যা থেকে মুক্ত হওয়ার কোনো উপায় নেই। নদীতে যথেষ্ট স্রোত থাকলে তা এমনিতেই কচুরিপানার মতো আগাছা পরিষ্কার রাখবে।
কোনো সন্দেহ নেই যে, ১৯৩৬ সালের কচুরিপানা আইন এই আগাছা থেকে মুক্তি পাওয়া এবং বঙ্গীয় বদ্বীপের কৃষি-বাস্তুতান্ত্রিক ভবিষ্যতের ব্যাপারে উদ্বিগ্নতা বিষয়ে সবার চিন্তার ঐক্যকে প্রতিফলিত করেছিল। তবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্থানীয় উদ্যোগ সরকার ও স্থানীয় মানুষ এবং সরকারের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সমন্বয়হীনতা ও সহযোগিতার অভাবে সফল হয়নি, বরং হতাশা বয়ে এনেছিল। যেমন— ঢাকার মুন্সীগঞ্জের আড়িয়ল বিলের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ হাজার চাষী স্থানীয় সরকারের এক কর্মকর্তার উত্সাহে ধার করে বিনিয়োগ করেন। কিন্তু প্রতিশ্রুত কচুরিপানা নিয়ন্ত্রণে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় তারা চরম বিপদে পতিত হন। বিষয়টি আইনসভায় তোলা হলে কৃষিমন্ত্রী জানান যে, সেটি কোনো সরকারি স্কিম নয়। স্কিম অনুযায়ী জলপথের কিনারায় একটি ব্যারিকেড নির্মাণের কথা ছিল যেন কচুরিপানা বিলের কৃষিজমিতে প্রবেশ না করতে পারে। কিন্তু অ্যাসেম্বলির স্পিকার এ বিষয়ে সরকারের কোনো দায়িত্ব নেই বলে জানান এবং বলেন, এ ব্যারিকেড নির্মাণের দায়িত্ব স্থানীয় জনগণের। কিন্তু কেন, সে বিষয়ে তিনি কোনো ব্যাখ্যা দেননি। কৃষকরা তখন বিক্ষোভ করেছিলেন।
তথ্যসূত্র :-1.বাংলা পিডিয়া
2.ইন্টারনেট।
1 বার শেয়ার করা হয়েছে
শেয়ার করুন

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন